রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুবিতে নির্মাণের ৫ মাসেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফাটল

ভাস্কর মৃণাল হকের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল!

প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১০:৪৬ পিএম, ৩ জানুয়ারি, ২০১৮

কুবি সংবাদদাতা : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষ্কর্য স্থাপনের ৫ মাসের মাথায় ভাস্কর্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। জাতির জনকের ভাস্কর্য নির্মাণে দুর্নীতি হচ্ছে শিক্ষকদের এমন অভিযোগ তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আলী আশরাফ আমলে না নিয়ে গায়ের জোরে এ ভাস্কর্যটি তড়িঘড়ি করে স্থাপন করেন। তবে ফাঁটলের বিষয়ে গতকাল বুধবার পর্যন্ত অবগত নয় সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল কার্যালয়। সম্প্রতি বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসে।
জানা যায়, ভাস্কর্যের জন্য ২০১৬-২০১৭ এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে দুই দফায় ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটি। টেন্ডার প্রক্রিয়াকে কৌশলে এড়িয়ে ভাস্কর মৃণাল হককে ভাস্কর্য স্থাপনের কাজটি দিতে দুই অর্থ বছরে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে এমন অভিযোগ রয়েছে। গত মার্চে কাজ শুরু করে ২৫ মে ভাস্কর্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সঙ্কুুচিত স্থানে স্থাপন করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদত্ত নির্ধারিত মাপ ও নকশায় ভাস্কর্যটি হয়নি এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে সমালোচনার মুখে ভাষ্কর্যটিকে সরিয়ে আগষ্টে ফের নতুন ভাবে ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়।
এদিকে ভাস্কর্য নির্মাণে শুরু থেকেই দুর্নীতি হচ্ছে এমন অভিযোগে শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন। দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিতে শিক্ষক সমিতির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য মো: আসাদুজ্জামান গত ১০ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তার আন্দোলনে সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তার সাথে অবস্থান করলেও তৎকালীন প্রশাসন বিষয়টি আমলে না নিয়ে বরং আন্দোলনকারী শিক্ষকে হয়রানি করেন। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফাটল বিষয়ে মো: আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এ ভাস্কর্য নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে, নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবস্থা করা হয়েছে যা স্পষ্ট। এটা দুঃখজনক যে প্রশাসন তখন কোন ব্যবস্থা নেয়নি।’ তদন্ত সাপেক্ষ অবিলম্বে দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান এ শিক্ষক।
এদিকে শিক্ষক আসাদুজ্জামানের আন্দোলন চলাকালীন সময়েই ১৫ আগস্ট ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপাচার্য। উদ্বোধনের নামফলকটিও রয়েছে বেহাল দশায়।
সরেজমিনে ভাস্কর্যের বিভিন্ন অংশে বেশ কয়েকটি ফাঁটল দেখা যায়। তবে ফাটলের বিষয়টি জানে না বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল কার্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শহিদুল হাসান জানান, ভাস্কর্যে কোন ক্রটি দেখা দিলে নিজ খরচে মেরামত করে দিবেন এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ভাস্কর্যের নির্মাতা ভাস্কর মৃণাল হকের লিখিত রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মো: আইনুল হক বলেন, ‘তৎকালীন উপাচার্য ভাস্কর্য নির্মাণে দুর্নীতি করেছের যা আজ প্রমাণিত। ভাস্কর্যে যে দুর্নীতি হয়েছে সে বিষয়ে প্রশাসনকে লিখিতভাবেও বলেছি।’
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো: আবু তাহের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে ফাঁটল মানে জাতির অস্তিত্বে ফাঁটল। দুর্নীতির সাথে জড়িতদের শাস্তি না হলে এটা হবে কলঙ্কজনক এক অধ্যায়।’
এ বিষয়ে ভাষ্কর মৃণাল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘আমি লোক পাঠিয়েছি। ভাস্কর্যে কোন ক্রটি দেখা দিলে আমরা তা মেরামত করে দিব।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন