প্রশ্নপত্র ফাঁস : শেষ কোথায়?
প্রায় প্রতিটি বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস যেন বর্তমানে একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার ধরনটাও পাল্টে গেছে। পরীক্ষার আগে পড়াশোনা করার চেয়ে তারা বেশি ব্যস্ত ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের খোঁজে।
প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, মিছিল প্রভৃতি অরাজকতা। উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলেও দুর্নীতিতে শীর্ষে অবস্থান করছি আমরা, যা একটি জাতির জন্য অত্যন্ত অপমানজনক। দেশের প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি, আর্থিক কেলেঙ্কারি এখন আর নতুন কিছু নয়। আশঙ্কার বিষয় হল, বর্তমান প্রজন্ম কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের আগে শিক্ষাজীবনেই দুর্নীতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতির এক অভিনব পদ্ধতি প্রশ্নপত্র ফাঁস।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এ ওয়েবসাইটগুলো প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে সক্ষম হতো না, যদি এতে পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গের যোগসাজশ না থাকত। স্কুল, কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি এটাই প্রমাণ করে- এজন্য দায়ী প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে শুরু করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে নেতৃত্ব ও সুষ্ঠু তত্ত¡াবধায়নের অভাব, কর্তব্যে অবহেলা এবং নৈতিকতার অবক্ষয়।
অত্যন্ত লজ্জার ব্যাপার এই যে, শিক্ষকদের একাংশ প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং ফাঁস হওয়া প্রশ্ন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিতরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ ধ্বংস করতে ভূমিকা রাখছেন।
কিছু কিছু অভিভাবককেও দেখা যায়, পরীক্ষার আগে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের খোঁজ করার জন্য সন্তানদের উসকে দিতে। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দেয়ার বিনিময়ে পুরস্কার ঘোষণা।
প্রশ্ন ফাঁস রোধে সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধের সব চেষ্টাই পÐ হতে পারে, যদি শর্ষের মধ্যেই ভূত থেকে যায়। তাই অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমের সুষ্ঠু পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করার বিষয়টিও কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রাখা জরুরি। প্রশ্নপত্র ফাঁস সমস্যার দ্রæত সমাধান প্রয়োজন। তা না হলে নীতিবিবর্জিত ও মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত হব আমরা।
রিজওয়ানা তাসনীম
শিক্ষার্থী, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
এদের কঠোর হস্তে দমন করা উচিত
প্রতিদিনই আমাদের টাকার দরকার হয়। অথচ অনেক মানুষ টাকার উপর কত কিছু লিখে থাকে। টাকার উপর কেউ কিছু লিখলে সেসব নোট কেউ সহজে গ্রহণ করতে চায় না। যারা এ রকম কাজ করে তাদের স্বাভাবিক মানুষ ভাবতে কষ্ট হয়। যারা এসব কাজ করে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা উচিত।
অনন্য আমিনুল খানসামা,
দিনাজপুর
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন