মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহ.
কাব্যানুবাদ : রূহুল আমীন খান
৮০৫. পহেলা শা’ করেছিল যে রূপ যুলুম অত্যাচার
দোস্রা শা’ও অত্যাচারে অনুকরণ করল তার।
৮০৬. ঘৃণিত ও মন্দ কাজের করে যেজন প্রচলন
ঘৃণা ও শাপ তার ওপরে বর্ষিত হয় সর্বক্ষণ।
৮০৭. সৎলোকেরা চালু করে গেছেন ধরায় পুণ্য কাজ
তাদের সে সব পুণ্য প্রথা জারী আছে বিশ্বমাঝ।
৮০৮. অসৎ মানুষ করে গেছে যুলুম-সিতম১ মন্দচয়
তাদের সে সব কু-প্রথাও চালু আছে জগৎময়।
৮০৯. উৎস যাদের মন্দ অসৎ, জন্ম যাদের মন্দটায়
মন্দ পানেই ইচ্ছা-খেয়াল, রাগ-অনুরাগ তাদের ধায়।
৮১০. মিষ্টি পানির, লবন পানির দুই বিপরীত জল ধারা
তা-কিয়ামত২ থাকবে জারি অন্যথা এর হইবেনা।
৮১১. সুপেয় সেই মিঠে পানির মিরাস৩ মোমিন-নেককারের
দলীলÑ ‘আওরাসনাল কিতাব’* এ পাক আয়াত কুরআনের।
৮১২. সাধক-তাপস পানে তাকাও দেখবে তুমি মধ্যে তার
রতন-মনির আলোক-ছটা মহামহিম আম্বিয়ার।
৮১৩. রতœ-জ্যোতি রতœ সাথে বেড়ায় ঘুরে সর্বদায়
যেদিক থাকে রতন-মনি জ্যোতিও ঠিক সে দিক যায়।
৮১৪. জান্লাতে যে আলো আসে এক খানে তা রয়না ঠিক
রবির সাথে ঘরের মাঝে এদিক থেকে যায় সে দিক।
৮১৫. ওই যে দ্যাখো সুদূর নভে গ্রহরাজির সন্তরণ
ওর ভেতরে যে যার জাতক তার আচরণ সেই মতন।
৮১৬. রাশির মাঝে নিয়ন্ত্রণের গ্রহ যাদের শুক্র হয়
সেই জাতকের ঝোঁক শতত ভালবাসা প্রেম-প্রণয়।
৮১৭. দ্বাদশ রাশির মধ্যে যারা জাতক রাশি মঙ্গলের
দাঙ্গা-লড়াই, ঝগড়া-ফাসাদ প্রবনতা হয় তাদের।
৮১৮. তারায় ভরা সপ্ত আকাশÑ যার অবয়ব দৃশ্যমান
এর বাহিরে ভিন্ন আরেক আকাশ আছে বিদ্যমান।
৮১৯. অতিন্দ্রিয় সেই আকাশের গ্রহ-তারার ভিন্ন শান
তাদের মাঝে নেই কোনই অশুভ ও অকল্যাণ।
৮২০. ওই আকাশের গ্রহ-তারা খোদার জ্যোতে জ্যোতির্ময়
অটল তারা, পরস্পরে ভিন্ন বা অভিন্ন নয়।
৮২১. ওই তারাদের জাতকগণের বল-ক্ষমতার নেইকো তুল
নিক্ষেপিলে লোষ্ট্র তারা বিধ্বংস হয় কাফের কুল।
৮২২. রোষের প্রকাশ নয়কো তাদের জাতক সম মঙ্গলের
কোমলতার অন্তরালে তেজ ভয়ানক সেই কোষের।
৮২৩. ওলীর জ্যোতি প্রখর অতি, রশ্মি তাহার হয় না ¤øান
খোদার নূরের দু’অঙ্গুলির মাঝখানে তার অবস্থান।
৮২৪. অঝোর ধারায় ঝরাণ খোদা, করেন হৃদে সে নূর দান
কুড়ায় যে তা’ জড়ায় বুকে সে জন মহাভাগ্যবান।
৮২৫. আউলিয়াগণ লাভ করেছেন সেই খোদায়ী দীপ্র নূর
করে দিছেন আল্লা’ ছাড়া হৃদয় থেকে সকল দূর।
৮২৬. যার হৃদয়ে প্রেমের আবেগ, দহন-পীড়ন, তলব নেই
অঝোর ধারে ঝরলেও নূর পাবেনা সে কিচ্ছুতেই।
৮২৭. অংশ সদা হয় ধাবিত অভিমুখে সমগ্রের
বুলবুলিরা উড়ে চলে অভিমুখে গুলবাগের।
৮২৮. গাত্র রঙেই যায়গো চিনা পশুÑ গরু-বাছুরদের
নয়কো দেহের, মনের রঙেই হয় পরিচয় ইনসানের।
৮২৯. হয় শুভ রঙ উৎসারিত উৎস থেকে স্বচ্ছতার
দূষিত জল বয়ে আসে ময়লা থেকে নর্দমার।
৮৩০. ‘সিবগাতুল্লা’* সেই শুভ রঙ, খোদায়ী সে রঙ চমৎকার
শয়তানী বদ স্বভাব ’পরে সদা অভিশাপ খোদার।
৮৩১. সাগর থেকে আসে যে জল সাগরে তা যায় আবার
যার আগমন যেখান থেকে, প্রত্যাগমন সেথায় তার।
৮৩২. গিরি-শিখর হতে পানি সাগর পানে ধায় যেমন
ধায় তেমনি মিলন আশে খোদার পানে আশিক মন।
৮৩৩. য়াহুদী বাদশার অগ্নিকুন্ড নির্মাণ, প্রতীমা স্থাপন ও
মুমিনদের অগ্নিতে নিক্ষেপের কাহিনী
৮৩৪. ওই য়াহুদী দোস্রা শা’, ওই যালিম পামর কুকুরটা
অনল কুন্ড বানিয়ে পাশে বানাল এক প্রতিমা।
৮৩৫. রক্ষা পাবে কেবল যে জন সিজদা দিবে মূর্তিটায়
সিজদা যে জন করবেনা তায় অগ্নি মাঝে ফেলবে ঠায়।
৮৩৬. নফ্স মুরত করেনি দূর, কেবল পূজা করছে তার
সেই মুরতই প্রকাশ পেল সুরত ধরে প্রতিমার।
৮৩৭. ‘নফ্স মাতা, শাবক তাহার দৃষ্ট সকল প্রতিমা
প্রতিমা সাপ, নফস হলো ভয়াল ভীষণ আসদাহা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন