শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

অনাহারি বাবা-মা’র খোঁজ নেয়নি সন্তান

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সম্পত্তি আর বসতঘর না থাকার কারণে নিজের সস্তানরা ভাতও দেয়নি, খোঁজও নেয়নি বয়োবৃদ্ধ আ. রহমান (৮০) আর হজুনী বেগম (৬৮) দম্পত্তির। স্ত্রীকে নিয়ে যে ঘরে দীর্ঘদিন থাকতেন সেই ঘরটিও সহসায় ছেড়ে দিতে হবে ঘরের মালিককে। বয়সের ভারে ভিক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। কেউ কিছু দিলে পেটে দানাপানি পড়ে না দিলে উপোস থাকতে হয় এমন হতভাগা এক দম্পত্তির খোঁজ মিললো চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের গর্ন্ধব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের স্থানীয় মৈশামূড়া গ্রামের বড় বাড়িতে। আঃ রহমান ঐ বাড়ির মৃত আকমত আলীর ছেলে।

সম্প্রতি সময় বড় বাড়িতে গেলে স্ত্রী হজুনী বেগমের উপস্থিতিতে আঃ রহমান ইনকিলাবকে জানান, নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি বলতে তেমন কিছু ছিলো না। দাম্পত্য জীবনে ১১ সন্তানের জন্মগ্রহন করলে ও বেঁচে আছেন খোকন (৫০) ও হাকিম (৪৫) নামের দুই সন্তান। খোকন ভাংগারি মালামালের কাজ করেন হাজীগঞ্জ বাজারে আর হাকিম কাজ করে কুমিল্লার বাগমারা এলাকার ফার্নিচারের দোকানে। দুজেনই তাদের স্ব-স্ব কর্মস্থলে থাকেন স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়ে।

বাবা-মায়ের জন্য তাদের সন্তানদের মায়া মহব্বত কিছু নেই কেন এমন প্রশ্নে এই অভাগা দম্পত্তি বলেন, তারা বাড়িতে আসা দুরে থাকুক বাবা-মায়ের খোঁজ খবরের জন্য ফোন পর্যন্ত করেনি। এমন কি রমজান বা ঈদে কথনো কোন খবরই রাখেনি ছেলেগুলো। নিজের কোন সম্পদ আর সম্পত্তি না থাকার কারনে ছেলেগুলো বাবা মায়ের খবর রাখেনি বলেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন হজুনী বেগম।

এদিকে বড় বাড়ির লোকজন ইনকিলাবকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে আ. রহমান দম্পত্তি যে ঘরে বসবাস করছেন, সেই ঘরের লোকজন চট্টগ্রামে থাকেন। আসছে জানুয়ারীতে ওই ঘরের লোকজন চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে চলে আসবেন। তাই আব্দুর রহমান দম্পত্তিকে ডিসেম্বরের মধ্যেই ঘরটি ছেড়ে দিতে হবে বলে দেওয়া হয়েছে। সেই কারনে খেই হারিয়ে ফেলেছেন এই দম্পত্তি।

এ বিষয়ে ওই বাড়ির আব্দুল কাদের (৬৫) জানান, বাড়ির লোকদের সহযোগিতায় তাদের (আ. রহমান ও হজুনী) খাওয়া, পরা (পোশাক) এবং চিকিৎসা চলছে। এলাকার মানুষও সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন। এখন সবচে বড় সমস্যা এদের থাকার। কেউ যদি একটি ঘর করে দেয়, তাহলে এই বুড়ো লোক দুইটার মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য রনজিৎ চৌধুরী বলেন, আ. রহমান বয়স্ক ভাতা পায়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই সদস্য বলেন, সবাইকে চাউল দেয়া যায় না। কারন চাহিদা ২০০জন, বরাদ্দ পাই ৫০ জনের। তাই ঘুরিয়ে-পিরিয়ে সবাইকে দিতে হয়। তাছাড়া যারা বয়স্ক ভাতা পায়, তাদের চাউল দেয়া যায় না।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে ইনকিলাবকে জানান, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। ওই ওয়ার্ডের মেম্বার (ইউপি সদস্য) ভালো বলতে পারবেন। যা করার মেম্বার করবে। তিনি কি দিবেন, না দিবেন সেটা প্রস্তাব করতে হবে। তারপর পরিষদ থেকে সাধ্যমতো দেয়ার চেষ্টা করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন