জেলা শহর সুনামগঞ্জ, বিভাগীয় শহর সিলেট ও রাজধানী ঢাকার সাথে দিরাইবাসির সড়ক যোগাযোগের একমাত্র পথ হচ্ছে দিরাই-মদনপুর সড়ক। দিরাই থানা পয়েন্ট হতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের মদনপুর গ্রাম সংলগ্ন সংযোগ পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার রাস্তায় ৪৫টি মোড় রয়েছে, এরমধ্যে ১৭টি মোড় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া এ সড়কের উভয়পার্শ্বে সংযোগ রাস্তা রয়েছে ৩৫টি। তবে নেই ডান-বাম মোড় চিহ্নিত সতর্ক সংকেত। বার বার সড়ক দুর্ঘটনার পরও আজ পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়নি ‘দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা’। ফলে দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনা লেগেই আছে।
এদিকে সরেজমিন দিরাই বাসস্টেশন হতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের মদনপুর নামক স্থানের সংযোগ সড়কের দিরাই-মদনপুর রাস্তার ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে শতাধিক সংযোগ রাস্তা রয়েছে বলে দেখা গেছে। এরমধ্যে যেগুলোতে রিকসা, অটোরিকসা, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহন চলাচল করে, এমন সংযোগ সড়কের সংখ্যাও প্রায় অর্ধশতাধিক। আর ঝুঁকিপূর্ণ মোড়ের সংখ্যা প্রায় ১৭টি। সেগুলো হল সুজানগর, বদলপুর, সাদিরপুর, পাথারিয়ায় ২টি, গাজিনগরে ২টি, গণিগঞ্জ, নগর, নোয়াখালীতে ৩টি, বগুলারখাড়া, নারাইনপুর, গাগলীতে ৩টি উল্লেখযোগ্য।
সরেজমিন দেখা গেছে, দিরাই-মদনপুর সড়কের পশ্চিমে নতুন বাগবাড়ির সাথে সংযোগ, পূর্বে আনোয়ারপুরের সাথে সংযোগ ২টি, সুজানগর গ্রাম সংলগ্ন পশ্চিমে সংযোগ, পূর্বে সংযোগ সড়ক ২টি, নতুন কর্ণগাঁও গ্রাম সংলগ্ন পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ, বদলপুর গ্রাম সংলগ্ন পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ, সাদিরপুর গ্রাম সংলগ্ন পূর্বে সংযোগ, শরীফপুর গ্রাম সংলগ্ন সড়কের পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ, কান্দিগাঁও গ্রাম সংলগ্ন ভাটিপাড়া সড়ক সংযোগ, পাথারিয়া বাজার সংলগ্ন পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ ২টি, গাজিনগর গ্রাম সংলগ্ন পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ ২টি, দরগাহপুর গ্রাম সংলগ্ন পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ ২টি, গণিগঞ্জ গ্রাম সংলগ্ন পূর্বে ১টি ও পশ্চিমে ২টি সংযোগ, নোয়াখালী বাজার সংলগ্ন পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ ২টি, বগুলারখাড়া গ্রাম সংলগ্ন পূর্বে ২টি সংযোগ, গাগলী গ্রাম সংলগ্ন পূর্বে ২টি ও পশ্চিমে ১টি সংযোগ, নারাইনপুর গ্রাম সংলগ্ন পূর্বে ৩টি ও পশ্চিমে ২টি ও কাঠালিয়া গ্রাম সংলগ্ন জামালগঞ্জ সড়কের সংযোগ উল্লেখযোগ্য।
এদিকে দিরাই-মদনপুর ২৬ কিলোমিটার সড়কের পার্শ্বে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ ও বাজারসহ ঝুঁকিপূর্ণ মোড় রয়েছে। কিন্তু কোথাও এ সকল প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে সতর্ক সংকেত চিহ্ন দেয়া হয়নি। ফলে যানবাহনগুলি তাদের বেপরোয়া আচরণ বন্ধ করেনি। এ কারণে অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত, আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীর সংখ্যাও অনেক। তারপরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না।
অন্যদিকে দীর্ঘ ২৬ কিলোমিটার রাস্তার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে নেই কোন ধরণের স্প্রিড ব্রেকার। যার কারণে অনেকাংশে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে থাকে। বিশেষ করে মূল রাস্তার সাথে সংযোগ সড়কে স্রিপড ব্রেকার দাবি জানান এলাকার সাধারণ মানুষ। এছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে সংযোগ সড়কের পাশে ও বিশেষ স্থানে জনসাধারণের চলাচলের জন্য জেব্রা ক্রসিংও প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকেই।
নোয়াখালী বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল বাছিত সুজন প্রশাসনের কাছে দাবি জানান, দিরাই-মদনপুর সড়কটি আরো প্রশস্ত করা এবং মোড়গুলোকে সোজা করার, তা না হলে সড়ক দুর্ঘটনা আরো বাড়বে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামকে বেশ কয়েকদিন একাধিকবার অফিসের স্থায়ী মোবাইল নাম্বার (০১৭৩০-৭৮২৬৬৬)-এ কল করলেও ফোনটি রিসিভ করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন