শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

জন্মদিন রাঙানো হলো না সাকিবের

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

গতকাল জীবনের ইনিংসে পূর্ণ হয়েছে ৩২ বছর। নিজের জন্মদিনে সাকিব আল হাসান পেয়েছেন আরেকটি স্বস্তির খবর। আঙুলের চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে জায়গা পেয়েছেন আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের প্রথম ম্যাচের একাদশেও। শুধু তাই নয়, ফেরার ম্যাচে ইডেন গার্ডেন্সে ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা বাজানোর সম্মানও পেয়েছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার।
আইপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচে গতকাল কলকাতায় সাকিবের পুরোনো দল নাইট রাইডার্সের মুখোমুখি হয় হায়দরাবাদ। জয় দিয়েই সাকিবের জন্মদিন উদযাপন করতে চেয়েছিল ‘অল অরেঞ্জ’ খ্যাত দলটি। সতীর্থরাও জন্মদিনে বিশেষ উপহার দিতে চেয়েছিলেন সাকিবকে। কিন্তু সম্ভবনা জাগিয়েও দিনটাকে রাঙাতে পারেনি হায়দরাবাদ। ১৮ বলে ৫৩ রানের কঠিন হিসাব মিলিয়ে ৬ উইকেটের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
দিনটা সাকিবকে উপহার দিতে প্রথমে ব্যাট হাতে এগিয়ে আসেন দলপতি ডেভিড ওয়ার্নার। বল টেম্পারিংয়ের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২ মাস নিষিদ্ধ থাকা অজি তারকা কনুইয়ের চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরে শুরু থেকেই এদিন কেকেআর বোলারদের উপর চড়াও হন। উপহার দেন ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৩ বলে ৮৫ রানের ঝড়ো ইনিংস। তাকে সঙ্গ দেয়া আরেক ওপেনার জনি বেয়ারস্টো দেখে শুনে খেলে আউট হন ৩৯ রানে। তিনে নামা বিজয় শঙ্কারও হাত খুলে করেন দুটি করে চার-ছক্কায় ২৪ বলে ৪০। আর তাতে নির্ধারিত ওভার শেষে তিন উইকেট হারানো সাবেক চ্যাম্পিয়নদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮১।
রান পাহাড় তাড়ার জবাবে নেমে শুরুতেই সাকিবের ঘূর্ণিতে পড়ে কলকাতা। মাত্র ৭ রানেই ওপেনার ক্রিস লিনকে রশিদ খানের তালুবন্দী করান বার্থডে বয়। এই নিয়ে আইপিএলে ৬১ ম্যাচ খেলে ৭৩৭ রান করা সাকিব বল হাতে নিয়েছেন ৫৮ উইকেট। এরপর রবিন উথাপ্পা (২৭ বলে ৩৫) আর নিতিশ রানার ব্যাটে (৪৭ বলে ৬৮) ম্যাচে ফেরে দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। শেষ দিকে বল আর রানের ব্যবধান কমাতে ইডেনে ওঠে আন্দ্রে রাসেল ঝড়। যে শ্রেফ উড়ে যায় হায়দরাবাদ। প্রথম স্পেলে ৩ ওভারে সাকিব দেন ২৮ রান।
সিদ্ধার্ত কাউল ও ভুবনেশ্বর কুমারের করা ১৮ ও ১৯তম ওভারে চার-ছক্কার বৃষ্টিতে ৪০ রান (১৯+২১) নেন রাসেল। সাকিবের করা শেষ ওভারে ১৩ রানের হিসাবটা ২ বল হাতে রেখেই দুই ছক্কায় মিলিয়ে নেন শুবমান গিল। এই দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ২৫ বলে যোগ করে ৬৫ রান। রাসেল অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ৪৯ রানে, গিল করেন ১০ বলে ১৮।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে হওয়া বিপিএলের ফাইনালে ব্যাটিংয়ের সময় আঙুলে চোট পেয়েছিলেন সাকিব। সেই চোটের কারণে যেতে পারেননি নিউজিল্যান্ড সফরে। সেই সময় তৃতীয় টেস্টে খেলার সম্ভাবনা আছে বলা হলেও পরে সেটি থেকেও ছিটকে যান। পুনবার্সন প্রক্রিয়া শেষে কদিন আগে পুরো ফিট হয়ে ওঠেন। এরপরই আইপিএল খেলার ছাড়পত্র পান বিসিবি থেকে। তবে এই টুর্নামেন্ট চলার সময় ফিটনেস নিয়ে নিয়মিত বিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে সাকিবের।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদচারনার শুরু বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একই বছরের নভেম্বরে টি-টোয়েন্টিতে এবং ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে অভিষেক হয় সাকিবের। ১৯৫টি একদিনের ম্যাচে ঝুলিতে ৫৫৭৭ রান, বল হাতে নিয়েছেন ২৪৭ উইকেট। ক্রিকেটের লংগার ভার্সনে তারকা এই ক্রিকেটার ৫৫ ম্যাচে ৩ হাজার ৮০৭ রানের পাশাপাশি আছে ২০৫ উইকেট। ৭২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৪৭১ রানের ঝুলি সমৃদ্ধ হয়েছে ৮৮ উইকেটে। আর সব ধরনের টি-টোয়েন্টিতে ২৯৬ ম্যাচ খেলে ৪৭৫৪ রান এবং ৩৪৪ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। সেরা বোলিং ৬ রানে ৬ উইকেট।
নিজের ছোট্ট ক্যারিয়ারে গড়েছেন এমন সব কীর্তি যা তাকে গ্রেটদের সঙ্গে তুলনায় নিয়ে আসে। উইজডেন সাময়িকীর বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন সাকিব। আইপিল, শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট লিগ, বিগব্যাশ, কাউন্ট্রি ক্রিকেট- কী খেলেননি এই ক্রিকেট তারকা। বাংলাদেশি হয়ে এ রকম অর্জন শুধু তার একারই। ছিলেন ওয়ানডের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে এক নম্বর অলরাউন্ডার। সঙ্গে টেস্টেরও সেরা অলরাউন্ডারের খেতাব ঝুলিতে পুরেছেন। ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন বর্তমানের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন