বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

দই খান সুস্থ থাকুন

| প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জানা যায় খ্রিস্টের জন্মের ৬০০০ বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যের নিওলিথিক গোষ্ঠীর মানুষেরা তাদের খাবারের মেনুতে দই রাখত। প্রাচীন মিশর, গ্রিস, রোমেও দইয়ের প্রচলন ছিল। অনুমান করা হয়, ভারতেও দইয়ের প্রচলনটি পারস্য থেকেই এসেছে।
দইয়ের আর এক নাম ইয়োগার্ট। দই থেকে ইয়োগার্ট গেঁজিয়ে ওঠা দুধ ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে জীববিজ্ঞানীরা ইয়োগার্ট ও দইয়ের আলাদা ধরনের জীবাণু সংক্রমণের কথা বলেছেন। দুধে নেটপাটাকক্সাস থার্মোফিলাস, ল্যাকটোব্যাসিলাস বুলতারিকাস ও ব্যাবটেরিয়া জমানোর ফলশ্রæতি হল ইয়োগার্ট। আর ল্যাকটোব্যাসিলাস, অ্যাসিডোফিলাস ও ল্যাকটোব্যাসিলাস বিকিডিস ব্যাকটেরিয়া দই তৈরি করে। পুষ্টিবিদদের কাছে ওজন ও চর্বি কমানোর জন্য দই অনবদ্য।
দই এমন এক ওষুধ যা গ্যাস দূর করা থেকে বার্ধক্য বিলম্ব করা পর্যন্ত সব ধরনের প্রয়োজনেই লাগে। দুধের তুলনায় দই সহজপাচ্য। ভালো দই কি না বুঝবেন যদি দইয়ের পানি কেটে না যায়। দুধে যা যা খাদ্যগুণ আছে তার সবই দইয়ে পাওয়া যায়। তাছাড়া পাবেন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যালশিয়াম, শ্বেতসার (কার্বোহাইড্রেট), চর্বি বা ফ্যাট। মোষের দুধে বেশি চর্বি থাকে। আর একটা ব্যাপার হল, দুধের তুলনায় ভিটামিন বি দইতে অনেক বেশি থাকে। বিশেষত, ফলিক অ্যাসিড ও রাইবোফ্ল্যাভিন, বিভিন্ন ভিটামিনে সমৃদ্ধ দই। দুধের তুলনায় দই সহজপাচ্য। আর একটা কথা হল, এক ঘন্টায় যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ দুধের ৩২ শতাংশ হজম হয় তবে একই সময়ে দই হজম হয় ৯১ শতাংশ। আর দইতে যে ল্যাকটিক অ্যাসিড আছে সেটা ফসফরাস, ক্যালশিয়াম হজম করতে সাহায্য করে।
গরুর দুধ দিয়ে তৈরি ঘরে পাতা ১০০ গ্রাম পরিমাণ দইয়ে আপনি পাবেন ৬০ কিলোক্যালোরি শক্তি, ৩.১ গ্রাম প্রোটিন, ৩ গ্রাম কার্বোহাইট্রেট ও ৪ গ্রাম ফ্যাট, ১৪৯ মিলিগ্রাম ফসফরাস আর ফলিক অ্যাসিড পাবেন ১২.৫ মাইক্রোগ্রাম। প্রোবায়েটিকস নিয়ে গবেষণারত একটা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু আছে যেগুলো জীবন সংশয়কারী জীবাণু সংক্রমণের অতিবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করে। দুধের ওপর যেসব জীবাণু বিষক্রিয়া ঘটিয়ে দই তৈরিতে সাহায্য করে সেগুলো এভাবেই প্রাণীর শরীরের পক্ষে হিতকর। গবেষকরা এরকম কুড়ি ধরনের প্রোবায়োটিকস খুঁজে পেয়েছেন। প্রোবায়োটিকসের ভাবার্থ হল জীবনের জন্যে। তার মধ্যে দইতে পাওয়া গেছে এল অ্যাসিডোফিলাস ও বিফিডো ব্যাকটোরিয়াস নামের দুটি জীবাণু। এই জীবাণুগুলো অন্ত্রেও ক্যানসার রোগ প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে।
পুষ্টিবিদেরা দেখিয়েছেন, দই আমাদের কত ধরনের শারীরিক সমস্যা দূর করতে পারে। ক্ষতিকর জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধকারী হিসাবে দই অদ্বিতীয় যাঁরা অনেকদিন ধরে ডায়ারিয়া বা পেটের গোলযোগে ভুগছেন তাঁদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই দই রাখা উচিত। দইয়ে পেটের অসুখ সেরে যায়। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে দই। যেসব জীবাণু আমাদের শরীরে নানা রোগ সংক্রমণকারী জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করে, সেরকম কুড়িটির মতো জীবাণু পাওয়া যায়। দইয়ে ক্যানসারের রোগ প্রতিরোধক জীবাণু আছে। সম্প্রতি ইতালির বিজ্ঞানীরা স্তন ক্যানসার কোষ নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেছেন যে, দই ক্যানসারের কোষগুলোকে আর বাড়তে দিচ্ছে না। কোলন ক্যানসার সারাতেও দইয়ের গুরুত্ব্পূর্ণ ভূমিকা আছে। রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়তে দেয় না দই। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রাশিয়ার জীববিজ্ঞানী এলি মেটানিকফ বলেছেন, দই হল আমাদের জীবনের নির্যাস। ব্রেকফাস্টের পরে বা ভাত খেয়ে বেরোনোর আগে ছোটো এককাপ দই খেলে মুখের মধ্যে কোনো রকম জীবাণু আক্রমণ চালাতে পারে না। দাঁতের মধ্যে কোনো গহŸর তৈরি হবে না। দই এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা জীবাণুদের নষ্ট করে।

আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।

 

বন্ধ্যাত্বের কারন ও প্রতিকার
একজন পূর্নাঙ্গ রমনীর ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু নির্গত হয়। ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রজনন বয়স ধরা হলেও ৩৫ বছরের পর থেকে প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রজনন বয়সের শেষ দিকে ডিম্বাণু নিঃসরণ প্রতি মাসে নাও হতে পারে। প্রজনন বয়সের মধ্যে প্রতি মাসেই একজন মহিলার ২৮ থেকে ৩৫ দিন ব্যবধানে ঋতু¯্রাব হয়ে থাকে। ঋতু¯্রাব মহিলাদের ডিম্বাণু নিঃসরনের একটি প্রমাণ। যদিও কখনো কখনো ডিম্বানু নি:সরণ ছাড়াও ঋতু¯্রাব হতে পারে। ২৮-৩০ দিনের ব্যবধানে যাদের ঋতু¯্রাব হয় তাদের সাধারনত ১৩তম ১৪তম ১৫তম দিনগুলোর কোন একসময় ডিম্বাণু নির্গত হয়। এ সময়কে বলে প্রজনন সময়। এ সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মিলন হলে স্বমীর শুক্রানু ও স্ত্রীর ডিম্বানু ডিম্বনালির প্রায় শেষ প্রান্তে,এম্পুলা নামক জায়গায় মিলিত হলে নিষেক সংঘটিত হয়। নিষেকের ফলে যেটি তৈরি হয় সেটিকে ভ্রæন বলে।
এ ভ্রƒন চক্রবৃদ্ধি হারে বিভক্ত হতে থাকে এবং ডিম্বনালি অতিক্রম করে নিষেকের সপ্তম দিন জরায়ুতে প্রবেশ করে এবং জরায়ুগাত্রে দৃঢ় হয়ে স্থাপিত হয়। পরে এখানেই ধীরে ধীরে বড় হয়ে ২৮০ দিন পরে পূর্ণাঙ্গ মানবশিশু ভুমিষ্ঠ হয়। কিন্তু কোনো দম্পতি এক বছর জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছাড়া একই সাথে বসবাস ও মিলনের পরও যদি সন্তান ধারণ না করে থাকেন তাকে ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব বলে।
বন্ধ্যাত্বের কারণ:
সন্তান ধারনে ব্যর্থতার কারণ অগণিত। কারণ যা-ই হোক, প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ চিকিৎসা বিদ্যমান তবে কারণ গুলো নিরূপনের পদ্ধতিও চিকিৎসা পদ্ধতি সহজোতর ও স্বল্প ব্যায়েসাপেক্ষ থেকে শুরু করে জটিলতম ও বহুলব্যায় সাপেক্ষ পর্যন্ত হতে পারে।
১. মহিলাদের ডিম্বাণূ তৈরী না হওয়া, (অনেক কারণে ডিম্বানু তৈরী হয়না)।
২. ডিম্বনালি বন্ধ হয়ে গেলে কিংবা কার্যক্রম না থকলে,
৩.এন্ডোমেট্রিওসিস নামক রোগের ফলে
৪. জরায়ুতে টিউমার হলে।
৫.জরায়ুগ্রীবার শুক্রানুর প্রতি শক্রুভাবাপন্ন ভাব থাকলে।
৬. শুক্রানুর পরিমান কম থকেলে।
৭.শুক্রাণুর আকৃতি স্বভাবিক না থাকলে।
৮.শুক্রাণুর চলাচল স্বাভাবিক না থাকলে।
৯. শুক্রানুর অনুপস্থিত থাকলে ।
১০. মিলনে স্বামীর অক্ষমতা থাকলে।
চিকিৎসাঃ বন্ধাত্বের চিকিৎসা একটু সময় প্রয়োজন হয়। সন্তান ধারণে ব্যর্থ হলে স্বামী স্ত্রীর কোথাও না কোথাও সমস্যা বিদ্যমান থাকে। সে ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসা করে প্রজননের হার স্বাভাবিক করা যায়। এক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায়ও সফলতা লক্ষ্য করা যায়। কারন হোমিওপ্যাথি হলো মানবদেহের লক্ষন সম্পর্কিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই এ ধরনের রোগীরা অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে সমাধান পেতে পারেন।

আলহাজ্ব ডা: এম এন ইসলাম
এইচ-২৩, মোল্লা ভবন, আমতলী, মহাখালী, ঢাকা।
০১৭৫২১১৭১৬১, ০১৯৭০৫৫৫৯১৯

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন