ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় নদী ভাঙনের কবলে বিলীন হবার পথে প্রায় দেড়শ বছরের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের অলহরী নদীর তীরবর্তী এলাকায় ধুরধুরিয়া আলিম মাদরাসা নদী ভাঙনের কবলে পড়ে প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ জায়গাই এখন দিনে দিনে বিলিন হবার পাশাপাশি শ্রেনী কক্ষে স্থান সংকুলন না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির ৭৩৭ জন শিক্ষার্থী। তাই শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ স্থানীয়রা বহুতল ভবন নির্মানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
সরেজমিনে ধুরধুরিয়া আলিম মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, একটি ঝুকিপূর্ন টিনসেট ঘরে কোন মতে শিক্ষার্থীদের চলছে পাঠদান যা যেকোন মুহূর্ত্বে নদী গর্ভে বিনীন হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও একটু বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ে আসার রাস্তায় পানি উঠে যায় বলে মাদরাসায় আসতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মাদরাসার খরচে বেশ কিছু মাটির বস্তা এবং বাঁশের খুটি দিয়ে কোন মতে বাধ দেবার ব্যবস্থা করা হলেও তা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গেছে ইতোমধ্যেই।
এ সময় নবম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী ছোলায়মান বলেন, আমাদের মাদরাসাটি অনেক পুরানো প্রতিষ্ঠান। এই মাদরাসাকে জড়িয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা স্মৃতি। ভালো ফলাফলের জন্য উপজেলায় সুনাম কুড়িয়েছে মাদরাসাটি। কিন্তু আমাদের ক্লাসের জায়গার স্থান খুব কম থাকার কারনে আমাদের ক্লাস এবং পরীক্ষা দেয়া অসুবিধা হয়।
১৮৮৬ সালে স্থাপিত প্রায় ১৩২ বছরের প্রচীন এই মাদরাসাটিতে বর্তমানে ২২জন শিক্ষকসহ ৭৩৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত আছে।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ বলেন, যুদ্ধকালীন সময়ে এই মাদরাসায় সকল মুক্তিযোদ্ধারা একত্রে মিলিত হতাম। আমাদের সহযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন মুক্তিযুদ্ধকালে মারা গেলে মাদরাসার দক্ষিন পাশে তাকে দাফন করা হয়। পাকবাহানীরা মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খবর পেয়ে মাদরাসায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।
ফুলবাড়িয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাছরিন আক্তার বলেন, চলতি মাসের প্রথম তারিখে মাদরাসার নবীন বরন অনুষ্ঠানে গিয়ে বিষয়টি দেখেছি, ভাঙনের ব্যপারে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন