শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হাতিরঝিলে মশার যন্ত্রণা

সায়ীদ আবদুল মালিক | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:৩৭ এএম

দৃষ্টিদন্দন হাতিরঝিলের পরিবেশ এখন বিপর্যয়ের মুখে। ঝিলের পানিতে ভাসছে ময়লা আবর্জনা। পঁচা পানির দুর্গন্ধে দর্শনার্থী ও পথচারীরা নাকে রুমাল চেপে ঝিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হচ্ছে। অন্যদিকে মশার যন্ত্রণায় হাতিরঝিলে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরাসহ এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। মশার কারণে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া আতঙ্কে কাটছে এলাকাবাসীর দিন। এদিকে পানি দুর্গন্ধমুক্ত করতে অর্ধ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিলেও এগুলোকে লোক দেখানো বলে মনে করছেন হাতিরঝিল উন্নয়ন প্রকল্পের মূল পরিকল্পনাকারী।
হাতিরঝিলের পানি ময়লা আবর্জনা মিশে দুগন্ধময় হয়ে গেছে। ঝিলের পানিতে ভাসছে ময়লা-আবর্জনা আর বিভিন্ন স্থানে জড়ো করে রাখা হয়েছে ময়লার স্তূপ। এ সমস্ত ময়লায় জন্ম নেয়া মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ দর্শনার্থী ও এলাকাবাসী। হাতিরঝিল এলাকার মহানগর আবাসিক প্রকল্পের বাসিন্দা সাইফুজ্জামান রাকিব বলেন, হাতিরঝিল এখন আর হাতিরঝিল নেই এটা মশারঝিল হয়ে গেছে।
সরজমিনে গতকাল সোমবার সোনারগাঁও হোটেলের পিছনের হাতিরঝিলের অংশ থেকে হাতিরঝিল প্রজেক্ট, রামপুরা ব্র্রিজ হয়ে মেরাদিয়া পর্যন্ত ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। এই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের নেই কোন উদ্যোগ। এ ময়লা আবর্জনায় জন্ম নেয়া মশার যন্ত্রণায় পুরা হাতিরঝিলের আশেপাশের এলাকার তেজগাও, গুলশান, রামপুরা, দিলু রোড়, মহানগর আবাসিক এলাকা, আফতাব নগার ও মেরাদিয়ার মানুষ অতিষ্ঠ। মশার যন্ত্রণায় দিনের বেলাতেও কোথাও স্বস্তিতে স্থির হয়ে বসতে পারে না ওই সমস্ত এলাকার মানুষ। দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টাই মশার যন্ত্রণায় রয়েছে ওই এলাকাবাসী।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ জাকির হাসান ইনকিলাবকে বলেন, ঝিল পরিষ্কারের জন্য কর্পোরেশনের আলাদা বাজেট নেই, তাছাড়া এগুলো পরিষ্কারের দায়িত্বও সিটি কর্পোরেশনের নয়। পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এ কাজে রয়েছে নানা আইনি জটিলতাও। যে কারণে খুব সহজেই আমরা রাজধানীর ঝিলগুলো থেকে ময়লা আবর্জনা ও কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজে হাত দিতে পারি না।
শহরের কোলাহলের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে গড়ে ওঠা ঢাকাবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হাতিরঝিলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে রক্ষণা বেক্ষণের অভাবে। গুলশান লেক, কারওয়ান বাজার ও বেগুনবাড়ী দিয়ে হাতিরঝিলের পানিতে প্রতিনিয়ত ময়লা-আবর্জনা ঢুকছে। দর্শনার্থী ও পথচারীরাও ঝিলের পানিতে ময়লা আবর্জনা ফেলে পানিকে দূষিত করছেন। দর্শনার্থীদের ফেলা কাগজের টুকরা, পলিথিন, খাবারের বক্সসহ অন্যান্য ময়লা-আবর্জনার কারণে দূষিত হচ্ছে ঝিলের পানি। অনেক দর্শনার্থী ঝিলের রাস্তার ও ব্রিজের পাশে মলত্যাগও করছেন, যা পুরো এলাকার পরিবেশকে দূষিত করছে। ঝিলের রাস্তার পাশে ডিএসসিসি’র স্থাপিত মিনি ডাস্টবিনগুলোও উদাও হয়ে গেছে। কোন একসময় এখানে সিটি কর্পোশেন কিছু মিনি ডাস্টবিন স্থাপন করেছিল তার অস্তিত্ব কোথায়ও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় হাতিরঝিলের পানিকে দুর্গন্ধমুক্ত করতে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সমন্বিত প্রকল্প হাতে নিয়েছে ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’- রাজউক। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল লে. কর্নেল (অব) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, আমরাও এতে ভোগান্তি পড়েছি। তবে আশাবাদী শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে।
এদিকে হাতিরঝিলের পানি নিয়ে দুর্ভোগের জন্য ওয়াসার অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন হাতিরঝিল উন্নয়ন প্রকল্পের মূল পরিকল্পনাকারী বুয়েটের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তার মতে, পয়ঃনিষ্কাশনের সংযোগ বন্ধ না হলে কখনই দুর্গন্ধমুক্ত করা সম্ভব নয়। #

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন