বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কীভাবে বাঁচবে মেধাবী শরীফ দিশেহারা বাবা-মা

| প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মো: শামসুল আলম খান : চায়ের স্টল থেকে উপার্জনের টাকাতেই ৬ সদস্যের ভরণ-পোষণ চালাতে হয় সোবহান আলীকে (৫০)। নিজের চার সন্তানের মাঝে দ্বিতীয় ছেলে শরীফ আহমেদ (২১) তার সংসারে ‘আঁধার ঘরের প্রদীপ’। বিশ্ববিদ্যালয় পাস করে ছেলে বড় ডিগ্রী নেবে, চাকরি করবে, শেষ হবে অভাব-অনটনের দিনলিপি- এমন স্বপ্নই ছিল তার। বাবাকে দরিদ্র্যতা জয় করার স্বপ্ন দেখানো আদরের সন্তান শরীফ জটিল ব্যাধি থ্যালোসেমিয়ায় আক্রান্ত। বয়স যত বাড়ছে ততই খারাপ হচ্ছে শরীফের অবস্থা। চির আকাঙ্খিত স্বপ্নের শেষ সিঁড়িতে পৌঁছার আগেই নিভে যেতে বসেছে জীবনের আলোকাধার। পরিবারের সদস্যদের আহার আর সন্তানদের পড়াশুনার খরচ জোগাতেই ‘কয়লা’ সোবহানের জীবন। এখন ছেলের রক্তস্বল্পতাজনিত এ রোগের ব্যয়বহুল চিকিৎসা খরচ তাঁর পক্ষে বহন করা একেবারেই অসম্ভব। সন্তানকে সুস্থ করে তুলতে হৃদয়বান-বিত্তবানদের কাছে আকুতি জানানো ছাড়া যেন আর কিছুই করার সাধ্য নেই হতভাগ্য এ চা দোকানির। বিত্তবানদের সহযোগিতাতেই কেবল বাঁচতে পারে তাঁর সন্তান, এ মেধাবী তরুণ প্রাণ। জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের কান্দানিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোবহান আলী। ৫০ বছর বয়সী এ দরিদ্র চা দোকানির সম্বল বলতে কাঠা দুয়েক জমি আর বসতভিটাটুকু। চার সন্তানের মাঝে বড় ছেলে সোহেল (২৫) তাঁর সঙ্গেই ক্ষুদ্র ব্যবসায় সহায়তা করেন। অর্ধাহার-অনাহারের সংসারে পেরুতে পারেননি প্রাথমিকের গন্ডি। সোবহানের দ্বিতীয় ছেলে শরীফ আহমেদ ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনায় মনোযোগী। আর্থিক দৈন্যতার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে চালিয়ে গেছেন এ সন্তানের লেখাপড়া। স্কুলে পাঠাচ্ছেন ছোট দুই ছেলে রাকিম ও মৃদুলকে। দারিদ্র্যের অন্ধকার ঘরে বেড়ে ওঠেও অদম্য আগ্রহে সাফল্যের সঙ্গেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়ে শরীফ জেলার ত্রিশাল উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন ২০১৮ সালে। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়েই গত চার বছর আগে শরীফের শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে মরণ রোগ ‘থ্যালোসেমিয়া’। ভয়াবহ এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে রক্তশুন্য হয়ে পড়ে শরীফ। ওই সময় থেকেই দুই থেকে তিনমাস পর পর রক্ত নিতে হয় তাকে। ফলে সন্তানের উচ্চ শিক্ষা ও চিকিৎসা দু’টি চালাতে গিয়েই রীতিমতো ‘গলদঘর্ম’ হতে হচ্ছে সোবহানকে। ইতোমধ্যেই চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছেন দ্রæত সময়ের মধ্যে ‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন’ ছাড়া তাকে বাঁচানো সম্ভব নয়। শরীফ বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা: খোরশেদ আলমের তত্ত¡াবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শরীফের বাবা চা দোকানি সোবহান আলী বলেন, চিকিৎসকরা বলছে, আমার সন্তানকে বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমার এই সামর্থ্য নেই।’ সন্তানকে বাঁচাতে চিকিৎসা ব্যয়ের অর্থ জোগাড় না হওয়ায় দিন-রাত চোখের জলে বুক ভাসাচ্ছেন মা শরীফা খাতুন (৪০)। সন্তানকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আকুতি জানিয়ে এই মা বলেন, মানুষের সহানুভূতিই পারে আমার সন্তানকে বাঁচাতে।’ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা: খোরশেদ আলম জানান, শরীফ থ্যালোসেমিয়ার মতো জটিল রোগে আক্রান্ত। দ্রæত সময়ের মধ্যেই শরীফের বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। এজন্য কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন।
শরীফকে চিকিৎসা সহায়তা করার যোগাযোগের ঠিকানা : ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং আইডি- ০১৯২৬২৭৪৯১৪৫ শাহিনুর রহমান শিমুল। বিকাশ নম্বর- ০১৬৮৫০৪৮৬৩৪ (শরীফ আহমেদ)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন