স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপসের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নিউমার্কেট ভবন দোতলা করার সিদ্ধান্ত বাতিলসহ তিন দাবিতে তারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন।
গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিউমার্কেটের দোকানে ফিরে যান ব্যবসায়ীরা। এরপর নীলক্ষেত মোড় সন্নিহিত সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত নিউমার্কেট এলাকার সবগুলো রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।
রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভের কারণে আশপাশের বিভিন্ন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকে। যানজটের ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী। তাদের পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। প্রায় চার ঘণ্টা সড়কের অচল আবস্থার পর বিকালে মেয়র সাঈদ খোকন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে নুর তাপস ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা নিউমার্কেটে নির্মাণকাজ বন্ধের আশ্বাস দেন।
নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম বলেন, নিউমার্কেটের মাস্টরপ্ল্যানের বাইরে ভবন দোতলা করার সিদ্ধান্ত বন্ধ; এক নম্বর গেটে পিলার বসিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির প্রতিবাদ এবং মার্কেটের দক্ষিণ-পশ্চিমে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে এ বিক্ষোভ।
জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ঐতিহ্যবাহী নিউ মার্কেট দোতলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। এই সিদ্ধান্তের আওতায় গত ক‘দিন আগে দোকান বরাদ্দের জন্য সংবাদপত্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এর প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছে ওই মার্কেটের শত শত ব্যবসায়ী।
এ খবর পেয়ে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস সেখানে উপস্থিত হন। তিনি ব্যবসায়ীদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানিয়ে তাদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তাপস বলেন, আমি আপনাদের সঙ্গে একমত। নিউ মার্কেটের একটা নিজস্ব ঐতিহ্য আছে। সিটি কর্পোরেশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তারা পুনর্বিবেচনা করবেন বলে আমার বিশ্বাস। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) আমি দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনারা রাস্তাটি ছেড়ে দিন, এতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে।
এরপর ৫টার দিকে ব্যবসায়ীরা সড়ক থেকে সরে গেলে সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। এরপর আস্তে আস্তে যানজটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
স্থানীয়রা জানান, নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সড়কে নেমে এসেছিলেন ব্যবসায়ীরা। সমিতির সদস্য মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন বলেন, ডিএসসিসির কিছু অসৎ কর্মকর্তা নিউ মার্কেটকে দ্বিতীয় তলা করতে চাচ্ছে। এটা ঐতিহ্যবাহী মার্কেটের অবকাঠামো নষ্ট করবে। অবরোধের সময় পুলিশ গেলেও ব্যবসায়ীরা অবস্থান ছাড়েননি। এতে পুলিশ তাদের সাথে কোন উচ্চবাচ্য করেনি।
নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) শের আলম বলেন, পুলিশ তাদের সরে যেতে অনুরোধ করলেও তারা যায়নি। তবে কোনো মারামারি বা পরিবহন ভাংচুর করেনি তারা। এরপর এমপি তাপসের অনুরোধে ব্যবসায়ীরা রাজপথ ছেড়ে নিজ নিজ ব্যবসায় ফিরে গেলে রাস্তায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার গতকাল সন্ধ্যায় জানান, ব্যবসায়ীরা রাজপথে না নেমে ডিএসসিসি মেয়রের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে পারতো। এরপর পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে একটা উপায় বের করা যেতো। নিউমার্কেটের দোতলায় কতগুলো নতুন দোকান নির্মানের পর বরাদ্দ দেয়া হবে-এ প্রশ্নে সরদার কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন