শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অসময়ের বৃষ্টি ও যানজটের ভোগান্তিতে নগরবাসী

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সায়ীদ আবদুল মালিক : অসময়ের বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানীবাসী। বঙ্গপোসাগরে লঘূচাপের প্রভাবে আসময়ে এ বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে রাজধানী ছোটবড় সড়কগুলোতে কাদা পানি মিলে একাকার হয়ে গেছে। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে কাদা-পানি মিলে একাকার হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে বাড়তি ভোগান্তির। সকাল থেকেই নানা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়ে নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে। গতকাল শনিবার সরকারি ছুটির দিন হলেও মানুষ নানা প্রয়োজনে রাস্তায় নেমেই পড়েছে দুর্ভোগে। কোথায়ও যানজট আবার কোথায়ও যানবাহনের সঙ্কট।
বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে শুক্রবার রাত থেকে রাজধানীসহ দেশের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার থেকে থেমে থেমে চলা এই বৃষ্টি আজ রোববার পর্যন্ত ঝরবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দেশের সব সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত বহাল রাখা হয়েছে।
এদেশের প্রকৃতিতে হেমন্ত মানেই গাঁয়ের মেঠো পথে ভোরের হালকা কুয়াশা আবার কোথাও কোথায় রাতের বেলায় শীতের প্রকোপও বাড়ে। খাল, বিল, নদীতে নিরুত্তাপ ঢেউ। কাশবনে মৃদু বাতাস। বাতাসের তালে কাশফুলের দোল। ঝকঝকে কাচের মতো স্বচ্ছ নীলাকাশ। শরতের আকাশে গ্রীষ্ম ও বর্ষার মত গগণবিদারী তর্জন-গর্জন নেই। হেমন্ত বড় নিবিড়, কোমল, মায়াবি। কিন্তু গত দুই দিনের ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে সচকিত নগরবাসী। রিকশায় হুট তুলে, পলিথিন মুড়ি দিয়ে অথবা বৃষ্টিতে কাঁক ভেজা হয়ে গন্তব্যের দিকে ছুটে চলে যাত্রীরা।
আড়াই মাস আগেই বর্ষার শেষ হলেও গতকালের দিনভর ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে মনে হচ্ছে যেন আবারও বর্ষা ফিরে এসেছে। শুক্রবারর সন্ধ্যা সাতটার পর থেকেই রাজধানীতে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়। গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। কোথাও থেমে থেমে, আবার কোথাও অবিরত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।
গতকাল সকালে খিলগাঁও রেলগেট গিয়ে দেখা গেছে, সরকারি ছুটির কারণে সড়কে তেমন কোনও যানবাহন ছিল না। ফাঁকা রাস্তায় রিকশা, লেগুনা, ব্যক্তিগত গাড়ি ও কিছু গণপরিবহন ছিল। এসব পরিবহনেও যাত্রীদের উপস্থিতি কম ছিল। পল্টনের একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা নাজমা আক্তার বলেন, বৃষ্টি হলেও ভালোই লাগছে। কারণ রাস্তায় যানজট নেই। রিকশায় করে ফাঁকা রাস্তায় অফিসে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে না। যখন বৃষ্টির সঙ্গে পানিজট এবং যানজট দেখা দেয় তখনই ভোগান্তি মনে হয়।
সরেজমিন দেখো গেছে, দিনভর বৃষ্টির কারণে গতকাল শনিবার সরকারি ছুটির দিন থাকার পরও সকাল থেকেই রাজধানীর মতিঝিল-পুরানা পল্টন-শাহবাগ-কারওয়ান বাজার সড়ক, পুরানা পল্টন-ফার্মগেট-মিরপুর সড়ক, মতিঝিল-যাত্রাবাড়ী সড়ক এবং সাইন্সল্যাব-ধানমন্ডি সড়কে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। এছাড়া মগবাজার ও মালিবাগ সড়কের তীব্র যানজটের প্রভাব পড়েছে মহাখালী-উত্তরা ও গুলশান এলাকায়। এসব এলাকার সড়কের দুপাশে শত শত যানবাহন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
এ সময় পুরো রাজধানীর ব্যস্ত সড়কগুলোতে ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়া গাড়িগুলো চলছিলো কচ্ছপগতিতে। বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল, উত্তরা, খিলক্ষেত, কুড়িল-বিশ্বরোড হয়ে রামপুরা-মালিবাগ, বাড্ডা, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, কাজী নজরুল ইসলাম এ্যাভিনিউ, কাকরাইল, শান্তিনগর, মৌচাক, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, এলিফ্যান্ট রোড, মিরপুর, খিলগাঁও বিশ্বরোড, পান্থপথ, নয়া পল্টন, পুরানা পল্টন, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, হাতিরপুল, নিউমার্কেট, আজিমপুর, গুলশান-১ ও ২, গুলশান এ্যাভিনিউ, সাত রাস্তার মোড়, নাবিস্কো, মিরপুর রোড, রোকেয়া সরণি, আসাদ গেট, শ্যামলী, কল্যাণপুর, জিগাতলা, আজিমপুর এলাকা দীর্ঘ সময় ধরে যানজটে অবরুদ্ধ ছিল।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী অধিকাংশ লোকজনকেই এই ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে হেঁটে পরীবাগ যাচ্ছিলেন মতিঝিলের একটি বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা একরামুল হক। তিনি বলেন, দিলকুশা থেকে বাসে উঠে গুলিস্তান আসতে সময় লেগেছে এক ঘণ্টা। অথচ এই পথ হেঁটে আসতে সময় লাগে ১০ মিনিট। তাই সময় বাঁচাতে হেঁটেই যাচ্ছি।
সময় নিয়ন্ত্রণ পরিবহণের চালক মোহাম্মদ আলাল হোসেন বলেন, যানজটের কারণে মানুষ এখন বেশি দুরের পথ না হলে গাড়িতে উঠতে চায় না। যে কারণে আমাদের ইনকামও কমে গেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়- যাত্রাবাড়ি থেকে শনির আখড়া দীর্ঘ দুই কিলোমিটার গাড়ীর লাইন। মৌচাক, মালিবাগ, মগবাজর ও সাত রাস্তার মোড় এলাকায় যানবাহন যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। একটু সামনে গিয়ে আবার অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা। এভাবেই গতকাল রাস্তায় যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন