রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সালাহদের স্বপ্নভঙ্গের বেদনা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশ্বকাপ অভিষেকে গোল করেও মিসরকে উদ্ধার করতে পারেননি মোহাম্মদ সালাহ -ইন্টারনেট


চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে সেই রামোস কান্ডের তিন সপ্তাহ তিন দিন পর মাঠে ফিরলেন মোহাম্মদ সালাহ। বিশ্বকাপ অভিষেকে গোলও করলেন। কিন্তু তাতে ভক্তদের প্রত্যাশা মিটলো কই। বিশ্বকাপ স্বাগতিক রাশিয়ার কাছে ৩-১ গোলে হেরে যাওয়ায় আসর থেকে বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে সালাহ’র মিশরের। অপরদিকে গ্রæপ পর্বে টানা দুই জয়ে সবার আগে শেষ ষোলর সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে রাশিয়া। গত রাতে সউদী আরবের কাছে উরুগুয়ে না হেরে থাকলে হিসাবটা মিলে যাবে।
সেন্ট পিটার্সবার্গে পরশু গ্রæপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শুরু থেকেই একাদশে ছিলেন সালাহ। যদিও তিনি শতভাগ ফিট ছিলেন কিনা তাও বড় একটা প্রশ্ন। সে যাই হোক, লিভারপুলের সেই জাদুকরী সালাহকে কিন্তু এদিন পাওয়া যায়নি। এরপরও দল যে চেষ্টাটুকু করেছে তা রচিত হয়েছিল ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে কেন্দ্র করেই। একটি পেনাল্টি জিতেছিলেন। বাঁ-পায়ের দারুণ শটে তা থেকে গোলও করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই যে যা করার করে ফেলেছিল রাশিয়া।
ম্যাচ শেষে সালাহর ফিটনেস নিয়ে কথা বলেন মিশরিয় কোচ হেক্টর কুপার, ‘কেউই দলে সালাহ’র গুরুত্ব নিয়ে তর্ক করবে না। সে ইনজুরিতে থাকার পর থেকেই আমরা চিন্তিত ছিলাম। ট্রেনিং ক্যাম্পে তাকে পাওয়া আমাদের জন্য সুখবর ছিল। কিন্তু আমরা তাকে সেভাবে পায়নি কারণ তার ফিটনেসের দিকে আমাদের নজর দিতে হয়েছে।’ কুপার বলেন, ‘যদি তার শতভাগ ফিটের ব্যাপারে কথা বলতে হয় তাহলে মেডিকেল টিমের সঙ্গে কথা কলতে হবে।’ সালাহ বন্দনা বাদ দিয়ে ম্যাচের দিকে তাকালে কেবল রাশিয়ার প্রশংসাই করতে হয়। বিশেষ করে ৬২ মিনিটে তিন গোলে এগিয়ে যারওয়ার আগ পর্যন্ত। দারুণ গতিশীল ফুটবলে স্বাগতিক দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন স্তানি¯øাভ চেরচেসভের শিষ্যরা। এরপরই রক্ষনাত্মক কৌশল অবলম্বন করে তারা। যদিও গোলের জন্য তাদের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর এই অংশকেই পরাজয়ের কারণ হিসেবে ব্যখ্যা করেন কুপার, ‘প্রথমার্ধটা আমাদের জন্য ভালো ছিল কিন্তু এরপর আমাদের জন্য ১০-১৫ মিনিট ছিল খুবই বাজে তাতেই আমরা হেরে গেছি। আমরা ঠিকমত রক্ষণ সামলাতে পারিনি।’ এজন্য অবশ্য তিনি কাউকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন না, ‘আমি মনে করি না এটা মনোযোগের অভাবের কারণে ঘটেছে। বিশ্বকাপের মত জায়গায় কেউই এমনটা করে না। কিছু ভুল এমনিতেই হয়েই যায়।’
মিসর বল দখলে এগিয়ে থাকলেও প্রতিপক্ষে ডি বক্সে এসে খেই হারিয়ে ফেলে বার বার। সালাহ’র পেনাল্টি শটই ছিল রাশিয়ার পোস্টে রাখা তাদের একমাত্র শট। তাদের কৃতিত্ব বলতে প্রথমার্ধে স্বাগতিকদের অনেকগুলো আক্রমণ ভন্ডুল করে দেয়া। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আর রাশিয়াকে আটকানো সম্ভব হয়নি। পথটা অবশ্য মিশরই বাতলে দেয়। ৪৭তম মিনিটে গোলোভিনের ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে বল নিজেদের জালে পাঠিয়ে দেন আহমেদ ফাতহি। চলতি আসরে যা ছিল পঞ্চম আত্মঘাতি গোল। এরপর তিন মিনিটের এক ঝড়ে শেষ ষোলর স্বপ্ন চূর হয়ে যায় মিশরের। মারিও ফার্নান্দেসের ক্রস অরক্ষিত দেনিস চেরিশেভকে খুঁজে নেয়। তা জালে পাঠাতে ভুল করেননি ভিয়ারিয়াল মিডফিল্ডার। চলতি আসরে এটি তার তৃতীয় গোল, পর্তুগিজ তারকা রোলদোর সঙ্গে যা যৌথ সর্বোচ্চ। এর তিন মিনিট পর আসরে নিজের দ্বিতীয় গোলের মাধ্যমে ব্যবধান ৩-০ করে দেন জুবা।
৭৩তম মিনিটে ডি বক্সে ফাউলের শিকার হন সালাহ। প্রযুক্তির সহায়তায় পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। ঠান্ডা মাথায় সফল শট নেন সালাহ নিজেই। মিশরের নিভু নিভু আশার সলতেটা তখন কিছুটা প্রাণ ফিরে পায়। কিন্তু ঐটুকুই। বাকি সময়ে নিজেদের উজাড় করে দিয়েও আর গোলের দেখা পায়নি মিশর। এসময় আক্রমণ বাদ দিয়ে নিজেদের রক্ষণ নিয়েই ব্যস্ত থাকে রাশিয়া।
র‌্যাঙ্কিংয়ে সবার নিচে (৭০) থেকে বিশ্বকাপ শুরু করা রাশিয়া প্রথম ম্যাচে সউদী আরবকে হারায় ৫-০ গোলে। পরের দিন উরুগুয়ের কাছে শেষ সময়ের একমাত্র গোলে হেরে যায় সালাহহীন মিসর।
আগামী সোমবার গ্রæপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে খেলবে রাশিয়া। একই দিন ‘এ’ গ্রæপের শেষ ম্যাচে সউদী আরবের মুখোমুখি হবে মিশর। আগেই বিদায় নিশ্চিত হওয়ায় ম্যাচটি কেবল সালাহদের জন্য নিয়ম রক্ষার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
কাজল ২১ জুন, ২০১৮, ৭:০০ এএম says : 0
খুব খারাপ লাগলো
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন