ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও নেই ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান (ডাষ্টবিন)। শহরের বাসা-বাড়ি, হোটেল-রেস্টুরেন্ট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পঁচা বর্জ্য দেদারসে ফেলা হচ্ছে লাচ্ছি নদীর ব্রীজের ধারে। এতে বাড়ছে নদী ও পরিবেশ দুষণ।
জানা যায়, বাসা-বাড়ি, হোটেল-রেস্টুরেন্ট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনের পঁচা খাবার, নষ্ট ভাত, তরকারি ও শাক-সবজী, দইয়ের খালি বাটি, ডিমের খোসা, জুসের বোতলসহ নানারকমের দূর্গন্ধযুক্ত আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এই নদীর উপর ও ব্রীজের ধারে। এর ফলে ঘটছে পরিবেশ দূর্ষণ। হুমকির মুখে পড়ছে প্রকৃতি। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা স্কুলের শিক্ষার্থী, সাধারন মানুষ ও নদীর উভয় পারের লোকজন। যা থেকে হতে পারে দুরারোগ্য ব্যাধিও।
সরেজমিন ও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সকালে ও রাতে এসব ময়লা, আবর্জনা ও পঁচা খাবার নিয়ে এসে ঐ নদীতে এবং ব্রীজের ধারে ফেলে যাচ্ছে পীরগঞ্জের হোটেল-রেস্টুরেন্ট এর কর্মচারীরা।
পীরগঞ্জ প্রিয়াংকা হোটেলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী ও ভেন চালক এ প্রতিবেদক জানান, হোটেলের ময়লা আবর্জনা, দুর্গন্ধযুক্ত বাসি পঁচা খাবারগুলো প্রতিদিনই আমরা ব্রীজের পূর্বধারেই ফেলি। পৌরসভার পক্ষ থেকে কেউ বাধা দেয় না এমন প্রশ্নে তারা জানান, না কেউ বাধা দেয় নি। তবে পথচারীরা মাঝে মাঝে এখানে ময়লা ফেলতে নিষেধ করে। এখানে শুধু আমরা না সবাই ময়লা ফেলে তাই আমরাও ফেলি।
তবে প্রিয়াংকা হোটেলের মালিক আরশাদ হোসেন বাবু জানান, প্রতিদিনের যে ময়লাগুলি জমা হয় তা ফেলার জন্য সেরকম কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। তাছাড়া আমার কর্মচারীকে বলা আছে পৌরসভা যেখানে ময়লা ফেলে সেখানে ফেলতে (পীরগঞ্জ কবরস্থানের পার্শ্বের গর্ত)। তারা যে ব্রীজের কাছে ময়লা ফেলে তা আমার জানা ছিল না। এখনি কর্মচারীদের ডেকে নিষেধ করে দিচ্ছি।
নাম বলতে অনিচ্ছুক ওয়ালটন ‘শো’ রুম ও পূবালী ব্যাংকের দুই জন কর্মচারী জানান, পীরগঞ্জের প্রায় সব কয়েকটি হোটেলকে বর্জ্য এ ব্রীজের ধারে ফেলার কারণে উটকো দুর্গন্ধে অফিসে থাকা যায় না। অথচ ব্রীজটির পাশেই অবস্থিত পীরগঞ্জের পৌরসভা ভবন। পৌর কর্মকর্তা ও কর্মচরীরা প্রতিদিন এ পথ দিয়ে চলাচল করলেও দেখেও না দেখা ভান করে।
পীরগঞ্জ হাসপাতালে আবাশিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ হুমায়ুন কবীর জানান, খোলা জায়গায় আবর্জনা ও ময়লার স্তুপ থেকে নানা রকমের রোগ জীবানু ছড়ায়। ডায়ারিয়া, কলেরা, চর্মরোগ, টাইফয়েডসহ জটিল রোগ হতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধরা এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
নদীতে বর্জ্য ফেললে একদিকে যেমন বাড়বে পরিবেশ দুষন অন্যদিকে দুষিত হবে নদীর পানি। এতে হুমকির মুখে পড়তে পারে জীব বৈচিত্র। এমনটি বললেন উপজেলা কৃষি অফিসার আবুল কালাম আজাদ।
পৌর মেয়র কশিরুল আলম এর কাছে এ বিষয়ে জানতে গেলে তিনি ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ এর সাথে কথা বলতে বলেন।
কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ বলেন, হোটেল রেস্টুরেন্টের এমন কাজের ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে । এধরনে কান্ডকৃর্তি জন্য শাস্তি হোক তা আমরা চাই। যারা এখানে ময়লা ফেলছে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মেয়রের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিয়ে আপনাদের জানাবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন