বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি আরও কমেছে। গত কয়েক মাসের ধারাবাহিকতায় প্রবৃদ্ধি কমে মে শেষে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৬০ শতাংশে। আগের মাস এপ্রিল শেষে যা ছিল ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। সা¤প্রতিক সময়ে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি ঋণ প্রবৃদ্ধি হয় গত বছরের নভেম্বরে। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কয়েক বছর ধরে আশানুরূপ ঋণ চাহিদা না থাকায় অধিকাংশ ব্যাংকের কাছে প্রচুর উদ্বৃত্ত তারল্য ছিল। আমদানি বৃদ্ধিসহ কিছু কারণে গত জুনের পর হঠাৎ করে ঋণ চাহিদা ব্যাপক বাড়তে থাকায় তারল্যের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়। এতে করে এক অঙ্কের নিচে নেমে আসা ঋণের সুদহার আবার দুই অঙ্কে উঠে যায়। অনেক ব্যাংক ১০ শতাংশ বা তার বেশি সুদে মেয়াদি আমানত নিতে শুরু করে। এ রকম পরিস্থিতিতে গত ৩০ জানুয়ারি ব্যাংকগুলোর ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে একটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে ৮৩ টাকা ৫০ পয়সা এবং ইসলামী ব্যাংকগুলোর ৮৯ টাকা ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়। আগে যা ৮৫ ও ৯০ টাকা ছিল। এরপর সুদহার বাড়তে থাকে।
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সুদহার কমানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। সুদহার কমানোর লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর সিআরআর সংরক্ষণের হার সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ করা হয়। সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। এরপরও সুদহার না কমায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স¤প্রতি ব্যাংকের উদ্যোক্তারা বসে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ এবং ৬ শতাংশ সুদে তিন মাস মেয়াদি আমানত নেওয়ার ঘোষণা দেয়। যদিও অনেক ব্যাংক এখনও তা কার্যকর করেনি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং কাক্সিক্ষত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বাজারে কি পরিমাণ টাকা ছাড়া হবে তার একটি ধারণা দিতে প্রতি ৬ মাসের আগাম মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত জানুয়ারিতে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে চলতি বছরের জুনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয় ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে, গত মে পর্যন্ত বেসরকারি খাতে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৯২ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। আগের বছরের মে শেষে যা ছিল ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। এতে এক বছরে ঋণ বেড়েছে এক লাখ ৩৩ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা বা ১৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত মার্চ শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তার আগের মাস ফেব্রæয়ারি শেষে ছিল ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন