পথশিশু ও শ্রমজীবী শিশু-কিশোরদের উপার্জিত অর্থ নিরাপদ সঞ্চয়ের জন্য পথশিশুদের হিসাব খোলা কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর এ উদ্যোগ জনপ্রিয়তাও অব্যাহতভাবে বাড়ছে। ফলে শিশু-কিশোরদের এ ধরণের ব্যাংক হিসাবের (অ্যাকাউন্ট) সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় এক হাজার অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। অবশ্য গত ডিসেম্বরে আগের তিন মাসের তুলনায় কমেছে ১২৭টি অ্যাকাউন্ট। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অংশ হিসাবে পথশিশু ও শ্রমজীবী শিশু-কিশোরদের ব্যাংকের আওতায় আনতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব এনজিও এ অ্যাকাউন্ট খোলানোর বিষয়ে সরাসরি কাজ করছে তাদের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই বৈঠক করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে দেখা গেছে, পথশিশু ও শ্রমজীবী শিশু-কিশোরদের মোট চার হাজার ৫৪৪টি হিসাব রয়েছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৭২৫টি। ওই সময় এসব অ্যাকাউন্টে মোট স্থিতির পরিমাণ ছিল ২৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। আর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে দেখা গেছে পথশিশু ও কর্মজীবি শিশু-কিশোরদের অ্যাকাউন্টে মোট স্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ১২ হাজার টাকা।
দেশের ১৮টি ব্যাংক পথশিশু ও শ্রমজীবি শিশুদের অ্যাকাউন্ট খুলছে। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা, বিডিবিএল, বাংলাদেশ কৃষি, পূবালী, সোস্যাল ইসলামী, দ্য সিটি, ওয়ান, মার্কেন্টাইল, ব্যাংক এশিয়া, ন্যাশনাল, ট্রাস্ট, উত্তরা, আল-আরাফাহ, প্রাইম এবং মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। অ্যাকাউন্ট খুলতে সহায়তা করছে ১৪টি এনজিও। এসব এনজিও মধ্যে রয়েছে মাসাস, সাফ, উদ্দীপন, অপরাজেয় বাংলাদেশ, ব্র্যাক, নারীমৈত্রী, সিপিডি, প্রদীপন, সাজিদা ফাউন্ডেশন, এএসডি, শক্তি বিদ্যালয়, ইবিসিআর প্রকল্প, পরিবর্তন ও ঘাঁসফুল। পথশিশুদের সবচেয়ে বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে রূপালী ব্যাংকে। এ ব্যাংকের এখন ৯৭৪টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এ অ্যাকাউন্টে নয় লাখ ৭৬ হাজার টাকা জমা রয়েছে। এরপর সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে ৮১৫টি অ্যাকাউন্টে দুই লাখ ৩৪ হাজার টাকা রয়েছে। জানা গেছে, যারা আগে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করত। এসব শিশুদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলাসহ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলানোর বিষয়ে কাজ করছে বিভিন্ন এনজিও। ব্যাংকগুলোর বিশেষ অ্যাকাউন্ট ‘পথশিশু ও কর্মজীবি শিশু-কিশোর’ এর অধীনে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হয়।
২০১৪ সালের মার্চে পথশিশু ও কর্মজীবি শিশু-কিশোরদের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অন্যান্য ১০ টাকা হিসাবের মত কর্মজীবি শিশু-কিশোরদের এ হিসাবে কোনো ফি বা চার্জ আরোপ করা হয় না। এমনকি ন্যূনতম স্থিতি রাখার বাধ্যবাধকতাও নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন