বাঙালিদের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। রাজধানীতে শুধু রমনার বটমূলেই সীমাবদ্ধ নেই এই নববর্ষের উদযাপন। ১৪২৫ বাংলা নববর্ষের এই দিনটি উদযাপন করতে সকাল থেকেই জনতার ঢল নামে দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিলে। তবে দিনভর প্রচণ্ড গরম ও বিকেলবেলা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে স্বস্তি পায় দর্শনার্থীরা। খানিকটা ভোগান্তিতে পড়তে হলেও বৃষ্টি থামার পর তা দর্শনার্থীদের মাঝে নতুন আনন্দের মাত্রা যোগ করে। অনেকজনকে বৃষ্টিতে ভিজেও আনন্দ উপভোগ করেতে দেখা যায়।
বৃষ্টির আগপর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড়ে হাতিরঝিল জনস্রোতে পরিণত হয়। এ যেন শিশু, তরুণ-তরুণী, কিশোর- কিশোরী ও দম্পতিসহ নানা বয়সের মানুষের মিলন মেলা। ঝিলের চারপাশে সবুজ শ্যামলে ঘেরা দৃষ্টিনন্দন খোলামেলা এ পরিবেশ দিনটিকে উপভোগ করতে উৎসুক জনতার যেন আনন্দের কমতি ছিলন না।
শনিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরের পর সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট বড় অনেকেই তাদের প্রিয়জনদের সাথে নিয়ে জড়ো হয়েছে হাতিরঝিলে। প্রিয় মানুষটির হাত ধরে হাঁটতে দেখা গেছে ঝিলের চারপাশে। আবার কেউ ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। কোথাও যেন ফাঁকা জায়গা নেই। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ছবি তুলছেন দর্শনার্থীরা।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসা রফিকুল ইসলাম নামে এক পেশাজীবী ইনকিলাবকে বলেন, হাতিরঝিলে নববর্ষ উদযাপনের মজাটাই আলাদা। আমি আমার স্ত্রী সন্তানদেরকে সাথে নিয়ে এসেছি। খুব ভালো লাগছে। মনির মাহমুদ নামে আরেকজন বলেন, অন্যান্য যায়গার থেকে হাতিরঝিলে নববর্ষ উদযাপনের মজাটা একটু বেশি। এখানে অনেক খোলামেলা পরিবেশ। অনেক ভালো লাগছে।
হাতিরঝিলে নববর্ষের আনন্দকে বাড়িয়ে দিতে আরও বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস। ঝিলের এফডিসি গেটের ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিসগুলোতে টিকিটের জন্য যাত্রীদের ছিলো দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। একই অবস্থা গুলশানসহ অন্যান্য ওয়াটার ট্যাক্সি কাউন্টারগুলোতে। বাবা-মার সঙ্গে ঘুরতে আসা মেহেদি হাসান নামে এক পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, হাতিরঝিলে এসে অনেক মজা করেছি, ওয়াটার বোটে চড়েছি। খেলনা কিনেছি। অনেক ভাল লেগেছে।
অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। বর্ষবরণ নির্বিঘ্ন করতে হাতিরঝিল এলাকায় এবার প্রথমবারের মতো দায়িত্ব পালন করছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। হাতিরঝিলে দায়িত্বরত র্যাব কর্মকর্তা মেজর মোহাম্মদ আলী ইনকিলাবকে বলেন,অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ হয়েছে। নারী হয়রানি, ইভ টিজিং, ছিনতাই ঠেকাতে র্যা বের বিশেষ ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। নিরাপত্তার সার্বিক বিষয়ে আমরা সদা তৎপর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন