শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮

সুখস্মৃতি নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার সামনে মেসি

ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৮, ১০:৪৪ পিএম

একটি তথ্য দিয়ে শুর করা যাক।
২১ জুন, ২০১৪। ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রæপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইরানের মুখোমুখি আর্জেন্টিনা। জিতলেই গ্রæপ পর্ব নিশ্চিত- এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে গোলশূণ্য অবস্থায় চলছে ম্যাচ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পেরিয়ে তখনও প্রতিপক্ষের জালের দেখা পায়নি আলবিসেলেস্তারা। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে (৯০+১) দলের ত্রাতা হয়ে এলেন লিওনেল মেসি। তার চোখ ধাঁধানো এক ফ্রি-কিক গোলেই পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোল নিশ্চিত করে অলেহান্দ্রো সাবেলার দল।
চার বছর পেরিয়ে সেই একই দিন। ২১ জুন ২০১৮। প্রেক্ষাপটও অভিন্ন, বিশ্বকাপ এবং দলের গ্রæপ পর্ব পেরুনোর লড়াই। প্রতিপক্ষ এবার আরো শক্তিশালী- ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলের সেদিনের ত্রাতা আজও কি পারবেন রাশিয়ার নভগ্রোগ্রাদে দলের নায়ক হতে?
মেসির ফুটবল যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস দেখাতে খুব কম লোকই পারবে। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রæপ পর্বে নিজেদের প্রথম লড়াইয়ে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্র ম্যাচে ১১টি শট নিয়েও আর্জেন্টিনাকে জয়সূচক গোল এনে দিতে পারেননি মেসি। শুধু তাই নয়, পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়ে দলকে জয় এনে দেয়ার সবচেয়ে সহজ সুযোগও নষ্ট করেন ফুটবল জাদুকর। আর শঙ্কা যখন গ্রæপ পর্ব থেকে বিদায়ের তখন দলের সবচেয়ে ভরসার কাঁধ যদি থাকে নড়বড়ে, তবে চিন্তার ভাঁজটা মোটা দাগেই দেখা মিলবে বিশ্বজুড়ে লাখো-কোটি আর্জেন্টাইন ভক্তের।
এবার আসি আসল কথায়।
গতবারের রানার্সআপ। ফাইনালে জার্মানির কাছে অতিরিক্ত সময়ের গোলে স্বপ্ন ভঙ্গ আর্জেন্টিনার। সেই সঙ্গে কিংবদন্তী হবার খুব কাছে গিয়েও বঞ্চিত হতে হয়েছিল প্রাণ ভোমরা মেসিকে। ফাইনাল না হলেও হারলেই বিদায় এমন সমীকরণে লিওর সামনে সেই পুরনো প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া।
ইউরোপিয়ান দলটির সঙ্গে আর্জেন্টিনার পরিচয় নতুন নয়। বিশেষ করে মেসি ক্রোয়েশিয়াকে ভালোই মনে রেখেছেন। ২০০৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হলেও প্রথম গোলটির জন্য এক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল মেসিকে। ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক এক প্রীতি ম্যাচে এই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষেই আকাশী-সাদা জার্সি গায়ে নিজের প্রথম গোলটি করেছিলেন নম্বর টেন। সেদিক থেকে আজকের ক্রোয়েশিয়া ম্যাচটি একটু বেশিই স্পেশ্যাল তার কাছে। যদিও সেই ম্যাচে হারতে হয়েছিল মেসির আর্জেন্টিনাকে।
মেসি ছাড়াও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খুবএকটা ভালো স্মৃতি নেই ক্রোয়াটদের। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া ক্রোয়েশিয়াকে ঐ আসরেই মাউরিকো পিনেদার একমাত্র গোলে হারিয়েছিল ম্যারাডোনার উত্তরসূরীরা। দু’দলের প্রথম লড়াইটা হয় ১৯৯৪ সালে। সেবার গোলশূন্য লড়াইয়ে জিতেনি কেউই।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ক্রোয়েশিয়া তাদের একমাত্র জয়টি পায় ২০০৬ সালে। মেসির প্রথম গোলের ম্যাচে ৩-২ গোলে আলবিসেলেস্তাদের হারায় তারা। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ক্রোয়েশিয়াকে ২-১ গোলে পরাজিত করে আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচেও পেনাল্টি থেকে এক গোল করেছিলেন মেসি। পঞ্চম দেখায় এবার সেই গেরো খোলার চেষ্টায় থাকবে কোচ জøাতকো দালিচের দল। তবে বসে থাকবেন না জর্জি সাম্পালিও। এখনো পর্যন্ত যে ১২ টি ম্যাচে আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্ব সামলেছেন সাম্পাওলি, কোনটিতেই আগের ম্যাচের একাদশ সম্পূর্ণ অপরিবর্তিত রেখে মাঠে নামেননি তিনি। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেও সেই ধারা বজায় রাখতে চলেছেন তিনি, তা আগের দিনই জানিয়েছিলেন।
দায়িত্বটা যতটুকু মেসির, ঠিক ততটাই দলের অন্য খেলোয়াড়েরও। মেসির চেষ্টা মেসি করেছেন বলে অনেক ফুটবল বোদ্ধাই পাশে থেকেছেন বার্সা তারকার। তারপরও রাশিয়ায় অমন বাজে শুরুর কারণ খুঁজে পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফেডারেশন ও কোচ কর্মকর্তারা। আইসল্যান্ডের সাথে ম্যাচে মন ভরাতে পারেনি পুরো আর্জেন্টিনা দলের খেলাই। নিষ্প্রভ ছিলেন দলের বেশিরভাগ তারকা ফুটবলার। তবে তার মধ্যেও আলাদা করে তিনজনের খেলা বেশি হতাশাজনক ছিল- মার্কোস রোহো, লুকাস বিলিয়া ও অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া। সবশেষ খবর অনুযায়ী, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে দলের ট্যাকটিকস নতুন করে সাজানোর কথা ভাবছেন কোচ হোর্হে সাম্পাওলি। আর নতুন সেই ট্যাকটিকসে সম্ভবত জায়গা হচ্ছে না এই তিনজনের। তাদের জায়গায় আসতে পারেন গ্যাব্রিয়েল মার্কাদো, লেফট উইং মার্কোস আকুনা এবং ক্রিশ্চিয়ান পাভন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন