রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী বহনে সৈয়দপুর রেল কারখানায় শেষ হচ্ছে বগি মেরামত

সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে নজির হোসেন নজু | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় চলছে বগি মেরামতের কর্মযজ্ঞ। ট্রেনের পুরানো বগি মেরামত, নতুন অতিরিক্ত বগি সংযোগ ও বিশেষ ট্রেন চালুর প্রস্তুতি নিতে ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার শ্রমিক-কারিগর ও প্রকৌশলীরা। ঈদ উপলক্ষে এবার এ কারখানায় ৯০টি কোচ মেরামত করে সচল করা হচ্ছে। সচল করা এসব কোচ প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত করে অধিক যাত্রী বহন এবং ২টি স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে। ঈদের ৫ দিন আগে থেকে একটানা ১২ দিন চলবে বিশেষ এ ট্রেন সার্ভিস।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সৈয়দপুর ও পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রামে দুইটি রেলওয়ে বগি মেরামত কারখানা রয়েছে। দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ২৮টি উপকারখানা (সপ) রয়েছে। এ সব উপকারখানায় পুরানো বগি মেরামত এবং ১২০ রকমের যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয়।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্র জানায়, গত এপ্রিল মাস থেকে পুরানো জরাজীর্ণ ৯০টি কোচের মেরামত কাজ শুরু হয়েছে। ঈদে ঘরমুখো ট্রেন যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণের জন্য উল্লিখিত সংখ্যক বগি রেল কারখানায় মেরামতের লক্ষ্য ঠিক করা হয়। কারখানায় মঞ্জুরি জনবলের মাত্র ৩৬ ভাগ জনবল দিয়ে ওই পুরনো বগিগুলোকে সচল করা হচ্ছে। এসব বগি দিয়ে ঢাকা রুটে পার্বতীপুর ও রাজশাহী থেকে ঈদের আগে ও পরে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে।
জানা যায়, রেলওয়ে কারখানায় ৪ টি সপ (উপ কারখানা) মেরামত কাজ চলছে ৯০টি বগির। এর মধ্যে ব্রডগেজ রেলপথের ৫৯টি। এ ছাড়াও শুক্রবার ছুটির দিনেও কাজ চলছে কারখানায়। মিটার গেজ রেলপথের ৩১টি কোচ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কোচের মেরামত সম্পন্ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারখানার শ্রমিক-কারিগর ও প্রকৌশলীরা। এ জন্য দৈনিক কর্মঘন্টার সঙ্গে অতিরিক্ত এক ঘন্টা শ্রম বেশি দিচ্ছেন শ্রমিক-কারিগররা।
ঈদে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরতে নানা সুবিধার জন্য রেলওয়ে ভ্রমনই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন থাকেন যাত্রী সাধারণ। তাছাড়াও সড়ক পথে অহরহ দুর্ঘটনা, সড়কে বেহাল দশা, তীব্র যানজট এবং অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে দিন দিন ট্রেনমুখী হয়ে উঠেছেন যাত্রীরা। ফলে আসন্ন ঈদে বেশি সংখ্যক যাত্রী পরিবহন ও অধিকতর যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতেই রেলওয়ে কতৃপক্ষ বিমেষ ট্রেন ছাড়াও যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোয় অতিরিক্ত বগি (কোচ) সংযোগ করে থাকে। ট্রেনমুখী অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে ইতোমধ্যে ৪০টি কোচ রেলওয়ের পাকশী ও লালমনিরহাট ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর অবশিষ্ট কোচ ঈদের আগে ১২ জুনের মধ্যে হস্তান্তর সম্পন্ন হবে। এতে করে পশ্চিম রেলওয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে ৫০ হাজার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।
এ ব্যাপারে কোচ মেরামত প্রধান সপ (উপকারখানা) ক্যারেজ সপের ইনচার্জ প্রকৌশলী দিলশাদ করিম আবু হেনা বলেন, জনবল সংকটের মধ্যেও শ্রমিক কারিগরদের অতিরিক্ত শ্রমে সর্বোচ্চ সংখ্যক বগি মেরামত করা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ৪টি সপে কাজ চলছে সমানতালে।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন বলেন, কারখানায় চরম জনবল সংকট চলছে। এর মধ্যেও শ্রমিক কারিগররা অতিরিক্ত শ্রম দিয়ে বগি (কোচ) মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন। যে গতিতে কাজ হচ্ছে তাতে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্তাবধায়ক (ডিএস) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা ইনকিলাবকে জানান, এ যাবত ৫৫ বগি রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। মেরামত শেষে অবশিষ্ট বগি (কোচ) আগামী ১২ জুনের মধ্যে হস্তান্তর সম্পন্ন হবে বলে জানায় তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন