মৌলভীবাজারে অতিবৃষ্টির কারণে শহরের রাস্তাঘাট ও নিম্নাঞ্চলের বাসা-বাড়িতে পানি উঠে গেছে। এদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মনু, ধলাই ও কুশিয়ারা নদীর পানি। এ নিয়ে বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রথমে গুড়িগুড়ি ও পরে মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃষ্টিপাতে জেলা শহরের অনেক নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যায়। এরপর থেকে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে কোনও কোনও এলাকায় রাস্তা ডুবে গিয়ে কোমর পানির উপরে উঠেছে। লোকজন মালামাল ও শিশুদের নিয়ে মহা দুর্ভোগে পড়েছেন। শহরের কোদালীছড়া খনন করা হলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টির পানি না কাটায় শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
আবার বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাবার কারণে পূর্ব গীর্জাপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় রান্নার গ্যাস নিয়ে সংকট দেখা দিয়েছে। অনেককে আলাদা অস্থায়ী চুলা করে খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মনু নদীর পানি তরতর করে বাড়ছেই শুধু। দুপুরে যে রেলওয়ে ব্রিজের কাছে পানি ছিলো ১২.৯৮ সেখানে ৩টায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩.০৫ সেন্টিমিটারে। দুপুরে চাঁদনীঘাটে ছিলো ৮.৯০ সেন্টিমিটার, তা ৩ টায় হয়েছে ৯.২০ সেন্টিমিটার। আবার ধলাই নদীতে দুপুরে ১২ টায় ছিল ১৫.৫৩ সেন্টিমিটার, সেটা দুপুর ৩ টায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.৬৪ সেন্টিমিটারে ও কুশিয়ারা নদী শেরপুর এলাকায় দুপুর ১২ টায় ছিল ৭.৮০ সেনিইমটার, দুপুর ৩ টায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৮৬ সেন্টিমিটার।
বৃষ্টি না থামলে ও উজানে বৃষ্টি হলে পানি বাড়তেই থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
শহরের আরামবাগ এলাকার বাসিন্দা নিলুফার ইয়াসমিন ও সৈয়দ মহসিন পারভেজ বলেন, কোদালীছড়া খননের পর আশা ছিল তারা আর পানিতে নিমজ্জিত হবেন না। কিন্তু তাদের এ আশা দূরাশায় পরিণত হলো। একদিনের বৃষ্টিতেই বাসায় পানি উঠে গিয়ে অনেক কিছুই নষ্ট হয়ে গেল।
পূর্ব গীর্জাপাড়ার বাসিন্দা রিয়া ও নাসিমা বেগম জানান, কোদালীছড়া খননের পর থেকে পানি নামায় ধীরগতি কিছুটা কমলেও নাজেহাল অবস্থা কাটেনি। বাসা থেকে বের হবার পথ বন্ধ। বাসায় পানি, রাস্তায় কোমরের উপরে পানি। আসলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এদিকে গ্যাসের বিষয়ে জালালাবাদ গ্যাসের রাইজার পরিদর্শক চন্দন জানান, অনেক সময় বন্যা বা বৃষ্টির পানিতে গ্যাস লাইন ডুবে গেলে এবং গ্যাসের লাইনে লিকেজ থাকলে পানি ঢুকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এবিষয়ে পৌর মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে শহরের নিম্নাঞ্চলসহ কয়েকটি স্থানে ও রাস্তায় পানি জমেছে, বৃষ্টি বন্ধ হলেই তা দ্রুত নেমে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান জানান, উজানে বৃষ্টি হলে নদীগুলোতে পানি বেড়ে ভাঙনের সৃষ্ঠি হতে পারে। তবে বাঁধ রক্ষায় বিভিন্ন জায়গায় তাদের কাজ চলমান আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন