ঈদের দিন ও পরের দিন হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ছিল উপচেপড়া ভিড়। ঈদের দিন বিকাল থেকে হাতিরঝিলে তরুণ-তরুণীরা দলে দলে আসতে শুরু করে। সন্ধ্যার পর হাতিরঝিলে মানুষের ঢল নামে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলে দল বেঁধে আড্ডা, আনন্দ, হৈ-চৈ। ঈদের পরদিনও হাতিরঝিলে ছিল একই রকম ভিড়। তবে ঘুরতে আসা লোকজনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই ছিল না। সামাজিক দূরত্ব মানেননি কেউই। এছাড়া অনেকের মুখেই ছিল না কোনো মাস্ক।
হাতিরঝিল ছাড়াও ধানমন্ডি লেক এলাকার রবিন্দ্র সরোবর, ধানমন্ডি-৩২, ধানমন্ডি-৮ নম্বর, কুড়িল ৩০০ফিট রাস্তার এলাকায় দর্শনার্থীদের ছিল প্রচণ্ড ভিড়। তবে তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো লক্ষণই ছিল না। এসব জায়গায় নারী, পুরুষ ও বৃদ্ধদের পাশাপাশি বাবা-মায়ের সাথে অনেক শিশুও ছিল। তাদের কেউ আড্ডায় মত্ত, কেউবা খাওয়া-দাওয়ায়। কেউবা লেকের পাশে বসে একান্তে আলাপচারিতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউবা মোবাইলে সেলফি বা ছবি তুলতে ছিল ব্যস্ত।
দর্শনার্থীরা অনেকে বলেছেন, ২৩ তারিখ থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা রয়েছে। এটা কারফিউয়ের মতো হবে এমনটাই বলা হচ্ছে। এমন আশঙ্কায় ঈদের ছুটিতে অনেকে গ্রামের বাড়িতে যাননি। ইট-পাথরের শহরে বেশি সময় ঘরের মধ্যে থাকাও কষ্টের। তাই পরিবার-পরিজন, আত্মীয় ও বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন খোলা জায়গায় ঘুরে বেড়াতে। মালিবাগ এলাকা থেকে হাতিরঝিলে ঘুরতে আসা লোকমান হোসেনের কথা, ঘরে বসে কতক্ষণ সময় পার করা যায়। আমরা কাজের মানুষ ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগে না তাই বের হয়েছি। ঈদের দিনও কি মানুষ ঘরে বসে থাকবে? একটু ঘুরতে বের হইছি।
করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই ঈদের দিন বিকাল হতেই ঘর ছেড়ে বের হয়েছে মানুষ। জায়গা করে নিয়েছেন রাজধানীর উন্মুক্ত স্থানগুলোতে। কিন্তু এসব উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা দেখা যায়নি। হাতে গোনা কিছু মানুষের মুখে মাস্ক ছিল। বেশিরভাগ তরুণ-তরুণীর মুখেই মাস্ক ছিল না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখারও কেউ প্রয়োজন বোধ করেনি।
হাতিরঝিল এলাকাতে খাবারের দোকানগুলোতে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। বেশ কয়েকটি এলাকাকে যুক্ত করা এই ঝিল পাড়ে ঈদের দিন ও পরের দিন বিকালে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছিল। সকল বয়সের মানুষের সমান বিচরণ জায়গাটিতে। ধানমন্ডি লেকের খাবার বিক্রির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ছিল লম্বা লাইন। উন্মুক্ত পরিবেশে খাবার রান্না ও পরিবেশন করা হয় এসব দোকান থেকে। অনেক বিক্রেতার মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। ঈদের পরের দিন বিকালেও একই রকম ভিড় ছিল ধানমন্ডি লেক এলাকায়।
এ ছাড়া ঈদের দিন ও পরের দিন ঢাকাবাসী ঘুরে বেড়িয়েছেন, বাবুবাজার ব্রিজ, মোহাম্মদপুরের চন্দ্রিমা মডেল টাউন, মিরপুর বেড়িবাঁধের দিয়াবাড়ি, কেরানীগঞ্জের বসিলা নতুন রাস্তা, কলাতিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন