বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শহীদ জিয়ার লাশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র ও নাটকের রাজনীতি শুরু করেছে সরকার। এ বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন বিএনপি যদি কোনো সময় সরকারে আসে। তাহলে জিয়াউর রহমান এর কবরে দেখতে হবে লাশ আছে কিনা। যদি লাশ না থাকে তাহলে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধরতে হবে। কারণ উনি স্বঘোষিত বলেছেন ওখানে লাশ নেই। তাহলে উনিই জানেন লাশ কোথায় আছে। লাশ গুমের ক্ষেত্রে উনি নোবেল পুরস্কারও পেতে পারেন। আমি কিন্তু বিশ্বাস করি লাশ ওখানে না থাকতেও পারে। লাশ গুম হতেও পারে। ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী লাশ গুমের জন্য একটি মামলার অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি, মুদ্রাপাচার, মিথ্যাচার,গুম ও খুনের সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। একটা রাষ্ট্রে জনগণের জন্য যত কুকীর্তি ও ক্ষতিকর সূচক আছে ওই সূচক গুলোতে এগিয়ে আছি আমরা। এই বিষয়গুলোতে পদক থাকলে শেখ হাসিনা শতাধিক পদক অর্জন করতেন। খুনের জন্য, গুমের জন্যও পদক পেতেন।
সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমানের ১২ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মরহুমের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাহারমর্দনে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন শুধু ফেসবুক মিটিং করে বাহবাহ অর্জন নয়। সরকারের টনক নড়ে এমন আন্দোলন করতে হবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অতীতেও আন্দোলন হয়েছে। সে আন্দোলনে সফলতাও এসেছে। একই প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
তিনি বলেন সাইফুর রহমানের কর্মের রেকর্ড তিনি ছাড়া আর কেউ ভাঙ্গতে পারবেনা। আমরাতো আর সাইফুর রহমান হতে পারব না। তবে তাঁর মনে লালিত কল্যাণময়ী শক্তিকে পুঁজি করে আমাদেরকেও মাঠে সক্রিয় কাজ করতে হবে।
এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সভাপতি সৈয়দ তৌফিক আহমদ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ড. আব্দুল মতিন চৌধুরী ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বকশী মিছবাহ উর রহমানের যৌথ সঞ্চলনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক এমপি ও এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এম নাসের রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুছ তালুকদার দুলু, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌর সভার সাবেক মেয়র আলহাজ জিকে পৌঁছে, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র ফয়জুল করিম ময়ূন ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, ফয়ছল আহমদ, শওকুতুল ইসলাম শকু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফখরুল ইসলাম, জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন উজ্বল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জি এম মোক্তাদির রাজু,জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান, শ্রমিকদলের জেলা সভাপতি রশিদ আহমদ ও উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আব্দুল হাফেজ, জিতু মিয়া, জামি আহমদ, মিজানুর রহমান নিজাম, ফরহাদ রশিদ প্রমুখ।
এর আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও স্থানীয় জেলা ও উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল, তাতীঁদল, শ্রমিকদলসহ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রয়াত মন্ত্রীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাইফুর রহমানের পুত্র জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান সহ পরিবারের সদস্য। এ উপলক্ষে কোরআন খতম, মিলাদ মাহফিল দোয়া ও শিরনী বিতরণ করা হয়।
ভাষা সৈনিক এম সাইফুর রহমান বাণিজ্য মন্ত্রী,একাধিকবার অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী হিসেবে ১২ টি বাজেট পেশ করেছেন। তিনি ভ্যাটের প্রবর্তক ছিলেন।
উল্লেখ্য ২০০৯ সালের এই দিনে এম সাইফুর রহমান মৌলভীবাজারের নিজ বাড়ী বাহারমর্দন থেকে ঢাকায় যাওয়ার সময় ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার ঢাকা- সিলেট মহা সড়কের খড়িয়ালা নামক স্থানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন