মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছে ক্রোয়েশিয়া। প্রথম সেমি ফাইনালে বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ফ্রান্স। আগামী ১৫ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় লুঝনিকি স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ে নামবে ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া।
তার আগের দিন এই বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো মুখোমুখি হবে সেমিতে হেরে যাওয়া ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম। গ্রæপ পর্বেও এই দুটি দেশ মুখোমুখি হয়েছিল। সে ম্যাচে ইংলিশদের ১-০ গোলে হারিয়ে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বেলজিয়াম। আগামী ১৪ জুলাই সেইন্ট পিটার্সবার্গে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম।
দ্বিতীয় সেমিতে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। পিছিয়ে পড়েও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ১৯৯১ সালে স্বাধীন হওয়া ক্রোয়েশিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরার পর অতিরিক্ত সময়ের গোলে জয় নিশ্চিত করে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলটি। সেবার চমক দেখিয়েই সেমিতে উঠেছিল ক্রোয়াটরা। ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জিতেছিল স্বাগতিক ফ্রান্স। এই ফ্রান্সের কাছে সেবার সেমিতে ৪৬ মিনিটে ডেভর সুকারের গোলে লিড নিলেও ম্যাচের ৪৭ ও ৬৯ মিনিটে ফরাসি কিংবদন্তি লিলিয়ান থুরামের জোড়া গোলে হারতে হয় ক্রোয়াটদের। এবার সেই ফ্রান্সের বিপক্ষেই শিরোপার জন্য লড়বে প্রথমবার ফাইনালে উঠা ক্রোয়েশিয়া।
গ্রæপ পর্বে দুর্দান্ত ছিল ক্রোয়েশিয়া। নাইজেরিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ মিশন শুরু। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর আইসল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারায় ক্রোয়েটরা। শেষ ষোলোতে ডেনমার্কের বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ে ১-১ ড্র থাকা ম্যাচটি টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে নেয় গোলরক্ষক সুবাসিচ বীরত্বে। কোয়ার্টার-ফাইনালেও সেই একই ভাগ্য, স্বাগতিক রাশিয়ার সঙ্গে ২ গোলে পিছিয়ে থেকে সমতায় ফেরা, সেখান থেকে টাইব্রেকারে ৪-৩ এর জয়। আর সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে নির্ধারিত সময়ে পিছিয়ে পড়েও ১-১ এ রুখে দিয়ে অতিরিক্ত সময়ে ২-১ এ জিতে প্রথমবারের মত স্বপ্নের ফাইনালে নাম লেখানো দলটি ক্রোয়েশিয়া।
ইতিহাস গড়া এই দলটির প্রতিপক্ষ যারা সেই ফ্রান্সের এবারের ফাইনালে ওঠার সিঁড়িটিও খুব একটা সহজ ছিলনা। গ্রæপ ‘সি’র প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে শুরু করা দলটি পেরুকে হারাতেই ঘাম ঝরেছে (১-০)। শেষ ম্যাচেতো ডেনমার্কের সঙ্গে গোলশূণ্য ড্র’ই করে ফেলে এমবাপে-গ্রিজমানরা। রাশিয়া বিশ্বকাপে গোলশূণ্য ড্র’র ম্যাচ ঐ একটিই! রাউন্ড অব সিক্সটিনে ফেভারিট আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ গোলে বিদায় করা ম্যাচটি সর্বোচ্চ গোলের ম্যাচ। যদিও পরে পানামাকে ৬-১ গোলে হারানো ইংল্যান্ডও পেয়েছে একই ব্যবধানের ম্যাচ। কোয়ার্টার ফাইনালে উড়তে থাকা উরুগুয়েকে মাটিতে নামানো ফ্রান্সের জয়টি ২-০ গোলের। আর সেমিফাইনালে নতুন প্রজন্মের বেলজিয়ামের বিপক্ষে দিদিয়ের দেশমের দলটির জয় ১-০ ব্যবধানে।

শেষ পথটুকু পাড়ি দিয়ে কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছুতে পারবে কে সেটি আজ রাতেই জানা যাবে।
যেভাবে ফাইনালে
ফ্রান্স
প্রতিপক্ষ ব্যবধান
গ্রæপ পর্ব
অস্ট্রেলিয়া ২-১ গোলে জয়ী
পেরু ১-০ গোলে জয়ী
ডেনমার্ক ০-০ গোলশূণ্য ড্র
শেষ ষোল
আর্জেন্টিনা ৪-৩ গোলে জয়ী
কো.ফাইনাল
উরুগুয়ে ২-০ গোলে জয়ী
সেমিফাইনাল
বেলজিয়াম ১-০ গোলে জয়ী

ক্রোয়েশিয়া
প্রতিপক্ষ ব্যবধান
গ্রæপ পর্ব
নাইজেরিয়া ২-০তে গোলে জীয়
আর্জেন্টিনা ৩-০ গোলে জয়ী
আইসল্যান্ড ২-১ গোলে জয়ী
শেষ ষোল
ডেনমার্ক ১-১ ড্র, টাইব্রেকারে ৩-২ এ জয়ী
কো.ফাইনাল
রাশিয়া ১-১ ড্র, টাইব্রেকারে ৪-৩ এ জয়ী
সেমিফাইনাল
ইংল্যান্ড ১-১- ড্র, অতিরিক্ত সময়ে ২-১ এ জয়ী