ঢাকা-আশুলিয়া-টাঙ্গাইল মহাসড়কে কেনোভাবেই মুক্তি মিলছে না রাতের যানজট থেকে। কালিয়াকৈর-চন্দ্রা ও কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কের জিরানী থেকে চন্দ্রা এবং বাইপাইল থেকে উত্তরা পর্যন্ত প্রায় রাতেই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কর্মজীবী ও সাধারণ মানুষ। তবে পুলিশের দাবি বিভিন্ন শাখা সড়ক সংস্কারের কারণে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। পাশাপাশি মহাসড়কে দুটি সরু ব্রিজের কারণেও যানজট লেগেই থাকে। রাতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান সরেজমিনে ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, এ যানজটের কারণে আশুলিয়ার রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের বিদেশি কর্মকর্তারা রাতে ঢাকার বাসায় যেতে দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়তে হয়। রাত ১০টায় অফিস থেকে পৌঁছতে হয় মধ্যরাতে, আবার ভোরে কর্মস্থলে আসতে হচ্ছে।
হানিফ পরিবহনের সুপারভাইজার সুলতান মিয়া বলেন, বগুড়া থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত আসতে সাধারণত তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগে। আর এখন সময় লাগছে ৬-৭ ঘণ্টা। চালকের সহকারী জানান, রাস্তার দুপাশেই যানজট তীব্র। একই জায়গায় ২-৩ ঘণ্টা করে বসে থাকতে হচ্ছে।
ঢাকা জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আবুল হোসেন বলেন, রাতের যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি যানজটে কারণ হিসেবে বলেন, বাইপাইল থেকে ধউর পর্যন্ত দুটি ব্রিজ রয়েছে। যার একটি আশুলিয়া বাজারের কাছে। সড়ক অনেক চউড়া কিন্তু ব্রিজ সরু, দুইটি গাড়ি পাশাপাশি পার হতে পারে না। একটি গাড়ি ব্রিজ দিয়ে পার হতে গেলে আরেকটি গাড়ি থেমে থাকতে হচ্ছে। ফলে দুই পাশে থেমে থাকা গাড়ি দীর্ঘ লাইন পরে যায়। আবার কোনো কারণে ব্রিজের ওপর গাড়ি বিকল হলে কথাই নেই।
তিনি আরও বলেন, এ মহাসড়কটির শাখা আশুলিয়ার আনোয়ার জং সড়কে দীর্ঘদিন ধরে চলছে মেরামতের কাজ। রাস্তায় ড্রেন করার ফলে সড়কটি সরু এজন্যও যানজট হচ্ছে। এছাড়া রাতে সড়কে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) রয়েছে যা আমদের নজরদারিতে রয়েছে। সড়কে কোনো কারণে গাড়ি বিকল হলে আমরা সাথে সাথেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই।
স্থানীয় সংবাদকর্মী ইমতিয়াজুল ইসলাম জানান, রাতে ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। দূরপাল্লার যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় বাইপাইলের ত্রি মোড়ে ট্রাফিক সিগনালের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এই যানজটের সৃষ্টি। তিনি বলেন, সড়কের ত্রী মোড়ে যে ট্রাফিক সিগনাল রয়েছে সেটা অপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। ফলে গাড়ি যার যার ইচ্ছামতো যাচ্ছে, নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ। এছাড়া সড়কের দুই পাশে রাতে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকবহনকারী বাসগুলো সড়ক দখল করে রেখে দেয়ার কারনেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাঙ্গাইল থেকে কালিয়াকৈর, গাজীপুর, সাগরদিঘী পর্যন্ত লোকাল বাস চলছে। বিশেষ করে মহাসড়ক থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা তুলে দেয়ার পর এসব বাসের কদর আরো বেড়েছে। এসব লোকাল বাসের বেশিরভাগই ফিটনেসবিহীন। রাজধানীর অকেজো বাসগুলো লোকাল বাস হিসেবে ওইসব সড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচল ও সড়কের মাঝখানে থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামার কারণে যে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে সেই প্রভাব পরছে আশুলিয়াতেও।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন