হঠাৎ চোখ ধাঁধানো সাজসজ্জার সাইকেল র্যালী সবার নজর আসে। অনেকেই প্রশ্ন করেন এরা কারা, এরাকি কোন মাল্ট্রিনেশন কোম্পানীর কোন পন্যের বাজারজাত করনের কাজে নেমেছে। রাস্থার দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে পথচারী ও দোকানীরা তা প্রত্যক্ষ করেন। একই ধরনের সাজে প্রায় অর্ধশাতাধিক বাই সাইকেল ও চালক থাকায় দৃষ্টি কাড়ে সবার। এমন দৃশ্য দেখে কৌতুহল বাড়ে পথচারী ও ব্যবসায়ীদের।
মৌলভীবাজার শহরের সিলেট সড়ক হয়ে কুসুমবাগ এলাকা পাড়ি দেয়ার সময় যানজটে আটকা পড়লে জানা যায় এই র্যালির মূল্য রহস্য। ওই র্যালি থেকেই বড় চাকার বাইসাইকেলে চড়ে যাওয়া পাগড়ীওয়ালা একজন মিষ্ঠি হেসে হালকা করে বলেন আমি নিজেই বর, কনে আনতে যাচ্ছি। সাথে থাকা কয়েকজন বর যাত্রী হাঁসি মুখে সবার কাছে দোয়া চান।
বুধবার দূপুরে শহরের সাদিয়া কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হল এমন চোখ ধাঁধানো বর ও যাত্রীদের বাই সাইকেল র্যালীর বিবাহ অনুষ্ঠান। জানা গেছে শহরের বড়হাটের মরহুম আশরাফ আলী ও রুবেনা সুলতানা দম্পতির ২য় সন্তান ও মৌলভীবাজার শহরের সাদী মোবারক ইভেন্টম্যানেজমেন্ট এর সত্তাধীকারী আহমদ আলী ছায়েম এর সাথে সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের মোজাফরাবাদ গ্রামের সজিব মিয়া ও হাজেরা বেগম দম্পতির ২য় কন্যা সোনিয়া সুলতানা রুমার সাথে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
বর আহমদ আলী ছায়েম মুঠোফোনে জানান এমন আয়োজনের ইচ্ছে ছিল। মৌলভীবাজার সাইকেলিং কমিউনিটির আমার প্রিয়জনরা তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছেন। হেঁসে বলেন তবে পুরো ইচ্ছা পূরণ হয়নি কারণ নতুন বউকে সাইকেলে করে নিয়ে যেতে পারিনি। তাক্ষনিক ভাবে অনুষ্ঠান হওয়ায় রেইসার বাই সাইকেলে সেই ব্যবস্থা করতে পারিনি। তার প্রত্যাশা সাংকেলিংয়ের মাধ্যমে যুব ও তরুণ সমাজ ভালো কাজে এগিয়ে যাবে।
মৌলভীবাজার সাইকেলিং কমিউনিটির এডমিন ইমন আহমেদ ও রাফসান রাজা জাওয়াদ জানান বর আমাদের সাংকেলিং কমিউনিটির এডমিন। আমাদের শ্লোগানই হচ্ছে “সু-স্বাস্থ্যের জন্য সাইকেলিং” পরিবেশ বান্ধব সাইকেলিংয়ে আমরা সবসমই তরুণ ও যুব সমাজকে উৎসাহিত করে থাকি। আমাদের লক্ষ্য তরুণ ও যুব সমাজকে মাদক মুক্ত রেখে দেশ প্রেমে উদ্ভুদ্ধ করে কর্মচঞ্চল রাখতে। সাইকেলিংয়ের মাধ্যমেই আমাদের তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে ভালো কাজে নিয়োজিত করতে চাই। জেলার মধ্যে এই আয়োজনটি প্রথম এমন দাবি করে তারা বলেন সাইকেলিংয়ের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করতেই আমাদের এই উদ্যোগ।
বিয়ের জন্য বাই সাইকেল র্যালি এমনটি শোনে তাদের অভিনন্দন ও শোভকামনা জানান উৎসুক দর্শনার্থীরা। ওদের শোভকামনা নিয়ে বরসহ যাত্রীরা র্যালির করে একসাথে হাবীবী হাবীবী গানসহ নানা গান ও শ্লোগানে বর নিয়ে এগিয়ে চলে সেন্টারের দিকে। বরের সাথে যারা বাই সাইকেল নিয়ে যাত্রী হয়েছিলেন তাদের পোশাক পাঞ্জাবী,পাজামা,পাগড়ী আর ফুলের মালা ছিল বরের মত। তবে বরের সাইকেলের সাথে ভিন্নতা ছিল। বরের সাইকেলের চাকা ছিল অন্য সাইকেল থেকে একটু বড়। অবশ্য র্যালির পিছনের সারিতে বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ছিল সাজানো গোছানে কয়েকটি প্রাইভেট কার ও মাইক্রো গাড়ি। এ ধরনের ব্যাতিক্রমী বরযাত্রার র্যালীকে “বিবাহ র্যালি” নাম দিয়ে দিনভর নানা মুখরোচক আর রসিক কথাবার্তা ছিল মুখে মুখে সবার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন