মশার কামড় আর ভ্যান ভ্যান যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী। বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বাইরেও মশার কবল থেকে রেহাই নেই মানুষের। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নাগরিক জীবন।
মশার উৎপাতে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রনা সইতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মশার কামড়ে পড়ার টেবিলসহ ঘরের কোথাও বসতেই পারছেনা শিক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্য ঝুঁকির ভয় রয়েছে এটা জেনেও মানুষ অনেকটা নিরুপায় হয়ে মশা তাড়ানোর কয়েল ও স্প্রে ব্যবহার করছে। ফগার মেশিন কম থাকায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) কর্তৃপক্ষ নগরীতে স্প্রে কার্যক্রম জোরালো করতে পারছেনা।
গরম আবহাওয়া শুরুর পর নগরীতে মশার যন্ত্রণা অসহনীয় পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। সকালে নাস্তার টেবিলে, পড়ার টেবিলে, বিকেলে অবসরের ঘুমের জন্য বিছানায় গেলে আর সন্ধ্যা নামতেই মশা পঙ্গপালের মতো ঘিরে ধরছে মানুষকে। মশার জ্বালায় ঘরে, অফিসে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, এবারের শীত মৌসুমে ওয়ার্ডগুলোতে মশার ওষুধ স্প্রে কার্যক্রম যথাযথভাবে না হওয়ায় মশার বংশ বৃদ্ধি রোধ হয়নি। যার কারণে শীতের বিদায়ের পরই মশার উৎপাত বেড়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি এবং ৭ এপ্রিল থেকে কলেজগুলোতে অনার্স পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার এসময়টিতে বাসা-বাড়িতে মশার উপদ্রবে পরীক্ষার্থীদের মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। কেবল তাই নয়, পরীক্ষা হলেও মশার কামড়জ্বালা সইতে হবে পরীক্ষার্থীদের। নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, স্প্রে ও কয়েল আর ইলেকট্রনিক্স ব্যাট ব্যবহার করেও মশার আক্রমন থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ফগার মেশিন না থাকায় স্প্রে কার্যক্রম হচ্ছে না। কুসিক কর্তৃপক্ষ মশার উৎপাতের এসময়টিতে ওয়ার্ডকেন্দ্রিক স্প্রে কার্যক্রম চালালেও তা পর্যাপ্ত নয়। সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন খান জম্পি জানান, বর্তমানে মশার ওষুধসহ স্প্রে করার মেশিনের কিছুটা অপ্রতুলতা রয়েছে। এজন্য ব্যাপকভাবে স্প্রে কার্যক্রম হচ্ছেনা। এছাড়া ড্রেন মেরামত, সংস্কার কাজের কারণেও কোন কোন এলাকায় স্প্রে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে এটা সাময়িক। স্প্রে কার্যক্রম একেবারে বন্ধ নয়। নগরভবনে মশা নিধনের পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে। কিন্তু ফগার মেশিন প্রয়োজনের তুলনায় কম। তবে ওয়ার্ডবাসীরা নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনা, বাড়ির ভেতরের ড্রেন, নর্দমা বা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার জায়গা সবসময় পরিস্কার রাখার দায়িত্বটা নিজেরা করে নিলে মশা জন্মানোর কোন সুযোগ থাকবে না।
এদিকে মশা তাড়ানোর জন্য ঘরে, অফিসের ভেতর নিয়মিত মশার কয়েল, স্প্রে ব্যবহার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান। তিনি জানান, বেশি পরিমানে কয়েল, স্প্রে ব্যবহার ব্রংকাইটিস, চোখের সমস্যাসহ নানারোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য ঘরের ভেতর নিয়মিত এসব ব্যবহার মারাত্মক ক্ষতি সৃষ্টি করবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন