শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

স্পেনকে ইংল্যান্ডের বদলা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঘরের মাঠে টানা ২৪ ম্যাচ অপরাজিত ছিল ইংল্যান্ড। এক মাস আগে ইংলিশদের সেই রেকর্ড ভেঙে দেয় লুইস এনরিকের স্পেন। বদলা হিসেবে উয়েফা নেশন্স লিগে স্প্যানিশদের সঙ্গে আরো নির্দয় আচরণ করল ইংলিশরা।

ঘরের মাঠে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ১৫ বছর ধরে হারেনি স্পেন। স্পেনের এই দলে ঘরের মাঠে কারোরই হারের রেকর্ড নেই। সর্বশেষ ২০০৩ সালে গ্রিসের কাছে ইউরো বাছাইপর্বের সেই হারেরও দুই বছর পর জাতীয় দলে অভিষেক হয় অধিনায়ক সার্জিও রামোসের। গত ১০০ বছরে ঘরের মাঠে তিন গোল খাওয়ারও কোন রেকর্ড নেই স্পেনের। ইংল্যান্ডও ৩১ বছর ধরে জিততে পারেনি স্পেনের মাটিতে। ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের এতসব গর্বের রেকর্ড এখন অতীত। পরশু রাতে সবকিছুকে অতীত বাক্যে পরিণত করেছে গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড। সেভিয়ার ম্যাচটি ৩-২ গোলে জিতে নেয় রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্টরা। জোড়া গোল করে সেখানে বড় অবদান রাখেন রাইম স্টার্লিং।
ম্যাচের চিত্র এক কথায় তুলে ধরতে হলে বলতে হবে- খেলেছে স্পেন, জিতেছে ইংল্যান্ড। পুরো ম্যাচে মাত্র ২৭ শতাংশ বলের দল ছিল ইংল্যান্ডের অনুকূলে। গোলেই তারা শট নিতে পারে মাত্র তিনবার। ভাগ্যক্রমে তিনটি শটই সফল। পুরো ম্যাচে বলের জন্যে হাপিত্যেস করে বেড়ালেও ১৬ থেকে ৩৮, এই ২২ মিনিটের ঝড়ে উত্তলমহাসমুদ্রমাঝে মাস্তুল হারায় স্পেন। তিনটি গোলই আসে ধারার বিপরীতে দারুণ পাল্টা আক্রমণ থেকে। প্রথম দুই গোলে ছিল ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডের দারুণ পরোক্ষ অবদান। ষোড়ষ মিনিটে তার বাড়ানো লম্বা বুদ্ধিদীপ্ত পাস মাঝমাঠে পেয়ে যান হ্যারি কেইন। মার্কাস রাশফোর্ডের পা ঘুরে তা চলে যায় অরক্ষিত স্টার্লিংয়ের পায়ে। কিছুদুর এগিয়ে বুলেট গতির শটে বল জালে পাঠান ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড। ২৭ ম্যাচ ও তিন বছর পর ইংল্যান্ডের সার্সিতে এটি তার প্রথম গোল। ৩১ বছর আগে গ্যারি লিনেকারের করা গোলের পর স্পেনে কোন ইংলিশের প্রথম গোলও এটি।

২৯তম মিনিটে রাশফোর্ডের করা দ্বিতীয় গোলটিও পিকফোর্ডের বাড়ানো লম্বা ভলির সফল পরিসমাপ্তি। ভয়ঙ্কর জায়গায় বল পেয়ে তা রাশফোর্ডকে বাড়ান কেইন। ফাঁকা অবস্থান থেকে গোল না করে উপায় ছিল না রাশফোর্ডের। নয় মিনিট না যেতেই কেইনের বাড়ানো বলে ব্যবধান ৩-০ করে দেন স্টার্লিং।

প্রধমার্ধেই এমন অভাবনীয় ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর পুরোপুরি রক্ষণাত্মক কৌশলে চলে যায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে তাদের ব্যস্ত থাকতে হয় স্বাড়তিকদের আক্রমণ সামলাতে। বিশেষ করে পাকো আলকাসের মাঠে নামার পর স্পেনের আক্রমণে গতি বাড়ে। ৫৮তম মিনিটে তার গোলেই ব্যবধান কমায় এনরিকের দল। শেষ দিকে আক্রমণের বান বইয়ে দিয়েও জালের দেখা মিলছিল না। এসময় অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ঠ হয় অ্যাসেনসিওর শট, বল ফিরেছে ক্রসবারে লেগেও। সাত মিনিট যোগ করা সময়েরও শেষ মিনিটে দারুণ হেডে ব্যবধান কমান রামোস। তাতে অবশ্য হার এড়ানো যায়নি। তবে তাদের চেষ্টার কমতি ছিল না।

আর এই কারণেই এমন হারের পরেও ইতিবাচকই থাকছেন অধিনায়ক রামোস, ‘তাদের মত আমাদেরও তিন গোল করার মত যথেষ্ঠ সময় হাতে ছিল। আর ইতিবাচক দিকটা হলো এই অবস্থায় দলের প্রতিক্রিয়াটা।’ আক্রমণের কৌশল নিয়ে বার্সেলোনায় অনেকবার সমালোচনার মুখে পড়া কোচ লুইস এনরিকের উপর আস্থা রাখছেন রামোস, ‘আশা করছি এই দলটার উপর সবাই বিশ্বাস রাখবে।’

ইংলিশ কোচ সাউথগেট এটাকে দেখছেন উন্নতির পথে বড় এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া হিসেবে, ‘বিশ্বকাপ ছিল আমাদের জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা। এরপরও আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি তা দেখাতে হতো। স্পেনের বিপক্ষে এমন জয় ও ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ড্রয়ের মাধ্যমে আমরা দেখিয়েছি যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’

৩ ম্যাচ শেষে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে স্পেন। দুইয়ে থাকা ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। এক পয়েন্ট বিশ্বকাপ ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়ার। এদিন জিতেলেই আসরের প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠত স্পেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন