শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পাহাড়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি

রামগড় থেকে রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

পার্বত্যাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রে শহরের সাথে তালমিলিয়ে বিভিন্ন বাজার-সড়কের ফুটপাত ও বিভিন্ন স্কুল, কলেজের সামনে জমে উঠেছে মানহীন অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের দোকান। এসব অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খেয়ে সাধারন পথচারী থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরাও দিন দিন নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শহরের পথে ঘাটে, স্কুল, কলেজ গুলোতে পথের সামনে দাঁড়িয়ে হকারদের বিক্রিত খাবার গুলো অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশ, মানহীন অবস্থায় পরিবেশন করা হলেও এটি বন্ধে নেই কোন কার্যকরী প্রদক্ষেপ।
ফুটপাতের ধারে খোলা অবস্থায় দাঁড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ১-২ দিন আগে তৈরীকৃত ফুসকা, চটপটি, টিক্কা, সমুচা, সিংগারা, আলুর চপ, পুরি, পিয়াজু, ঝাঁলমুড়িসহ হরেক রকমের বিরিয়ানি। মূল সড়কের পাশে ভেন গাড়িতে এইসব খাদ্য বিক্রি করলেও খাবারগুলো ঢেকে রাখার জন্যও কোন সচেতনতাবোধ হকারদের মধ্যে দেখা যায়না। এ বিযয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসকগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পথে বসা হকারদের বিক্রিত করা খাবার খেয়ে পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয়, বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ, কৃমি হওয়া, যকৃতের সমস্যা, ক্ষুদামন্দা, জন্ডিস ও হেপাটাইটিস-এ রোগে আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে বহুদিন যাবত এ ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে শিশুদের অপুষ্টি ও যকৃতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য পরামর্শকরা শিশুদেরকে বাহিরের অস্বাস্থকর খাদ্য না দিয়ে স্বাদ রুচিকে প্রাধান্য দিয়ে ঘরে বানানো ফাস্টফুড, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি খাবার তৈরী করে বাচ্চাদেরকে ঘরমুখি খাবারের প্রতি আকৃষ্ট করা একান্তই প্রয়োজন বলে জানান।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, খাবারে ভেজালের চেয়ে দূষণটা অনেক বেশি হয়। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি আরো জানায়, বিভিন্ন কারণে খাদ্যে দূষণ ক্রমেই বাড়ছে। খাবার উৎপাদন ও সংরক্ষণে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য (যেমন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ফরমালিন, সোডিয়াম সাইক্লামেট), কীটনাশক (যেমন, ডিডিটি, পিসিবি তেল ইত্যাদি), রঞ্জক বা সুগন্ধি, তেজস্ক্রিয় বা ভারি ধাতুর ব্যবহার, ভেজাল মিশ্রণ, নিম্নমানের খাবার উৎপাদন, ক্ষতিকর প্রক্রিয়ায় উৎপাদন, ক্ষতিকর কীটনাশক বা অনুজীবের ব্যবহার, খাবারে পচন, ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্তদের দ্বারা পরিবহন ও পরিবেশন, কাঁচা-পচা ও রান্না করা খাবার এক স্থানে রাখা, খোলা খাবারে মাছি ও কীটপতঙ্গ দ্বারা জীবাণুর বিস্তার, হাঁচি-কাশি-অপরিচ্ছন্ন হাতের ছোঁয়া, নির্ধারিত তাপমাত্রায় না রাখা ইত্যাদি কারণে খাবার দূষিত হচ্ছে। এই দূষণ থেকে সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ। এসব দূষণের সিংহভাগই হচ্ছে অসচেতনতা ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে। মানুষের সচেতনতার মাধ্যমে তা অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটি।
গত ১০ সেপ্টেম্বর উপজেলা আইনশৃংঙ্খলা সভায় রামগড় পৌর বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক মো: শাহআলম ও সাংবাদিকরা বিষয়টি নজরে আনলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এটিএম মোর্শেদ বলেন, খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ভ্রাম্যমান আদালত বাজারের স্থায়ী দোকানগুলিতে ভেজাল খাবারের বিভিন্ন দোকান ও রেস্তোরায় জরিমানা করে থাকেন। কিন্তু ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে একেবারে দেখা যায়না। জনস্বার্থে ভ্রাম্যমান আদালত ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে আরো বিশেষ নজরদারী বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসীসহ সচেতন মহল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন