‘মোরা বাবা কাম না করলে খামু কি? কেউ তো মোগো লইগা খাওন বাড়ি লইয়া আয় না। বেয়ান হইতে রাইত পর্যন্ত হগোল দোহানে পানি দিয়া যে ট্যাহা পাই ওইয়া দিয়া চাউল কিনি, ওইতেই মোর সংসার চলে।’ এ কথাগুলো বলছিলেন বেতাগী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সূর্যবানু বেগম। বর্ষার সময়ও বিষ্টিতে ভিজে ও প্রচÐ রোদ উপেক্ষা করে অত্যন্ত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন দোকানে পানি দিয়ে সূর্যবানু’র সংসার চলে।
কখনও সকালের খাবার দুপুরে, আবার দুপুরের খাবার রাতে খেতে হয়। ৯ বছর আগে স্বামী আব্দুস ছোমেদ মারা যায়। সূর্যবানুর স্বামী আব্দুস ছোমেদ মারা যাওয়ার পূর্বে থেকেই কোন কাজ করতে না পারায় সংসারের উর্পাজনের পথ বেছে নেন তিনি। প্রথমে ঝিঁয়ের কাজ করে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করত। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৩ জন। ছেলে শাহীন (২১) মাত্র ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত এবং মেয়ে মুন্নি (১৯) ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার সুযোগ পায়। স্বামীর মৃত্যুর পর তার সংসারে টানাপোড়েন পরলে শাহীন ও মুন্নিও উপার্জনের জন্য পথ বেছে নিতে হয়।
সূর্যবানু বেগম সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডের বিভিন্ন চায়ের দোকানে কলসি দিয়ে পানি দেয়। দোকানের চাহিদা অনুযায়ী কোন দোকানে টিউবওয়েলের পানি আবার কারো দোকানে রান্নার জন্য খালের পানি দিতে হয়। এ থেকে তিনি কোন দিন ১৫০ টাকা, কোন দিন ২৫০ টাকা আয় করেন। ওই কষ্টার্জিত উর্পাজনের টাকা দিয়েই চলে তার সংসার। শারীরিক বিভিন্ন রোগ-শোকের কারণে এবং বিরামহীন কাজ করতে করতে তার বয়স দেখলে মনে হবে বুড়ির মতো হয়। সুর্যবানু বলেন, মুই এ্যহন আর আগের মতো কাম করতে পারি না।’ এ ব্যাপারে বেতাগী পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা প্রায়ই পৌরসভা থেকে তাকে আর্থিক সহযোগিতা করে থাকি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন