সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

সিলেটে বিমানবন্দর সড়কের একটি জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ

সাবেক এমপি মিলনের স্ত্রীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেট অফিস : | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সিলেটে একটি হাউজিং প্রকল্পের ভ‚মিতে স্থিতাবস্থা জারি করছে আদালত। প্রকল্পের নামে ওই জমির মালিকানা না থাকলেও সর্বশেষ দলিল অনুযায়ী জমির মালিক দাবিদার হাউজিং কোম্পানী ‘হলি আরবান প্রপার্টিজ প্রাইভেট লি:’র চেয়ারম্যান সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন মিলনেরে স্ত্রী ফৌরদৌসী বেগম হেনাসহ ১৮জন। কিন্তু প্রকল্পের উক্ত জমির প্রকৃত মালিক দাবি করে সাবেক এমপির স্ত্রীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে যোগাযোগীমূলে প্রতারনামুলক ভাবে হলি আরবান প্রপার্টিজ কোম্পানীর নামে অস্তিত্বহীন কাল্পনিক ফ্ল্যাট বাড়ি বিক্রির অভিযোগ তোলে আদালতে স্বত্ব মামলা দায়ের করে দক্ষিণ সুরমা, উপর হাজরাই গ্রামের মো: গিয়াস উদ্দিন। যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালত, সিলেটের স্বত্ব মামলা নং ২৪৫/২০১৭ইং। মামলায় বিবাদী করা হয়েছে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি কলিম উদ্দিন মিলনের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম হেনাসহ ১৮জনকে। আদালতে শুনানী শেষে গত ২১ নভেম্বর প্রকল্প স্থানে স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন।
সিলেটে মধ্যবিত্তদের স্বপ্নপূরণে অত্যাধুনিক এ্যাপার্টমেন্ট ‘হলি আরবান প্রপার্টিজ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে হাউজিং প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় স¤প্রতি। গত ১৯ এপ্রিল নগরীর আমান উল্লাহ কনভেনশন সেন্টারে প্রকল্পের বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মধ্যে দিয়ে আলোচনায় চলে আসে হলি আরবান প্রপার্টিজ প্রাইভেট লি:। এ কোম্পানীর চেয়ারম্যান সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন মিলন। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির বর্তমান সভাপতি। নগরীর বিমানবন্দর সড়কে ‘হলি আরবান প্রপার্টিজ লিমিটেড’র উদ্যোগে ২৩৫টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করে আগামী আট বছরের মধ্যে গ্রাহকের কাছে ১৫তলা বিশিষ্ট এই প্রপার্টি হস্তান্তর করা হবে। শতাধিক ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে ইতিমধ্যে। প্রকল্প এলাকায় মোট জমির পরিমান ৯৯ শতক। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারী ১২৪২ নং দলিলে ১ কোটি উনআশি লাখ টাকায় এ জমি ক্রয় করেন বিএনপি নেতা কলিম উদ্দিন মিলনের স্ত্রী সহ ১৮ জন। বাকীরা হচ্ছেন, বিশ্বনাথ উপজেলার জাহারগাঁও গ্রামের মৃত সমুজ আলীর ছেলে এহসান আহমদ, দক্ষিণ সুরমার খিদিরপুর গোয়ালগাঁওয়ের মৃত মো. আব্দুল করিমের ছেলে মো. ইকবাল হোসেন, বিশ্বনাথ উপজেলার গোমরাগুল গ্রামের মৃত আব্দুল গণির ছেলে মো. আব্দুল হাসান গণি ও আনছার মাহমুদ, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাগরাই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে জসিম উদ্দিন, দক্ষিণ সুরমার বদিকোনার মৃত মো. আত্তর আলীর ছেলে হেলাল আহমদ, দক্ষিণ সুরমার তেলীরাইয়ের শাহজাহান আহমদের ছেলে শাহেদ আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দয়ারবাজারের উত্তর কালিবাড়ি গ্রামের মৃত আলকাছ আলীর ছেলে মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ছাতক উপজেলার মন্ডলিবোগ গ্রামের মৃত আলা উদ্দিনের ছেলে মো. আবুল হোসেন আজাদ, ফেঞ্চুগঞ্জের কচুয়া বহর গ্রামের মৃত মো. আব্দুল কাইয়ূমের ছেলে মো. আবু তাহের, ইশ্বরদি জেলার মানিক নগর গ্রামের মৃত ইউছুব আলীর ছেলে মো. তৌহিদুল ইসলাম,সুনামগঞ্জ উপজেলার সিঙ্গেরকাছ গ্রামের মো. শরাফত আলীর ছেলে কয়েছ আহমদ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার খিলপাড়া গ্রামেরমৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে মো. মুহিবুর রহমান, মৌলবীবাজারের রাজনগর উপজেলার চান্দভাগ গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে জুবায়ের আহমদ, ছাতকের বাগইন গ্রামের মখদ্দুস মিয়ার ছেলে হালিম মো. অহাব আলী, ফেনি জেলার জয়লমকরা গ্রামের মো. আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে মোহাম্মদ আলি, ঢাকা গুলশান এলাকার সোহরাওয়ার্দী এভিনিউয়ের বাসা নং ৯/এ মৃত আর্জুমন্দ আলীর ছেলে নাজির হাসান।
মামলার আরজিতে বর্ণিত বাদীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, সিলেট জেলার এয়ারপোর্ট থানাধীন বড়শালা মৌজায় জে.এল নং-৫৪ স্থিত এসএ খতিয়ান নং- ৮২ ও ২৭৭ এর অনেকগুলো দাগে ৯৯ শতক ভ‚মিতে একটি বহুতল ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য হলি আরবান প্রপার্টিজ নামের একটি কোম্পানী গঠন করেন বিবাদীরা। উক্ত ৯৯ শতক ভ‚মি পরিচালকদের নামে পৃথক পৃথক দলিল সম্পাদন করা হয়েছে। হলি আরবান প্রপার্টিজের পক্ষ থেকে ফ্লাট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলেও এই প্রতিষ্ঠানের নামে কোন জায়গা কেনা হয়নি। বাদী গিয়াস উদ্দিন দাবি করেন, উক্ত ৯৯ শতক ভ‚মির মধ্যে মোট ৭৮ শতক ভ‚মি এসএ রেকর্ডিয় মালিকের উত্তরাধিকারীদের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন। কিন্তু কথিত উক্ত হলি আরবান এ ভ‚মি-ই বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভ‚য়া মালিক সাজিয়ে স¤প্রতি উক্ত জায়গা আবারো কিনে নেন। বিষয়টি জানতে পেরে বাদী গিয়াস উদ্দিন ইতোপূর্বে ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোক্তাদেরকে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু এরপরও উদ্যোক্তারা ফ্ল্যাট নির্মাণ ও বিক্রির পাঁয়তারা অব্যাহত রাখায় বাদী গিয়াস উদ্দিন বিগত ২০/০৯/২০১৭ ইং তারিখে সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের একটি স্বত্ব মোকদ্দমা (নং-২৪৯/২০১৭) দাখিল করেন। আদালত আরজি আমলে নিয়ে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত ভ‚মির বিষযে স্থিতাবস্থা জারির নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়া, বাদী পক্ষ উক্ত প্রকল্পে কোনরূপ বিনিয়োগ না করার জন্য এবং ফ্লাট না কেনার জন্য সিলেটের স্থানীয় একটি দৈনিকে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও প্রদান করেছেন।
এ বিষয়ে কোম্পানীর চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিন মিলন বলেন, জমি ক্রয় পূর্বে আমারা প্রকৃত মালিক সনাক্তে প্রয়োজনীয় চেষ্টা করেছি। এখন যদি কেউ দাবীদার থাকে, তাহলে আইনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন