দ্বিতীয় বারের মতো ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এবারো বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছের বাইরে রয়েছে। কৃষিতে গত বছর আসন সংখ্যার সিলেকশন পদ্ধতি নামে বৈষম্য মূলক নীতি ছিলো। আসন সংখ্যার তিনগুণ পরীক্ষা দিতে পারতো। এ বছর কর্তৃপক্ষের বোধদয় হয়েছে সে নীতি বাতিল করেছে। নিশ্চয় এটি একটি ভালো উদ্যোগ। গতবারের তুলনায় এবার গুচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে। শিক্ষার্থীদের ভ্রমণ ক্লান্তি, আর্থিক সাশ্রয়, ভোগান্তি কমানোর জন্য গুচ্ছের আবির্ভাব হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভোগান্তি কমার চেয়ে কয়েক গুণ বেড়েছে। একজন শিক্ষার্থী প্রথমে ভর্তি ফি দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়েছে। আবার ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মনোনয়ন পাওয়ার জন্য ফি দিয়ে আবেদন করতে হয়েছে। শিক্ষার্থীকে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য ২/৩ বার করে ভর্তি হতে হয়েছে। প্রত্যেকবার ভর্তি হওয়ার জন্য দিতে হয়েছে ১২ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ভর্তি ফি। ভর্তি বাতিল করতেও দিতে হয়েছে ফি। এছাড়াও কাগজপত্র তুলে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী এবং অবিভাবকদের পোহাতে হয়েছে চরম ভোগান্তি। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭/৮ বার মেধাতালিকা দিয়েও ভর্তির শিক্ষার্থী না পেয়ে দিতে হয়েছে গণবিজ্ঞপ্তি। এর পরেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের আসন সংখ্যা পূর্ণ করতে পারেনি। অন্যদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই শুরু হয়ে গেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া। মেধাবী শিক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তা এড়াতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকে। পরে তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলে ভর্তি বাতিল করে আসে। ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন স্বনামধন্য কলেজগুলোতে সিট ফাঁকা থেকে যাচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। ভর্তি বাতিল করতে আবার ফি দিতে হয়। এ যেন শিক্ষার্থীদের উপর মরার অপর খাঁড়ার ঘা। যদি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরে হতো তাহলে শিক্ষার্থীরা মানসিক অশান্তি এবং আর্থিক দিক থেকে সাশ্রয়ী হতো। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন ফাঁকা থাকতো না। গতবারের সমস্যাগুলো থেকে বের হয়ে আসার জন্য গুচ্ছ পরীক্ষার কেন্দ্রীয়ভাবে মেধাতালিকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পছন্দ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিষয় বণ্টন করতে হবে। তাহলেই শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ, ভ্রমণ ক্লান্তি, ভোগান্তি দূর এবং আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী হয় তবেই গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে সার্থকতা আসবে।
রুহুল আমিন
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন