বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রাজশাহীর রাজকীয় ফেরা

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

টিকে থাকতে হলে জয়ের বিকল্প নেই। বাঁচা-মারার লড়াইয়ে। উড়ন্ত সূচনা এনে দিলেন আফিফ হোসেন ধ্রæব, ঝড় তুললেন সাব্বির রহমান এবং নিকোলাস পুরান। আর তাতেই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উেইকেট হারিয়ে ১৮৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে সিলেট। তবে শেষ রক্ষায় হয়নি অলক কাপালীর দলের। জেসন চার্লস গড়ে দিলেন শক্ত ভিত, সেই ভিতে দাঁড়িয়ে মিডল অর্ডারে অপর দুই বিদেশি লরি ইভান্স আর রায়ান টেন ডেসকাটে রাজশাহীকে এনে দিলেন স্বস্তির এক জয়। ১২ বল হাতে রেখেই পাহাড়সম লক্ষ্য পেরিয়ে যায় মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
৫ উইকেটের এই জয়ে সব ম্যাচ শেষে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চারে উঠার লড়াইয়ে ঢাকার সঙ্গে আছে রাজশাহী। যদিও নিজেদের হাতে কিছু নেই, তাদের কামনা করতে হবে ঢাকার দুই হার। অন্যদিকে ১১ ম্যাচের সাতটা হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে অলক কাপালীর দলের।
অথচ গতকাল সন্ধ্যায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রান তাড়ার শুরুটা একদম জুতসই ছিল না রাজশাহী। এদিনও ব্যাটিং অর্ডারে রদ বদল করে নামে মেহদী হাসান মিরাজের দল। ওপেনিং থেকে সৌম্য সরকারকে নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়, তিনি খেলেছেন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে। একাদশে ফিরে ওপেনে নেমে ব্যর্থ হন জাকির হাসান। ওয়ানডাউনে অভিজ্ঞতার দাম রাখতে পারেননি শাহরিয়ার নাফীস। আক্রমণে এসেই তাকে ফেরান সিক্সার্স কাপ্তান অলক। ক্যারিবিয়ান জনসন চার্লসই পেটাচ্ছিলেন। তিনিও অলকের শিকার। তবে তার উইকেটের বড় অবদান সাব্বিরের। বাউন্ডারি লাইনে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন তিনি।
দ্রæত দুই উইকেট তুলে তেতে উঠছিল সিলেট। তাদের তেজে পানি ঢেলে দেন ইভান্স, ডসকেট। তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেনদের আলগা বোলিংয়ের ফায়দা তুলে ঝড় তুলেন তারা। পিটিয়েছেন অলক, নেওয়াজের স্পিনেও। তাদের ঠেকানোর মতো কোন পথ খুঁজে পায়নি সিলেট। এই দুজনের ব্যাটে এক পর্যায়ে ওভারপ্রতি ১০ এর উপর চলে যাওয়া সমীকরণ চলে আসে পাঁচের নিচে। ৪৫ বলে গড়ে তুলেন ১০৯ রানের বিস্ফোরক জুটি। ৩ চার আর ২ ছক্কায় ১৮ বলে ৪২ করে যখন ডেসকাট আউট হন তখন ম্যাচ একদম রাজশাহীর মুঠোয়। ৩৬ বলে ৭৬ করে তার পথ ধরে ইভান্সও ফেরেন খানিক পর। তবে ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে গেছে সিলেটের।
আগের ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংস হেরে গেলে সিলেটের সমীকরণ হতো সহজ, শেষ চারে যাওয়ার হিসেব থাকত নিজেদের হাতে। ভাইকিংস জিতে যাওয়ায় সমীকরণ একটু যদি কিন্তুর উপর পড়ে যায় তাদের। তবে সুযোগ যেহেতু আছে বারুদ নিয়েই নেমেছিল তারা। প্রথম ওভারে একটি করে চার ও ছয়ে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দেন লিটন দাস। কিন্তু ষষ্ঠ বলে ১০ রানে আরাফাত সানির এলবিডাবিøউ হলে শুরুতেই হোঁচট খায় সিলেটের টিকে থাকার স্বপ্ন। আফিফ হোসেনের সঙ্গে ৩২ রান যোগ করে জেসন রয় বিদায় নিলে সেটি রূপ নেয় দুঃস্বপ্নে। ৮ বলে ১৩ রান করে মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। এরপর আফিফ ও সাব্বির রহমানের ব্যাটে নিয়ন্ত্রণ ছিল সিলেটের হাতেই। ২৫ বলে দুটি করে চার ও ছয়ে ২৯ রানে আফিফ বিদায় নিলে ভাঙে ৪৬ রানের এই জুটি।
পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন পুরান। সাব্বিরকে নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন এই উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান। ৫৩ রান যোগ করে দুজনে। কিন্তু ১৬তম ওভারে জোড়া ধাক্কা দেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। সাব্বির ৩৯ বলে ৪৫ রান করে আউট হন, পরের বলে শূন্য রানে মোহাম্মদ নওয়াজ। আর কোনও উইকেট হারায়নি সিলেট। শেষ চার ওভারে ৪৮ রান আসে পুরান ও অলক কাপালির ব্যাটে। মাত্র ১০ বল খেলে ১০ রান করেন অধিনায়ক কাপালি। অন্য প্রান্তে বিস্ফোরক ব্যাটিং করেন পুরান। শেষ ওভারে পরপর দুই ছয়ে শেষ করেন ইনিংস সেরা পারফরম্যান্স। ৩১ বলে ছয়টি করে চার ও ছয়ে ৭৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। এই আসরে এটি তার তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি।
রাজশাহীর পক্ষে রাব্বি সর্বোচ্চ দুই উইকেট নেন। একটি করে পান মুস্তাফিজ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও আরাফাত।

চট্টগ্রাম পর্ব শেষে বিপিএল
পয়েন্ট টেবিল
দল ম্যাচ জয় হার পয়েন্ট নে.রা.রে
রংপুর রাইডার্স ১১ ৭ ৪ ১৪ ০.৬৯
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১০ ৭ ৩ ১৪ ০.৪৯৫
চিটাগং ভাইকিংস ১১ ৭ ৪ ১৪ -০.১৮৭
রাজশাহী কিংস ১২ ৬ ৬ ১২ -০.৫১৮
ঢাকা ডায়নামাইটস ১০ ৫ ৫ ১০ -০.৬৩৪
সিলেট সিক্সার্স ১১ ৪ ৭ ৮ -০.০৬৯
খুলনা টাইটান্স ১১ ২ ৯ ৪ -১.১৬৫

সেরা ৫
ব্যাটসম্যান ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড় স্ট্রাইক ১০০/৫০
রাইলি রুশো (রংপুর) ১১ ৫১৪ ১০০* ৮৫.৬৬ ১১৫.১৭ ১/৫
নিকোলাস পুরান (সিলেট) ১১ ৩৭৯ ৭৬* ৪৭.৩৭ ১৫৯.৯১ ০/৩
মুশফিকুর রহিম (চিটাগং) ১১ ৩৭০ ৭৫ ৩৭.০০ ১৩৮.০৫ ০/৩
লরি ইভান্স (রাজশাহী) ১১ ৩৩৯ ১০৪* ৪২.৩৭ ১৩৮.৩৬ ১/২
অ্যালেক্স হেলস (রংপুর) ৮ ৩০৪ ১০০ ৪৩.৪২ ১৬৭.০৩ ১/২

বোলার ম্যাচ উই. সেরা গড় ইকো. ৪/৫
তাসকিন আহমেদ (সিলেট) ১১ ২১ ৪/২৮ ১৪.৬৬ ৮.৭৫ ২/০
আবু জায়েদ রাহি (চিটাগং) ১১ ১৮ ৩/২৫ ১৯.১৬ ৮.২১ ০/০
ফরহাদ রেজা (রংপুর) ১১ ১৭ ৪/৩২ ১৫.৫৮ ৮.০৩ ১/০
সাকিব আল হাসান (ঢাকা) ১০ ১৭ ৪/১৬ ১৫.৬৪ ৭.৩৮ ১/০
মাশরাফি বিন মুর্তজা (রংপুর) ১১ ১৭ ৪/১১ ১৭.২৯ ৬.৮৩ ১/০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন