শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

বিনোদন প্রতিদিন

ইত্যাদি এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর পাড়ে লাখ মানুষের উপস্থিতিতে নতুন পর্ব ধারণ

| প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিনোদন রিপোর্ট: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর তীরে গত ১৬ মার্চধারণ করা হয় গণমানুষের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি। এদিন আসন গ্রহণের শেষ সময় ছিল সন্ধ্যা ৬টা। তবে বিকেল ৩টা থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে মানুষের ঢল নামে। নানান বয়সের, নানান পেশার হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে তিতাস নদীর তীরে। পুরো শহর জুড়েই যেন উৎসবের আমেজ। মাগরিবের নামাযের পর শুরু হয় অনুষ্ঠান। তিতাস নদীতে নৌকার মিছিল, গ্যাস ফিল্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মঞ্চের চারিদিকে জ্বালানো হয়েছিল গ্যাসের মশাল, আর পুরো মঞ্চ জুড়েই ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীত সমৃদ্ধ বিভিন্ন এতিহ্যবাহী বিষয়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও মলয়া সঙ্গীতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আফতাবউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ, মনোমোহন দত্ত, আকবর আলী খাঁ-সহ জেলার বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী বিষয় দিয়ে বিশেষ করে যাত্রা, পুতুল নাচ, মলয়া সঙ্গীত ইত্যাদি বিষয়গুলো চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও প্রত্নতাত্তিাক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে গিয়ে ইত্যাদি ধারণের ধারাবাহিকতায় এবার ইত্যাদি ধারণ করা হয় শিল্প, সাহিত্য ও সঙ্গীতে সমৃদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। অনুষ্ঠান ধারণস্থলে তিল ধারনের ঠাঁই ছিল না। লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়। ফলে তিতাস নদীতে নৌকার উপর, বিভিন্ন গাছের উপর, রাস্তয় ছিল মানুষের ঢল। দর্শক অপেক্ষা করতে থাকে কখন ইত্যাদির প্রাণপুরুষ হানিফ সংকেতকে মঞ্চে দেখা যাবে। হানিফ সংকেতই একমাত্র শিল্পী যিনি একই জনপ্রিয়তায় গত ৩০ বছর ধরে একটি অনুষ্ঠান করছেন। তিনি যেমন তার অনুষ্ঠানে নীরবে-নিভৃতে কাজ করে যাওয়া মানুষকে তুলে ধরেন, তেমনি তিনিও একজন নীরব মানুষ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে ইত্যাদি ছাড়া আর কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায় না। তিনি পরিণত হয়েছেন দর্শকদের স্বপ্নের মানুষ। সন্ধ্যা ৭ টায় ইত্যাদির সহকারী ঘোষণা করেন মঞ্চে আসছেন আপনাদের প্রিয় মানুষ ইত্যাদির প্রাণ পুরুষ হানিফ সংকেত। লাখো মানুষের করতালি আর উচ্ছাসে যেন পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর প্রকম্পিত হয়। অত্যন্ত ধীর এবং শান্তভাবে সবাইকে অভিবাদন জানিয়ে হানিফ সংকেত বলেন, আপনাদের এই স্বতস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ, সমর্থন এবং ভালোবাসার কারণেই ইত্যাদির দীর্ঘ যাত্রা সম্ভব হয়েছে। এরপর মঞ্চে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। গাইলেন দেশাত্মবোধক গান। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইত্যাদি করার জন্য ইত্যাদি এবং হানিফ সংকেতকে ধন্যবাদ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে গান, নাচ এবং বিভিন্ন উপভোগ্য পর্ব। ঢাকায় বসবাসরত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরো অনেক তারকা শিল্পী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। তারা সবাই নিজের শহরে ইত্যাদি হবে বলে সব কাজ ফেলে রেখে ছুটে এসেছেন শিকড়ের টানে ইত্যাদির আহবানে। দর্শকরা রাত ১১টা পর্যন্ত উপভোগ করেন ইত্যাদির ধারণ যুদ্ধ। তারা প্রত্যক্ষ করেন, একটি ভালো অনুষ্ঠান ধারণ করতে কত পরিশ্রম করতে হয়। দর্শকের কেউ কেউ মন্তব্য করেন, হানিফ সংকেতকে এতদিন পর্দায় দেখেছি আজ বাস্তবে দেখলাম। কেউ বললেন, এত ছন্দ মিলিয়ে তিনি যেভাবে কথা বলেন, তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। একজন ষাটোর্ধ্ব অন্ধ দর্শক বলেন, চোখে দেখতে পারি না কিন্তু কণ্ঠ শুনেই বুঝতে পারি ইত্যাদি হচ্ছে। একজন শিক্ষক বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইত্যাদি হওয়ায় আমরা গর্বিত। সারা দেশ এবং বিশ্ববাসী এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমপর্কে জানতে পারবে। হানিফ সংকেতকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন