মা ইলিশ রক্ষায় চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনায় ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। প্রশাসনও নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী জেলেদের জেল-জরিমানা করছে। তাতেও থামছে না অসাধু জেলেরা। জেলার বিভিন্ন অলিতে গলিতে মিলছে ডিমওয়ালা ইলিশ। তাই নতুন করে ইলিশ রক্ষায় টাস্কফোর্সে পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সাথে যুক্ত হচ্ছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি জানান, পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ আপ্রাণ চেষ্টা করছে যেন জেলেরা মা ইলিশ না ধরে। এতেও থামছে না মা ইলিশ নিধন। গত রোববার চাঁদপুরে মা ইলিশ রক্ষা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে র্যাবকে ইলিশ রক্ষায় সম্পৃক্ত করা এবং মেঘনা নদীর সাথে সংযাগকারী সকল খালগুলোর মুখ বিশেষ ব্যবস্থায় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। তিনি আরো বলেন, ইলিশের অভয়াশ্রম তথা নদী তীরবর্তী এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ইলিশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে পারেন। তাদেরকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া আছে।
চাঁদপুর মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, প্রতিদিন অন্তত ২শ’ নৌকা নিয়ে জেলেরা মাছ ধরতে নামছেন। সেখানে চারজন পুলিশ নিয়ে মাত্র ১০জন একটি নৌকায় অভিযান চালাতে পারে। সদরের হরিণা এলাকার অলিতে-গলিতে এখন শুধুই মা-ইলিশ। ৭ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৩৮ টি অভিযান ও ৪৬ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ২৭টি মামলায় ২৮ জেলেকে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে জেলেও পাঠানো হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে কারেন্ট জাল। নিষেধাজ্ঞা সফল করতে জেলেদের মাঝে ভিজিএফের চালও বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু চাল নিয়ে জেলেরা আবার ইলিশ ধরতে নদীতে নামছে।
চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষীপুরের রামগতি পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকা অভয়াশ্রমের আওতাভুক্ত। প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে রাত ৮টা থেকে ভোর পর্যন্ত শত শত জেলে নদীতে মা ইলিশ ধরছে।
বিশেষ করে চাঁদপুর সদরের পুরানবাজার, লক্ষীপুর মডেল ইউনিয়নের রামদাসদী খাল, দোকানঘর গুচ্ছগ্রাম, মাদরাসা টাওয়ার, রণাগোয়াল, বহরিয়া, হরিণা, নন্দস খার খাল, গোবিন্দিয়া রাঢ়ী বাড়ি এলাকা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া মতলব উত্তরের ষাটনল, এখলাশপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ও নদীর ওপারে নিধন করা হচ্ছে মা-ইলিশ। একই অবস্থা হাইমচরেও। চাঁদপুর নৌ-পুলিশ সুপার জামশের আলী জানান, মা-ইলিশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ডের যৌথ সমন্বয়ে প্রতিদিন নদীতে অভিযান ও মোবাইল কোর্ট চলছে। জেলেদের আটক করে জরিমানা ও কারাদণ্ড দেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন