গতকাল সকালেই হোটেল সোনারগাঁয়ের লবিতে দেখা পাওয়া গেল তামিম ইকবালের। খানিক বাদে ঢুকলেন মুশফিকুর রহিম, এরপর এলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশের নতুন ‘কোচিং পরামর্শক’ গ্যারি কারস্টেনের সাথে দেখা করতেই এসেছিলেন তিন জন। কিন্তু কী কথা হলো তাঁদের সঙ্গে? প্রচারমাধ্যমের সামনে কেউ মুখ খুলতে রাজি হলেন না। তবে বিসিবির প্রধান নির্বাহী যা বললেন এবং অন্যান্য সূত্র থেকে যা জানা গেল, কারস্টেনের দায়িত্ব শুধু কোচ ঠিক করা পর্যন্তই। সেটা ঠিক করার জন্যই আপাতত বাংলাদেশ দলের একটা অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা করছেন।
গর্ডন গ্রিনিজের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ক’দিন আগেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, কোচ ঠিক করার জন্য খুব শিগগির বাংলাদেশে আসছেন কারস্টেন। শুরুতে তাঁকে পূর্ণকালীন কোচের প্রস্তাব দেওয়া হলেও ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই কোচ তাতে রাজি হননি। এরপর শুধু পরামর্শক হিসেবেও কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কাজটা খন্ডকালীন হলেও বিসিবি চুক্তি করতে চেয়েছিল দীর্ঘ সময়ের জন্য। তবে কারস্টেন তাতেও রাজি হননি। আপাতত বিসিবির হয়ে শুধু কোচ ঠিক করার দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন। সেজন্যই আজ জাতীয় দলের খেলোয়াড়, নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী যেমন বললেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে কয়েকজন কোচের নাম দিয়ে সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছি, গ্যারি কারস্টেনের কাছেও কিছু নাম আছে। আপাতত দলের পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর তিনি হয়তো তার পরামর্শ আমাদের দিবেন যে, কোন এরিয়াতে আমাদের বেশি কাজ করতে হবে এবং এরপর তিনি বলবেন কোন কোচ আমাদের জন্য বেশি কার্যকর হবেন।’
তবে বিসিবির প্রধান নির্বাহী গতকাল মিরপুরে বললেন, কারস্টেনের কাছে আগে জাতীয় দলের সবার পারফরম্যান্স নিরীক্ষার বিষয়টা প্রাধান্য পাচ্ছে, ‘আসলে গ্যারি কারস্টেন আপাতত বাংলাদেশ দলের একটি ‘ইন্টার্নাল অডিট’ করছেন। সামনে আইসিসির যে সব কম্পিটিশন আছে, আইসিসি বিশ্বকাপ, ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি; এগুলো সামনে রেখে কিভাবে বাংলাদেশ দলকে উন্নত করা যায়, কোন কোন জায়গায় কাজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছেন। তিনি বোর্ডকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিবেন। জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও উনি বসবেন। বিশেষ করে দল নির্বাচক, বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বসার পরিকল্পনাও তার রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আপনাদের জানাতে চাচ্ছি যে, উনি খুব স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাচ্ছেন এবং সেভাবেই তিনি কাজ করছেন। উনাকে শুধুমাত্র আমরা লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছি। উনার যার সাথে প্রয়োজন, তার সাথে যোগাযোগ করে তিনি নিজেই মিটিং টাইম ঠিক করে নিচ্ছেন।’
প্রধান নির্বাহী অবশ্য বলেননি, কোচ নিয়োগ ও নিরীক্ষার কাজ শেষ হয়ে গেলে কারস্টেনের আর বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু সেই কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়াটাই কতদিনের মধ্যে শেষ হবে? নিজামউদ্দিন চৌধুরী বললেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগেই নতুন কোচ পেয়ে যাওয়ার কথা।
বিসিবি সভাপতি অবশ্য কদিন আগেই বলেছিলেন, শর্ট লিস্টে কয়েকজনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে কী করবেন কারস্টেন? নিজামউদ্দিন চৌধুরী বললেন, এর মধ্যে কারস্টেনের কাছে নামগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলাও শুরু করেছেন। শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা জানতে কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন