শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদিগন্ত

গ্যাস নিয়ে হাহাকার ও তার প্রতিকার

প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ গোলাম হোসেন
কারণে-অকারণে ফি বছর মূল্যবৃদ্ধির খড়গটি প্রতিবাদ-প্রতিরোধে অক্ষম জনগণের মাথায় চালানো কোনো কোনো দপ্তরের রুটিনওয়ার্ক বলেই মনে হয়। ফি-বছর বলাটাও বোধকরি ঠিক হয়নি। কারণ এই খড়গটি ব্যবহারে কোনো দিন-ক্ষণ এমনকি কোনো অজুহাতেরও প্রয়োজন পড়ে না। এই যেমন তেলের মূল্য বৃদ্ধিজনিত ক্ষতি পোষাণোর জন্য যেমনি মূল্য বাড়ার ঘটনা ঘটে, তেমনি তেলের মূল্য যখন কমতে কমতে কার্যত পানির চেয়েও সস্তা তেমন অবস্থাতেও গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা ঘটছে বরাবরই। মূল্য বৃদ্ধির জন্য এতকাল তেলের মূল্য বৃদ্ধিজনিত ক্ষতি পোষাণোর কথা বলা হলেও কখনো চুরি, অপচয়, অবহেলা বা অযোগ্যতাকে দায়ী করা হয়েছেÑএমনটি রেকর্ডে নেই। সব সৎ সাধুর এই দেশে তেমন অভিযোগের কারণ নাইবা থাকল! কিন্তু গত দেড় বছরে তেলের দাম কমতে কমতে যখন অর্ধেকেরও কম তখনো জ্বালানি সংশ্লিষ্ট সেবা ও পণ্যের মূল্য বাড়ছে বারবার আর সম্ভাব্য আছর পড়ছে সব কিছুর ওপর। বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পর একই বছরে দুবার ট্রেন ভাড়া বাড়ানো হলো শতভাগ বা তারও বেশি। এর ধকল গিয়ে ঠেকেছে সড়ক পরিবহনেও। গত সেপ্টেম্বর থেকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ যা উপনিবেশিক আমলেও নজিরবিহীন। অথচ এই মূল্য বৃদ্ধির কোনো ব্যাখ্যা দেয়ার নৈতিক দায়িত্বও অনুভব করছে না যেন সরকার। হেন ‘ডেম কেয়ার’ মানসিকতার কারণটা এতদভিন্ন আর কী হতে পারে যে, ক্ষমতায় যাওয়া আর টিকে থাকার জন্য সরকার এখন সেই অপরিণামদর্শী ভাড়াটিয়ার মতো কথিত ‘দেশের মালিক জনগণ’কেই আর পাত্তা দেয়ার গরজ অনুভব করছে না।
গত ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ থেকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির আতঙ্কটি ঠিকই কার্যকর হলো। তবে শতভাগ বৃদ্ধির অভিপ্রায় ও সর্বময় এখতিয়ার থাকার পরও মাত্র ৫০ ভাগ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি কর্তৃপক্ষের অপরিসীম মহানুভবতার নিদর্শনই মনে করা যেতে পারে। কর্তৃপক্ষের মহানুভবতা ও সাম্য চেতনার আরেকটি নিদর্শন এই যে, মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারা কোনো বৈষম্য বা হেরফের করেননি। ধনী-গরিব, বস্তিবাসী সবার জন্যই একই প্রবৃদ্ধি ৪৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা মাত্র। আইনের দৃষ্টিতে অভিজাত-অনভিজাত, ধনী-গরিব আবার কী? গ্রাহক হিসেবে মহানুভব কর্তৃপক্ষের নজরে সবাই সমান। কিন্তু আমাদের আপত্তি বা অভিযোগ হলো, গরিব বা অনভিজাত বলে তাদের থেকে যখন রেভিনিউ গ্রহণে ছাড় দেয়া হয় না তখন গ্যাস সঞ্চয়ের অভিযোগে মাসের পর মাস তাদের চুলা বন্ধ রেখে কথিত ‘অভিজাত’ শ্রেণীর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার নৈতিক যুক্তিটা কী? এক মন্ত্রী বলেছেন, এলপি গ্যাস ব্যবহারের দিকে অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। ভালো কথা। এলপি গ্যাস হোক বা কাঠ-খড়িই হোক, কথিত অভিজাত এলাকা থেকেই তার শুভ সূচনা হতে আপত্তি কোথায়। যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় এলপি গ্যাসের সূচনাটা তাদের দিয়ে কেন?
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পর নৈতিক কারণে হলেও দীর্ঘদিন থেকে বিরাজমান গ্যাস সংকটের অবসান ঘটবে ‘অ-অভিজাত’ গ্রাহকদের হেন প্রত্যাশা কোনোভাবেই অযাচিত বিবেচনা করা যায় কী? কিন্তু বাস্তবতা ঠিক উল্টোটাই ঘটল। চিহ্নিত কিছু প্রথম শ্রেণীর সুবিধাভোগীর বাইরে আমজনতার জন্য সরবরাহ মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই হ্রাস পেতে থাকল এবং একপর্যায়ে প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে দম নিল যেন। ফলে ‘অনভিজাত’ গ্রাহকদের অনেকেই ইতোমধ্যে এলপি গ্যাস কিনতে না পারলেও কাঠখড়ি কেনা শুরু করেছেন, আর তাও যারা পারছেন না সেই তৃতীয় শ্রেণীর গ্রাহকরা এক বেলার খাবার তিন বেলা খেয়ে বা না খেয়ে থাকার কলাকৌশল উদ্ভাবনে চেষ্টা করেছেন। অবাক হাওয়ার বিষয়, এহেন অসহনীয় অবস্থা কেন এবং কতকাল তা চলবে এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কুম্ভকর্ণের চেয়েও নীরব। কিছু দিন আগে জনৈক কর্মকর্তার সঙ্গে মূল্য বৃদ্ধি ও গ্যাস সংকট নিয়ে কথা হলো। কর্তৃপক্ষের এহেন তাচ্ছিল্য ও উদাসীনতার বিষয়ে তার সোজা জবাব, ‘আপনাদের এসব বানানো অভিযোগ। অসন্তোষ থাকলে তো জনগণ রাস্তায় নামত, কই, কেউ তো রাস্তায় নামেনি। সরকার তো কারো হাত-পা বেঁধে রাখেনি!’ কী অকাট্য যুক্তি! ভাবলাম, তাই তো, একইভাবে এও তো বলা যায়, জনগণ ভোট দেয়নি বা দিতে পারেনি কথিত অভিযোগ নিয়ে কেউ পুলিশের বুট বা বুলেটের মুখে তো কাতার বন্দি হয়ে দাঁড়ায়নি, জলকামান, পিপার স্প্রের কারণে কারো জীবন তো হুমকির সম্মুখীনও হয়নি। সুতরাং গ্যাস সংকট ও মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারটিও সরকারের বৈধতার মতোই প্রশ্নাতীত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বর্তমান সরকারের আমলেই গ্যাস সংকটের অজুহাতে (চুরি বা অপচয়ের জন্য নয়) নতুন সংযোগ এমনকি বৈধ গ্রাহকের এক্সটেনশনও বৈধ পথে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল বছর কয়েক ধরে, যা বছর দুই আগে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। বর্তমান লেজেগোবরে অবস্থা থেকে সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন জাগে, চাহিদা ও সরবরাহের ওপর কোনো জ্ঞান যা পর্যবেক্ষণ ছাড়াই কী এই বন্ধের সিদ্ধান্তগুলো কর্তৃপক্ষ নিয়ে থাকে? জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মতো একটি দপ্তর এ ধরনের তথ্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান ছাড়া চলছেই বা কেমন করে? চাহিদার ২৫ শতাংশও যখন সরবরাহ করতে কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে, ২৪ ঘণ্টায় ৪-৫ ঘণ্টাও যখন চুলোয় গ্যাস আসছে না, সেই অবস্থাতে প্রায় ৫০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধির নৈতিক ভিত্তিটা কী? এমন ভুতুড়ে গল্পও কী আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে, গ্যাসের চাহিদা হঠাৎ একদিন ভোর থেকেই চার গুণ বেড়ে গেছে অথবা উৎপাদন কারো বদদোয়ায় ৭৫ ভাগই কমে গেছে? গ্যাসের যদি হাহাকারই থাকবে তা হলে কর্তৃপক্ষের এক মুখী চুলা বরাদ্দে অনীহা কেন, আর কেনই বা দুই মুখী চুলা নিতে উৎসাহ জোগাতে মাত্র ৫০ টাকা ব্যবধান রাখা হলো? সব গ্রাহকের জন্য একই মূল্য পরিশোধের নীতি গ্রহণের পর বণ্টনের ক্ষেত্রে অভিজাত-অনভিজাত এলাকাভিত্তিক বৈষম্যের নৈতিক ভিত্তিটা কী?
বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আদলে মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্যাস সংকট তীব্রতর করার পেছনে কারো এলপি গ্যাস ব্যবসা চাঙ্গা করার কুমতলব কাজ করছে না তো? আমাদের বিশ্বাস কথিত সব সিস্টেমলস, চুরি, অপচয় ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করা গেলে অন্য কথায় বেড়ায় ক্ষেত খাওয়ার ইতি ঘটানো সম্ভব হলে বর্তমান উৎপাদন ও সরবরাহের আওতায় অন্তত দ্বিগুণ গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব। মিল-ফ্যাক্টরিগুলোতে বিশেষ যোগসাজশে হরিলুটের অভিযোগ যেমনি আছে, তেমনি অপচয় আর অবৈধ সংযোগ দেয়ার অভিযোগও রয়েছে গৃহস্থালি সংযোগের ক্ষেত্রে। এক চুলার মঞ্জুরিতে তিন-চার চুলা জ্বালানো, অকারণে গ্যাস পোড়ানো আর বৈধ-অবৈধ সংযোগ মানেই লিকেজ তো আছেই। অবাক হওয়ার বিষয়, এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা হলেও বাস্তবতা ঠিক তার একেবারেই বিপরীত। অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘদিন কষ্টে কাটাচ্ছিলাম। তাই প্রত্যাহার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আবেদন করলাম এক্সটেনশনের জন্য। মাসখানেক পর খবর নিতে গিয়ে জানলাম, আমার ফাইলের অগ্রগতি শূন্য! কারণ হিসেবে কর্মকর্তারা যা বললেন তার সারমর্ম হলো ‘নিষিদ্ধ থাকার সুবাদে যারা এতকাল অবৈধ সংযোগ নিয়ে বছরের পর বছর গ্যাস ব্যবহার করে আসছেন সেই ‘সম্মানিত’ ও ‘বুদ্ধিমান’দের অবৈধ সংযোগগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বৈধকরণের পরই কেবলমাত্র আমাদের মতো ‘বেআক্কেল’দের বিষয়গুলো যতটা সম্ভব বিবেচনা করা হবে।
গ্যাসের অপচয় না করাটাই যেন অমার্জনীয় পাপ! আর এসব দেখার দায়িত্বে যারা রয়েছেন, ‘না’ দেখাটাই যেন তাদের কাজ। ত্রুটিযুক্ত সংযোগ থেকে অনবরত লিকিংই যেন নিয়ম। একটি দিয়াশলাই কাঠি বাঁচাতে অনেকের চুলাই জ্বলে ২৪ ঘণ্টা। গ্যাস সংযোগ নেয়ার পর অনেকের দিয়াশলাই কেনাটাই বাজেট থেকে বাদ। ভিজা কাঁথা শোকানো থেকে অকারণে পানি ফোটানোর মতো অন্যায় থেকে আমরা নিজেদেরকে দায়মুক্ত ভাবতে পারি ক’জন? প্রসঙ্গত নিজ অভিজ্ঞতা থেকে একটি ঘটনা এখানে না বললেই যেন নয়। তিন দশক আগের কথা। মফস্বল থেকে বদলি হয়ে এসেছি ঢাকায়। ছাত্রজীবনে টিউশনি করতাম অভিজাত এলাকার এমন একটি বাড়িতেই উঠলাম। পাঁচতলা ভবনের একটি স্বতন্ত্র কক্ষে থাকতাম। মাস্টার্স পরীক্ষা। অফিস থেকে ফিরে আগামী দিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে বইতে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছিলাম। আকাশে আষাঢ়ের ঘন মেঘ, তার ওপর সন্ধ্যা লগ্ন। আমি একা থাকি বলে আলাদা মিটার না দিয়ে সরাসরি বাড়িওয়ালার মিটার থেকেই আমাকে সংযোগটা দেয়া। বাড়ির মালিক সচিবালয়ের সিনিয়র সেকশন অফিসার। ততক্ষণে অফিস থেকে ফিরছেন তিনিও। আমার কক্ষে বাতি জ্বলতে দেখে বললেন মাস্টার সাব, দিনের বেলায়ও বাতি জ্বালিয়ে রাখছেন? চোখ তুলে দরজার সামনে বাড়িওয়ালাকে দেখে নিজেকে সামলাতে ব্যর্থ হলাম। বললাম- চাচা, একটা কথা না বললেই যে নয়। মেঘলা আকাশ, সন্ধ্যাবেলা। আমি যে পরীক্ষার্থী তাও আপনার অজানা নয়। তারপরও দিনের বেলায় বাতি জ্বলার বিষয়টি আপনার দৃষ্টি এড়ালো না। বলুন তো, আপনার বাসায় গ্যাস সংযোগ নেয়ার পর প্রথম একটি কাঠি খরচের পর এ পর্যন্ত যে আর দ্বিতীয়বারের মতো চুলা ধরাতে হয়নি এটি কী আপনার নজরে পড়েছে একবারও? আরো কিছু বলার থাকলেও বলা গেল না। ভদ্রলোক তাড়াতাড়ি নিচে নেমে গেলেন। আমার ধারণা, দৃষ্টান্তটি আদৌ কোনো বিরল বা ব্যতিক্রম নয়, নয় বিছিন্ন ঘটনাও। বরং কম-বেশি আমাদের সবার বেলায়ই সত্য। তাহলে আমাদের দুর্ভাগ্য ঠেকাবে কে, কেমন করে? ‘অপচয়কারী শয়তানের ভাই, আর শয়তান তার রবের প্রতি অতিশয় অকতৃজ্ঞ।’ এই বাণী কী শুধুই তেলাওয়াতের জন্য? প্রায় শতভাগ সংযোগ থেকেই কম-বেশি লিকিং হবে এটাই যেন নিয়ম, তা দেখার কেউ নেই। কেউ অভিযোগ জানালে আর উপায় নেই। বখশিশসহ সব খরচ তাকেই বহন করতে হবে।
এই তো সেদিন উত্তরাতে গ্যাসের আগুনে এক পরিবারের চারজনেরই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। কারণ হিসেবে জানা গেল লাইনের লিকেজ সারানো হয়নি। এ লেখা যখন লিখছি তখন জানা গেল বনানীতে একটি বাড়ি একই কারণে পুড়ে গেছে অথচ অভিযোগ করেও কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। এর আগেও একই ধরনের ঘটনায় জানমালের ক্ষতি হয়েছে বহু। কিন্তু প্রতিকার হয়েছে কী? অন্যদিকে মিল-ফ্যাক্টরিগুলোতে চুরি-অপচয় দুটোই নাকি সীমাহীন এবং ওপেনও বটে! অর্থমন্ত্রীর বিবেচনায় ঘুষ কোনো অপরাধই নয়, চার হাজার কোটি টাকা চুরি একটি নগণ্য বিষয়; জনতা, সোনালী, বেসিক ব্যাংকের পর খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক যখন লুট হওয়ার উপক্রম তখন তিতাসের ব্যাপারটি চালুনের ছিদ্র খোঁজার মতোই বোধ হওয়া স্বাভাবিক। তবু সরাসরি ভুক্তভোগী বলে সম্ভাব্য প্রতিকারের বিষয়ে কতিপয় পরামর্শ রেখে আজকের আলোচনা শেষ করতে চাই।
সত্যিকারের প্রতিকারের জন্য যা করা জরুরি ১. চুরি, অপচয় ও দুর্নীতির উৎসগুলো চিহ্নিতকরণ ও তার প্রতিরোধের ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ। এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন ভূতমুক্ত সরিষা কিন্তু সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কী এতে রাজি হবেন? যদি রাজি হন তবে সংস্কারের কাজটা গোড়া থেকেই শুরু করুন। এতে করে কম্বলের অস্তিত্বই যদি বিপন্ন হয় হোক, নতুন কম্বল বোনার কারিগরের এদেশে অভাব আছে এমনটি না ভাবাই ভালো। ২. গ্রাহকদের দুর্নীতির বিষয় নিয়ে টেনশন করার কোনো কারণ নেই। সরিষা ভূতমুক্ত হলে এসব রোগী সুস্থতার জন্য ২৪ ঘণ্টাই যথেষ্ট হবে। ৩. চুরি-অপচয় রোধে সকল পর্যায়ে মিটার ব্যবস্থা করুন এবং বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে নিন। ৪. চুরি ও অপচয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের লাইন স্থায়ীভাবে বন্ধকরণসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ। অনুরূপভাবে দুর্নীতিবাজ কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও চাকরিচ্যুতসহ আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করুন। ৫. সিস্টেমলস নামের অপচয়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ। ৬. লিকিং শূন্য সংযোগ নিশ্চিতকরণসহ অভিযোগ পাওয়া মাত্র তা নিরসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ। ৭. কর্তৃপক্ষের অবহেলাজনিত কারণে জনজীবনের যে কোনো ধরনের ক্ষতির জন্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতকরণ। ৮. কোথাও কোনো অনিয়ম বা ত্রুটি-বিচ্যুতি হচ্ছে কিনা তা অনুসন্ধানের জন্য আঞ্চলিক টিম গঠন। ৯. গ্রাহকদের দ্বিমুখীর পরিবর্তে একমুখী চুলা গ্রহণে উৎসাহিত করার জন্য একমুখী চুলার চার্জ কমপক্ষে অর্ধেকে পুনর্নির্ধারণ।
আমাদের বিশ্বাস, পরামর্শগুলো সুবিবেচনায় নিয়ে সততা ও সদিচ্ছার সঙ্গে কার্যকর করা গেলে চুরিচামারিজনিত লোকসানের বোঝা গ্রাহকদের ওপর না চাপিয়েও তিতাসের পা-ুর মুখটিতে লাবণ্যতার চিহ্ন ফুটিয়ে তোলা সম্ভব।
য় লেখক : প্রাবন্ধিক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন