সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে জিরাফের মৃত্যু

শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

 গাজীপুরের শ্রীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে রোগাক্রান্ত পুরুষ জিরাফটি মারা গেছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে কোর সাফারীর জিরাফ বেষ্টনীতে জিরাফটির মৃত্যু হয়েছে বলে পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়। বৃহস্পতিবার সকালে সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষের গঠিত মেডিকেল বোর্ড মৃত্যুর কারণ জানার জন্য মৃত জিরাফের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠায়। পার্কে কর্তব্যরত চিকিৎসকের অবহেলায় এ জিরাফের মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। জিরাফ পরিবার পুরুষশূন্য হয়ে যাওয়ায় নতুন করে কোন জিরাফ জন্ম নেবে না এ পার্কে। শেষ পুরুষ জিরাফটির মৃত্যুতে পার্কে জিরাফের বংশবৃদ্ধি এখন চরম সঙ্কটে পড়ল।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানান, ২০১৩ ও ২০১৫ সালে কয়েক দফায় ১২টি জিরাফ আমদানি করা হয় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। এর মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ৮টি নারী জিরাফ ছিল। উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে পার্কে ৪টি জিরাফ বাচ্চার জন্ম হয়। এর মধ্যে ৩টিই ছিল নারী ও একটি ছিল পুরুষ শাবক। গত বছরের শেষের দিকে পুরুষ জিরাফ শাবকটি মারা যায়। পার্কে এখন অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক তিনটি নারী জিরাফসহ মোট ৭টি নারী জিরাফ রয়েছে। পুরুষশূন্য হয়ে পড়ল জিরাফ পরিবার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, পার্কে দুইজন প্রাণি চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ভেটেরিনারি সার্জন ও একজন সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন। ভেটেরিনারি সার্জন ডা. জুলকারনাইন মানিক দীর্ঘদিন দায়িত্বের বাইরে ছিলেন পড়াশুনার প্রয়োজনে। সেই থেকেই সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নিজাম উদ্দীন চৌধুরীর তত্বাবধানে ছিল পার্কের চিকিৎসা ব্যবস্থা। তবে তিনি সবসময়ই প্রাণির চিকিৎসা সেবায় ছিল উদাসীন। তারা অভিযোগ করে বলেন, ডা. নিজাম উদ্দীনের পার্কে থাকা বাধ্যতামূলক থাকলেও তিনি থাকতেন শেখ কামাল ওয়াইল্ড লাইফ সেন্টারে। কখনো মন চাইলে পার্কে আসতেন, কখনো আসতেন না। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তোয়াক্কা করতেন না। নিজের খুশি মতো অফিস করতেন। কর্মকর্তারা কাজের জন্য চাপ দিলে এক বড় কর্মকর্তা তার আত্মীয় বলে শাসিয়ে দিতেন। এ নিয়ে পার্কে কেউ তার ব্যাপারে কোনো উচ্চবাচ্য করতে পারতো না। একাধিক কর্মচারীর সাথে তার মারামারির ঘটনাও ঘটেছে।

অভিযুক্ত সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নিজামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সব কিছুই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। পার্কে প্রাণি মারা যাওয়ার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ অব্যবস্থাপনা জনিত। জিরাফটি কেন মারা গেল এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
সাফারি পার্কে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এর আগেও জিরাফের মৃত্যু হয়েছে।
অনেক সময় প্রাণি হঠাৎ অসুস্থ হলেও পার্কের কর্তব্যরত চিকিৎসক পার্কে অনিয়মিত থাকায় সময়মত প্রাণির চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায় না। চিকিৎসকদের পার্কে থাকা বাধ্যতামূলক। সরকার তাদের থাকার জন্য আলাদা ডরমেটরি বরাদ্দ রেখেছে।
তবুও নিয়মের তোয়াক্কা না করে ডা. নিজাম উদ্দীন নিয়মবহির্ভূতভাবে পার্কের বাইরে থাকেন। নিজের খেয়াল খুশিমতো পার্কে আসেন-যান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কাজের চাপ দিলে বিভিন্ন প্রকার আত্মীয় স্বজনের ভয় দেখায় পার্কের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। তিনি বলেন, একমাত্র পুরুষ জিরাফটির মৃত্যুতে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ল সাফারি পার্ক। থেমে গেল জিরাফের বংশবৃদ্ধিও।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন