বাণিজ্য মেলার অভ্যন্তরীণ স্টলগুলো ক্রেতাশূন্য। মেলার বাইরের অংশে তীব্র যানজট। সমস্যা গাজীপুরের নাওনের মোড় এলাকায় ঢাকা বাইপাস সড়কে সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১২ জানুয়ারি ভোররাত থেকে শুরু হয় যানজট। এদিকে দূর জেলা থেকে আসা মেলায় আসা দর্শনার্থীরা পড়েন চরম বিপাকে। একদিকে রাজধানীর লোকজন বিশ্ব ইজতেমার আসরের কারণে যানজট কবলে অন্যদিকে ঢাকা বাইপাস সড়কের গাজীপুরের যানজট বিস্তৃত হয়ে গোলাকান্দাইল পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার পৌঁছে যায়। পরিস্থিতি না বুঝে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা সড়কে আটকে যান দীর্ঘসময় ধরে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায় অনেকটা ক্রেতাশূন্য। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দর্শনার্থী প্রবেশ করে হাতেগণা কয়েকজন। ফলে মেলার পরিবেশ হয়ে পড়ে সুনশান নিরবতায়।
মেলার নিরাপত্তা দায়িত্বরত ক্যাম্প ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, সড়কে যানজটের প্রভাবে দর্শনার্থীরা সড়কে আটকে আছে। তাই দুপুর হলেও দূরের দর্শনার্থীদের দেখা যায়নি। মেলার ফটকে দায়িত্বরত কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, ২য় সপ্তাহে আশানুরূপ ক্রেতা ও দর্শনার্থী হতে শুরু করেছিলো। কিন্তু বৃহস্পতিবার বাইপাসের যানজটের কারণে মেলায় আগতরা আটকে যায়। এতে মেলা ক্রেতাশূন্য যায় এক দুপুর। তবে বিকাল হতেই দর্শনার্থীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। মেলার আয়োজক সহযোগী মনিরুজ্জামান ভুইয়া বলেন, গতবছরের চেয়ে এবারও বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থী মেলা আসা শুরু করেছে। ঢাকা বাইপাস সড়কের জন্য কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। তবে আগামী বছর এ পরিস্থিতি থাকবে না।
এদিকে মেলার অভ্যন্তরে সব পণ্যের অতিরিক্ত দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ ছিল বেশি। আবার অভ্যন্তরীণ খাবার হোটেলের সব খাবারের মান ও দাম নিয়েও অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেলাসূত্র জানায়, যানজটের কারণে কিছু সংখ্যক দর্শনার্থী আসলেও বিক্রি নেই খুব একটা।
গোয়ালপাড়া বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, যানজটের কারণে মেলা প্রাঙ্গণ অনেকটা ফাঁকা। তাই পরিবার নিয়ে মেলার এসেছি। এখানে থেকে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার ও দেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে জানতে পেরে সবাই খুশি। তাছাড়া মেলায় থাকা শিশুপার্কের ব্যবস্থা ছিলো প্রশংসনীয়। তবে খাবারের দাম গরীব ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, এখনো মেলার পূর্বপ্রান্তে সাদা কাপড়ে আলাদা করা স্টল প্রস্তুত থাকলেও কোনো প্রতিষ্ঠানকে পসরা বসাতে দেখা যায়নি। কোথা কোথাও এখনো স্টল প্রস্তুতি আর কারিগরদের হাতুড়ি পেটার ঠকঠক শব্দ শুনতে পান আগত দর্শনার্থীরা।
কুড়িল থেকে রাজধানীমুখি লোকজন এতদিন সহজে যাতায়াত করতে পারলেও যানজটে এশিয়ান বা ঢাকা বাইপাস সড়কের কারণে ভোগান্তি বেড়ে যায়। মেলার আয়োজক ও পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিলেও কোনো প্রকার সুরাহা মেলেনি। তবে আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলো।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আশপাশে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা (সহকারী উপ পরিদর্শক) নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা বাইরের অংশে যানজট নিরসনে কাজ করছি। কিন্তু ভোররাতে গাজীপুর অংশে যানজট থাকায় ওখানকার দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ী সরাতে পারেনি। ফলে যানজট বেড়ে যায় প্রায় ১৫ কিলোমিটারের বেশি। এ সমস্যার কারণে সড়ক আটকে যায়। তিনি আরো বলেন, টঙ্গীর এজতেমাকে ঘিরেও সড়কে যানজট তৈরি হয়েছে। আয়োজন সংশ্লিষ্টদের দাবি, গতবারের তুলনায় এবার মেলায় দর্শনার্থী হবে ৩ গুণের চেয়ে বেশি। যাতায়াত ব্যবস্থায় উন্নতির কারণে আশাবাদি তারা।
বিএনপির হাঁকডাকই সার, জনগণ তো দূরের কথা কর্মীরাও সাথে নেই
সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার
তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বিএনপির ১১ জানুয়ারির গণ-অবস্থান কর্মসূচিকে হাঁকডাক সর্বস্ব বলে মন্তব্য করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, গতকাল বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো ঢাকা শহরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে এবং এটিকে সামনে রেখে তারা গত কয়েকদিন ধরে অনেক হাঁকডাক দিয়েছে। আপনারা জানেন যে, হাঁস ডিম পাড়ার আগে কিন্তু অনেক হাঁকডাক দেয় এবং শেষে একটা ডিম পাড়ে। বিএনপিও ঠিক সে রকম গতকালের কর্মসূচি নিয়ে অনেক হাঁকডাক দিয়েছে এবং শেষে দেখা গেলো ৫২ দলের সব নেতাকর্মী মিলে কয়েকশ’ মানুষ, আর বিএনপির সমাবেশে কয়েক হাজার মানুষ। খালি কলসি যে বেশি বাজে বলে, বিএনপির হাঁকডাকটাও ছিল ঠিক সে রকম।
স¤প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা যেভাবে বক্তব্য রেখেছেন, তার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। বাস্তবতা হচ্ছে তাঁদের কালকের সমাবেশ দেখে এটিই প্রতীয়মান হয়- জনগণ তো দূরের কথা, বিএনপির কর্মীরাও সবাই সেখানে অংশগ্রহণ করেনি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা মানুষ এনেছে, তারপরও নয়াপল্টনের সামনের সমাবেশে আশানুরূপ মানুষ হয়নি।
ড.হাছান বলেন, আমরা যেমন ১১ তারিখ ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সতর্ক পাহারায় ছিলাম, ১৬ তারিখেও থাকবো। তাঁরা যদি কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টা চালায় জনগণকে সাথে নিয়ে সেটি প্রতিহত করা হবে। দেশে কাউকে শান্তি, স্থিতি, শৃঙ্খলা এবং জনজীবনে নিরাপত্তা বিঘিœত করতে দেওয়া হবে না।
বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার জামিনে মুক্তি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাস সাহেব মুক্তি পেয়েছেন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এতেই প্রমাণিত হয় দেশে আইন আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন। বিএনপি বারবার আইন আদালত নিয়ে যে প্রশ্ন তোলে সেটি যে সম্পূর্ণ মিথ্যা, তাঁদের জামিনের মাধ্যমে সেটি প্রমাণিত হয়েছে। তবে জেল থেকে বের হওয়ার পর মির্জা আব্বাস, মির্জা ফখরুলসহ নেতারা একটু গণতন্ত্রের পথে হাঁটার মতো করে বক্তব্য দিতে চেষ্টা করছে বলে আমি মনে করছি’ উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মির্জা আব্বাস বলেছেন আমরা কাউকে ধাক্কা দিয়ে ফেরতে চাই না, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় দিতে চাই।’ আমরা তো বলি আপনারা নির্বাচনে আসুন, নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। জনগণ যদি চায় তাহলে আমরা দেশ পরিচালনা করবো। জনগণ যাদেরকে চায়, তাঁরা দেশ পরিচালনা করবে। এটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার রীতিনীতি, গণতন্ত্রের রীতিনীতি। তাঁরা গণতন্ত্রের পথেই হাঁটবেন সেটিই আশা করি। তাঁদের দু’জনেরই সুস্বাস্থ্য দীর্ঘায়ু কামনা করি। সরকার করোনার চতুর্থ ডোজ দিচ্ছে, প্রয়োজনে তাঁরা সেটিও নিতে পারেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন