শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

ব্রহ্মপুত্রে ব্যাপক ভাঙন

গাইবান্ধা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় কামারজানিতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিলেও যুবতী মেয়েদের নিয়ে পড়েছেন বিড়ম্বনায়। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি অল্পমূল্যে বিক্রি করতে পারলেও ঘরবাড়ির আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়ার আগেই ভিটেবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন নদী পাড়ের মানুষগুলো।
শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী কামারজানি বন্দরের ১০০ গজ উত্তরে গোঘাট গ্রাম। আর এই গ্রামটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য বসতবাড়ি। আর এসব বসতবাড়িতে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। অথচ গ্রামটিকে রক্ষার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি স্থানীয় প্রশাসন। শুধু তাই নয়, নদীভাঙন দেখার কথা যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তারাও সঠিক তদারকি করেন না। ফলে গ্রামটি গিলে ফেলেছে ব্রহ্মপুত্র। এখন যেসব বসতবাড়ি রয়েছে, তারাও অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করছেন। কেউ বা বসতবাড়ির গাছ কাঁটছেন, কেউ বা টিনের ছাউনি খুলছেন। অনেকে আবার শেষ সম্বল ঘরটি যত্মসহকারে সরিয়ে নিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করছেন।
কামারজানি ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন জানান, গত তিন বছর আগেও গ্রামটিতে ছিল প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। সন্তানদের শিক্ষার জন্য ছিল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নামাজ পড়ার জন্য ছিল মসজিদ, প্রার্থনার জন্য ছিল মন্দির। এ ছাড়া প্রতি বছর গ্রামটিতে আয়োজন করা হতো বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান। কতই না আনন্দের ছিল গ্রামটি, কিন্তু এখন সেটি ব্রহ্মপুত্রের অভিশাপে নির্জীব।
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করেন, শুষ্ক মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। নদীতে পানি এলেই তারা বালুর বস্তা ফেলে নদীভাঙন রোধে দায়সারা কাজ করে, আর আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই যাচ্ছে। তারা আরো অভিযোগ করেন, যেখানে এক হাজার বালুর বস্তা ফেলা দরকার, সেখানে তারা এক থেকে দুই শ’ বালুর বস্তা ফেলেই কাগজকলমে এক হাজার লিখেই রাখছেন। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার সেসব জায়গা ভেঙে গিয়ে বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল জানান, যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে দ্রæত ব্যবস্থা না নিলে সম্পূর্ণ গোঘাট গ্রাম বিলীন হয়ে যাবে। সেই সাথে নতুন নতুন এলাকা বিলীন হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, কামারজানির নদীভাঙন রোধে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এখনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তবে ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন