সৃষ্টিশীল শিক্ষা সফর চাই
প্রকৃতির অফুরন্ত পাঠশালা থেকে কিছু শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য মানুষকে অবশ্যই ঘর থেকে বেরোতে হয়। বিদ্যালয়ের আঙিনা কিংবা নিজস্ব গন্ডির বাইরেও রয়েছে বিরাট পৃথিবী। অনন্ত এ পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় মনোমুগ্ধকর দৃশ্য, অপার জনপদে ছড়িয়ে থাকা বিচিত্র পরিবেশ, বহুমাত্রিক জীবনপ্রণালি নিজের চোখে না দেখলে অভিজ্ঞতার ঝুলি অপূর্ণ থেকে যায়। ছাত্রজীবন মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা পৃথিবীকে জানতে চায়, চিনতে চায়। পড়াশোনার পাশাপাশি সবারই ইচ্ছা জাগে আনন্দ ভ্রমণের মাধ্যমে জ্ঞানপিপাসু মনের তৃপ্তি মেটাতে। শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে কৈশোর থেকে যৌবন পর্যন্ত নানাবিধ শিক্ষা, বিদ্যা ও শাস্ত্রে অভিজ্ঞ করে তোলার চেষ্টা করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীর সঙ্গে পরিচয় হয় বটে; তবে তা হয় পুঁথিগত ও সংকীর্ণ। শিক্ষা সফর বা দেশ ভ্রমণের মাধ্যমে এ সংকীর্ণতাকে কাটিয়ে শিক্ষাকে বিস্তৃত ও ফলপ্রসূ করা সম্ভব। অথচ স¤প্রতি শিক্ষা সফর বা ভ্রমণ যেন তার ঐতিহ্য হারিয়ে অনেকটাই যান্ত্রিক ও আঁকা প্রযুক্তির গ্যাঁড়াকলে জড়িয়ে ভিন্ন মাত্রায় প্রভাবিত হচ্ছে। শিক্ষা সফরের নামে ভাড়া করা হচ্ছে পিকনিক স্পট। আনন্দ বিনোদনের জন্য কন্ট্রাক্ট করা হয় পেশাদার শিল্পীদের। বিকট আওয়াজে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে বিরুক্তিকর করে তোলা হয় আশপাশের এলাকা। মঞ্চায়িত হয় আপত্তিকর সব উপস্থাপনা। খাবারের দায়িত্ব দেওয়া হয় কোনো কোনো হোটেলকে। অথচ বাংলাদেশের অফুরন্ত সৌন্দর্য তাদের দৃষ্টির আড়ালে রয়ে গেছে। বিশ্বখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বই লিখে গেছেন, মুক্তবিহঙ্গের মতো হেঁটে চষে বেড়িয়েছেন দেশ। আমরা কি পারি না কৃত্রিম পিকনিক স্পট পরিহার করে ভ্রমণে দেশের প্রকৃতি বা ঐতিহাসিক কোনো স্থান নির্বাচন করতে? ভ্রমণের আয়োজন হোক সৃষ্টিশীল।
আবুল কালাম আজাদ
শ্রীপুর, গাজীপুর
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন