প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ও কথাসাহিত্যিক হূমায়ুন আহমেদের বিখ্যাত উপন্যাস দেবী অবলম্বনে অনম বিশ্বাস একটি সিনেমা নির্মাণ করেছেন। অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রযোজনায় সিনেমাটি সরকারী আনুদানে নির্মিত হয়েছে। নির্মাণ শেষে মুক্তির প্রস্তুতিকালে হূমায়ুন আহমেদের কন্যা শিলা আহমেদ জানান, দেবী অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে তাদের পরিবারের কাছ থেকে অনুমতি নেয়া হয়নি। বিষয়টি জয়া জানতে পেরে অনুমতি চান। হূমায়ুন আহমেদের ছেলে নুহাশ হূমায়ুন। সম্প্রতি এক ফেসবুকে স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন জয়া আহসান অনুমতি নিয়েছেন। তিনি হূমায়ুন আহমেদের সকল লেখা নিয়ে লিখেন, হূমায়ুন আহমেদের সমস্ত সৃষ্টি এখন তার উত্তরাধিকারীদের স্বত্বাধিকারে। আমাদের চার ভাই-বোনের অনুমতি ছাড়া যে সিনেমাটির মুক্তি দেয়ার কাজ চলছিলো, সেটি স¤পূর্ণ আইন বহির্ভ‚ত ছিল। যখন এই সিনেমার প্রযোজক জয়া আহসান এই বিষয়ে জানলেন, তিনি সাথে সাথেই আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন এবং আমাদের চারজনের অনুমতি নেয়ার জন্য আইনগত সব ব্যাবস্থা নেন। তিনি এই সিনেমার মার্কেটিংসহ বাকি কাজ বন্ধ রাখেন আমাদের চার ভাইবোনের চুক্তিপত্রে সাইন হওয়া পর্যন্ত। নিয়মানুযায়ী সিনেমার শূটিং শুরুর আগে অনুমতি নেওয়ার কথা। কিন্তু সেটা করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন জয়া। নুহাশ লিখেন, জয়া আহসান আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং আমাদেরকে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার ব্যাখ্যায় আমাদের মনে হয়েছে, এটা তার দিক থেকে একটা অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল। আর তিনি যে এটা সংশোধন করতে চাচ্ছেন, এটা একটা দায়িত্বশীল আচরণের বহিঃপ্রকাশ। নুহাশ লিখেন, অনেক নির্মাতাই আমাদেরকে জানিয়েছেন, তারা আমার বাবার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে এককালীন কিছু টাকা দিয়ে অনুমতি নিয়েছেন এবং নাটক নির্মাণ করেছেন। শাওন আমার বাবার ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টির (গল্প, উপন্যাস, তার সৃষ্ট যে কোনো কিছু ) একমাত্র উত্তরাধিকার না। তাই আমাদের চার ভাইবোনের অনুমতি ছাড়া শুধু মাত্র শাওনের অনুমতি নিয়ে হূমায়ুন আহমেদের সৃষ্টি নিয়ে কাজ করা স¤পূর্ণ বেআইনি। নুহাশ উল্লেখ করেন, তাদের চাচা জাফর ইকবালের কাছে অনেকে অনুমতির জন্য যোগাযোগ করেন। কিন্তু এটি ঠিক নয়। কারণ তিনি তাদের পরিবারের শুভাকাঙ্খী, কিন্তু অনুমতি দেয়ার কেউ নন। তাই কেউ যদি হূমায়ুন আহমেদের সৃষ্টি নিয়ে নাটক, সিনেমা নির্মাণ করতে চান তাহলে যেন শাওনের পাশাপাশি তাদের চার ভাই-বোনের সাথে যোগাযোগ করেন। নুহাশ লিখেন, অনেক নির্মাতাই হূমায়ুন আহমেদের গল্প, উপন্যাস নিয়ে নাটক, সিনেমা বানাচ্ছেন। কিন্তু সেগুলো মানসম্মত হচ্ছে না। আমার মনে হয়, মাঝে মাঝে না বলতে পারাটাও এখন আমাদের জন্য খুব জরুরী। আমি নিশ্চিত, হূমায়ুন আহমেদের ভক্তরা তার কাহিনী নিয়ে নির্মিত হাতে গোনা কয়েকটা অসাধারণ কাজই পছন্দ করবে, একশটা মাঝারি মানের কাজের চেয়ে। তিনি লিখেন, আমার বাবাতো এমনিই আমাদের বুকের মধ্যে বেঁচে থাকবেন তার সৃষ্টির জন্য। তার কাহিনী নিয়ে নাটক বা সিনেমা নির্মাণ তো আমাদের কাছে তার অবস্থান পরিবর্তন করছে না। নুহাশ সবশেষে, জয়া আহসানের জন্য শুভকামনা জানান। একই সাথে যারা তার বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করবেন তাদেরকে মেধাসত্ত¡ আইন ভালো করে পড়ে নেয়ার আহবান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন