রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

গ্যারির পর হ্যারি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

গত সোমবার তিউনিসিয়ার জালে দ্বিতীয়বার বল পাঠিয়ে ইংল্যান্ডের হ্যারি কেইন উল্লাস করেন। তিনি সঙ্গ


ভলগোগ্রদের ম্যাচ নিয়ে আগেই স্বতর্ক করেছিল রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রনালয়। বছরের এই সময়টাতে এই অঞ্চলে পতঙ্গের আক্রমণ বেড়ে যায়। যে কারণে পোকা নিরোধক স্প্রেও করেছিল শস্য চাষ বিভাগের কর্মকর্তারা। কিন্তু তা যে খুববেশি যে কাজে আসেনি তা বোঝা গেল ভলগোগ্রাদে অনুষ্ঠেয় প্রথম ম্যাচেই। পরশু এই মাঠেই রাশিয়া বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করে ইংল্যন্ড ও তিউনিশিয়া। ম্যাচের পুরো সময়ে তাদের পতঙ্গের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। বাদ যায়নি গ্যালারির দর্শকও। সবকিছু উপেক্ষা করে শ্বাসরুদ্ধকর জয় ছিনিয়ে নিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে ইংল্যান্ড।
ম্যাচ শেষেও কেইনের আলোচনায় ছিল মাঠে পোকার আক্রমণের বিষয়টি, ‘আমাদের আগেই বলা হয়েছিল মাঠে অনেক পতঙ্গ থাকবে। কিন্তু আমরা যখন গা গরম করছিলাম তখন দেখলাম এটা অনুমানের চেয়েও বেশি। ম্যাচের আগে, বিরতিতে পোকা তাড়ানোর স্প্রে ব্যবহার করা হয়েছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ, কিছু পোকা অপনার চোখে-মুখে ঢুকছিল।’ গ্রæপ পর্বের আরো তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই মাঠে।
তবে ম্যাচ চলাকালে ইংলিশ শিবিরে উঁকি দিচ্ছিল আরেক শঙ্কা। এবারের বিশ্বকাপ শুরুতেই টালমাটাল ফেভারিটদের একের পর এক হোঁচটে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানিতে তো হেরেই গেল। ইংলিশরাও গত ১২ বছর ধরে বড় কোন আসরের প্রথম ম্যাচে জেতেনি। এদিনও তারা একই পথে হাঁটছিল। কিন্তু দলপতি হ্যারি কেইনের ইনজুরি টাইমের গোলে শেষ পর্যন্ত তিউনিশিয়াকে ২-১ গোলে হারাতে সক্ষম হয় ইংলিশরা। প্রথমার্ধে দলকে এগিয়ে নেয়া গোলটিও ছিল কেইনের। এর আগে বিশ্বকাপে ইংলিশদের হয়ে সর্বশেষ ও একমাত্র জোড়া গোল করেছিলেন গ্যারি লিনেকার, ২৮ বছর আগে ১৯৯০ বিশ্বকাপে। মাঠে বসে নিজের রেকর্ডের পাশে কেইনকে বসতে দেখেন লিনেকার। দু’হাত উঁচিয়ে উল্লাসের সঙ্গেই মুহূর্তটা উদযাপন করেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটজয়ী সাবেক তারকা স্ট্রাইকার।
বিশ্বকাপে টানা ১১ ম্যাচ জয়হীন থেকে ভলগোগ্রাদে খেলতে নামে তিউনিশিয়া। বিশ্ব মঞ্চে শেষ আট ম্যাচে মাত্র একটি জয়ের পরিসংখ্যান নিয়ে মাঠে নামে ইংল্যান্ড। শেষ নয় ম্যাচে তো একের অধিক তারা গোলও করতে পারেনি। প্রথমার্ধ ১-১ ড্রয়ের পর তাই গ্যারেথ সাউথগেটের দলের সামনে উঁকি দিচ্ছিল পথ হড়কানোর শঙ্কা। এমন দশা থেকে দলকে উদ্ধার করেন দলপতি নিজেই। ম্যাচের যোগ করা সময়ে দারুণ এক হেডে জয়সূচক গোলটি করেন কেইন। ঘাম ছুটিয়ে যেন জ্বর নেমে যায় ইংলিশ সমর্থকদের দেহ থেকে।
মাঠে পুরোটা সময় ইতিবাচক ফুটবলই খেলেছে সাউথগেটের শিষ্যরা। যে কারণে খুশি ইংলিশ বস, ‘আমরা অনেকগুলো সহজ সুযোগ তৈরী করেছিলাম, বিশেষ করে প্রথমার্ধে। এবং দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটাই আমরা নিংন্ত্রণ করেছি। ভালো দলগুলো শেষ দিকে গোল করে।’
তবে একটা শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে ইংলিশ শিবিরে। ম্যাচের ৮০তম মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন দেলে আলি। রবিবার পানামার বিপক্ষে তার খেলা নিয়ে দেখা দিয়েছে শংশয়। যদিও আলি বলেছেন, ‘আশা করি আমি ঠিক হয়ে যাব।’ টটেনহ্যাম মিডফিল্ডারের পরিবর্তে নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার ফাবিয়ান ডেফ।
শুরু থেকেই এদিন গোছালো ফুটবল খেলতে থাকে ইংল্যান্ড। এর ফলও মেলে ম্যাচের ১১ মিনিটেই। জন স্টোনসের হেড দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন তিউনিশিয়ান গোলকিপার মউজ হাসেন। কিন্তু ফিরতি বল খুব কাছ থেকে সহজে জালে পাঠান কেইন। এর খানিক পরেই ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়েন হাসেন। ৩৫তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরান ফারজানি সাসি। ফখরুদ্দিন বেন ইউসুফকে কনুই দিয়ে আঘাত করেন কাইল ওয়ালকার; যে কারণে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পুরো ম্যাচে একমাত্র হলুদ কার্ড ছিল এটিই। এরপর ম্যাচের পুরো সময় ধরেই একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে যায় ইংলিশরা। উত্তর আফ্রিকার দেশটিও দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে থাকে। এজন্য তাদের শারীরিক ফুটবলের আশ্রয় নিতে হয়নি। পুরো ম্যাচে একটিও হলুদ কার্ডের মুখোমুখি না হওয়া তো সেই প্রমাণ দেয়।
‘জি’ গ্রæপে শনিবার তিউনিশিয়ার বিপক্ষে খেলবে প্রথম ম্যাচে পানামাকে ৩-০ গোলে হারানো বেলজিয়াম। পরের দিন ইংলিশদের প্রতিপক্ষ পানামা। দুটি ম্যাচে টানা জয় পেলে পরের রাউন্ড নিশ্চিত হবে ইংল্যান্ড ও বেলজিয়ামের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
উজ্জল ২০ জুন, ২০১৮, ৪:৪৩ এএম says : 0
মনে হচ্ছে এবারের খেলাগুলো খুব চমকপ্রদ হবে।
Total Reply(0)
Mehedi Hasan ২০ জুন, ২০১৮, ৪:৪৪ এএম says : 0
It was very nice match
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন