মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন : এমনিতেই দেশে এক অস্বস্তিকর ও অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। অপরিপক্কতা, অসহিষ্ণুতা ও অনৈক্য এবং বিভাজন চরম সীমায় এসে উপনীত হয়েছে। দেশে তো বটেই, বাংলাদেশের অবনতিশীল রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বে সমালোচনার ঝড় বইছে। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে উত্তপ্ত করবে নিঃসন্দেহে। দেশের খ্যাতনামা আইনজীবীরা বলেছেন- বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনিত অভিয়োগ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও ভ্রান্ত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো কোনো কথা খালেদা জিয়া বলেননি। আমরা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়েরের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। পাশাপাশি এ মামলা প্রত্যাহরেরও জোর দাবি জানাই। কারণ বেগম খালেদা জিয়া এদেশের একটি বিরাট জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন, তিনি একটি রাজনৈতিক বলয়ের নেতা ও জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক। তার বিরুদ্ধে আনিত রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ মানুষ সহজভাবে নেবে না। কাজেই সরকারের উচিত দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে সংযত আচরণ করা এবং অন্যায় ও হঠকারী কাজ থেকে বিরত থাকা।
সুশাসন উপহার দিতে এবং জনজীবনের বিরাজমান সমস্যা সমাধানে সরকার শুধু ব্যর্থ হয়নি অত্যন্ত চরমভাবেই ব্যর্থ হয়েছে। তাই আগামীতে ক্ষমতায় যেতে পারবে না এই ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে, বিরোধী দলের ওপর পরিকল্পিতভাবে অবর্ণনীয় দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। দেশের কোথাও কিছু ঘটলে সরকারবিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অকারণে হয়রানি, মামলা ও গ্রেফতার করে চরম হেনস্থা করছে। সরকারের দমননীতির মুখে বেপরোয়া পুলিশের হাতে রাস্তায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা মার হাচ্ছে, নাজেহাল হচ্ছে এবং রিমান্ডে যাচ্ছে।
মনে রাখতে হবে, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে কাউকে অসম্ভব শক্তিশালী মনে হতে পারে, আবার আরেকটি বিশেষ পরিস্থিতিতে তিনিই হয়ে যেতে পারেন পৃথিবীর দুর্বলতম মানুষ। আরও মনে রাখতে হবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন কখনো থেমে থাকে না; অন্যায়ের জয় হয় না, মানুষের ভেতরে ভেতরে ঠিকই আন্দোলন চলতে থাকে। এক সময় এই আন্দোলন দৃশ্যমান হয়ে গণবিস্ফোরণে রূপ নেয়। সেই সময় অবধারিত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
বাংলাদেশের মানুষকে অনেক অনেক স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে। বাংলাদেশ ডিজিটাল হবে, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে ইত্যাদি। তবে কথা হলো, মানুষকে যে স্বপ্নই দেখানো হোক না কেন, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবচে আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এটি না থাকলে বাংলাদেশকে কোন মানেই উন্নীত করা সম্ভব হবে না, উল্টো যেটুকু উন্নতি গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের হয়েছে; তা ধরে রাখাই কঠিন হবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে গভীর দৃষ্টিপাত করলে ঘোর অন্ধকার ছাড়া কোনো স্বপ্ন চোখের সামনে দৃশ্যমান হয় না। গুম-গ্রেফতার ও জেল-জুলুমের শিকার হচ্ছেন শীর্ষ রাজনীতিবিদরা! আশ্চযের্র ব্যাপার হলো, যারা নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেবেন, সেই মানের রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দেয়া হচ্ছে অহরহ মামলা! দেশকে এগিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা তৈরির পরিবর্তে, তাদেরকে ঘুরতে হচ্ছে আদালতের দ্বারে দ্বারে! কোন কোন দলের শীর্ষ রাজনীতিবিদ দীর্ঘ দিন ধরে রয়েছেন জেলে! তারা জামিন পাচ্ছেন না! দৃশ্যত রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে বিরোধী দলেকে দমন পীড়নের ফলে প্রাথমিকভাবে সরকারি দল তৃপ্তি বোধ করলেও আলটিমেটলি এর চূড়ান্ত ফল বিরোধী দলের ঘরেই যাবে। তবে সরকারের এই অবিচার ও দমন-পীড়ন বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকবে।
অপরিপক্ক, অনৈক্য ও অসহিষ্ণু এবং বিভাজনের রাজনীতি চূড়ান্তভাবে দেশকে নিয়ে দাঁড় করাবে ভয়াবহ এক বিপর্যয়ের মুখোমুখিÑএতে কোনো সন্দেহ নেই! প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে দূরত্ব বাড়ছে এটি বলাই বাহুল্য। দূরত্ব বাড়ছে এটি বললে বোধহয় কম বলা হবে। কোন কোন রাজনৈতিক দলকে নেতৃত্বশূন্য করারও চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।
বিএনপি বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। দলটি বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক ভোটের অধিকারী। দেশব্যাপী দলটির রয়েছে শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তি। বাংলাদেশের ইতিহাসে দলটির নেতৃত্বে পাঁচ বার সরকার গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের বড় বড় অর্জনের সঙ্গে বিএনপির নাম জড়িয়ে আছে। হামলা-মামলা ও দমন-পীড়নের ফলে দলটি বর্তমানে ইতিহাসের সবচে প্রতিকূল সময় পার করছে। দলটিকে ভেতর থেকে ভেঙে দেয়ার নির্লজ্জ চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ আছে।
অন্যদিকে বিএনপির প্রায় সব শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ও দলটিকে সুকৌশলে নেতৃত্বশূন্য করার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে দলটির শীর্ষ নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন! হামলা-মামলা, গুম-গ্রেফতার ও দমন-পীড়নের ধরন দেখলে, তাদের কথার যৌক্তিকতা আছে বলেই প্রতীয়মান হয়! এমন অসহিষ্ণু, অনৈক্য ও বিভাজনের রাজনীতির ফল কোনোভাবেই ভালো হতে পারে না। এই অপরিপক্ক রাজনীতি একটি রাষ্ট্রকে সামনে এগিয়ে নেয়ার পরিবর্তে, রাষ্ট্রকে অবধারিত পেছনের দিকে নিয়ে যাবে নিঃসন্দেহে।
এই অবস্থায় যেকোনো সময় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অজানা গন্তব্য ও মারাত্মক পরিণতির দিকে মোড় নিতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। কাজেই সময় থাকতে পরস্পরে ভেদাভেদ ভুলে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্র তৈরি করার দিকে সবাইকে মনোনিবেশ করতে হবে। যাতে সংঘাত-সংঘর্ষের পথ এড়ানো সম্ভব হয়। যাতে সুস্থ্য রাজনীতির ধারা দেশে ফিরে আসে।
মাঘ মাস একবার নয় প্রতিবারই আসে, এটি সরকারকে বুঝতে হবে; রাজনীতিতে অশুভ শক্তির উথানের পথ প্রশস্ত করা বাঞ্ছনীয় নয়, কেননা, খোদ রাজনীতিবিদদের জন্যই তা ভয়ঙ্কর, আগে-পরে রাজনীতিবিদরাই এর শিকার হবেন। বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এসব নিঃসন্দেহে অশনি সংকেত! রাজনীতিতে যদি পরমতসহিষ্ণুতা ও গণতান্ত্রিক মনোভাব প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে কোনোভাবেই দেশে শান্তি বিরাজ করবে না। আর শান্তি বিরাজ না করলে, একটি দেশ তার নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে সামনে অগ্রসর হতে পারবে না। দেশটি আলোর মুখ দেখার পরিবর্তে, ঘোর অন্ধকারের দিকে ধাবিত হতে থাকবে। তাই আগে রাজনীতি ঠিক করতে হবে। রাজনীতিবিদদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। সংঘাত-সংঘর্ষের মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। দম্ভ ও পরস্পরের প্রতি আঘাতপূর্ণ বাক্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। দ্বন্দ্ব-সংঘাত উস্কে দেয় এ ধরনের বক্তৃতা-বিবৃতি দেয়া বন্ধ করতে হবে।
গণতন্ত্র মেনে রাজনীতি করলে রাজনীতি কোনোভাবেই সহিংসতার পথে ধাবিত হয় না। রাজনীতিতে পরাজয়কে সহজভাবে মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে এবং বিজয়কে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার সহিত গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, কোনো মানুষ যদি দুনিয়ার সব ক্ষমতা পেয়ে যান আর আত্মাকে হারান তাতে কোনো প্রশান্তি নেই।
বাংলাদেশের বিদেশি শক্তির কর্তৃত্ব কায়েমের বিশেষ তৎপরতা লক্ষণীয়। এই তৎপরতার অংশ হিসাবেই এদেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে অত্যন্ত সুকৌশলে বিভেদ-বিভক্তি তৈরি করা হচ্ছে এবং ক্রমান্বয়ে এই বিভেদ-বিভক্তি ভয়ানক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাতে জনগণের কাছে রাজনীতিবিদদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, যাতে এ দেশকে রাজনীতি শূন্য করা সম্ভব হয়। আর এটি করতে পারলেই এখানে একটি গৃহযুদ্ধের মতো পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হবে। তাহলে শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে বাংলাদেশে বিদেশি শক্তির কর্তৃত্ব কায়েমের পথ সুগম হবে।
বাংলাদেশ ছোট কোনো জনপথ নয়। জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বের অষ্টম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বী এখন বিশ্বের শক্তিধর দেশ। চীন, ভারত ও পাকিস্তানসহ আরও বড় বড় দেশ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষ! তৈরি পোশাক শিল্পে বিশ্বে চীনের পরই বাংলাদেশের অবস্থান! জনশক্তি রফতানি ও ওষধ শিল্পে বাংলাদেশ ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে! কাজেই বাংলাদেশের শত্রু এখন চর্তুমুখী।
একটি রফতানিমুখী দেশ হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি থাকা অপরিহার্য। সংঘাতপূর্ণ ও অশান্ত রাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা নিঃসন্দেহে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এটি এ দেশের রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে। তাদের মন বড় করতে হবে এবং দৃষ্টি প্রসারিত করতে হবে, মনে রাখতে হবে; বাংলাদেশকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে যেতে হলে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সামনে একটি সুষ্টু ও গ্রহণযোগ্য নিবাচনের কোনো বিকল্প নেই। এই নির্মোহ সত্যটি যত তাড়াতাড়ি অনুধাবন করা যাবে, ততই দেশের মঙ্গল হবে।
বিরোধী দলের নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি নিরেট গণতান্ত্রিক দাবি। এই দাবির সঙ্গে সর্বস্তরের মানুষের সম্পৃক্ততা রয়েছে। মানুষ চায় সবদলের অংশগ্রহণে দেশে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। কিন্তু এর কোনো বাস্তব লক্ষণ দৃশ্যমান হচ্ছে না। তাই মানুষের শঙ্কাও দূর হচ্ছে না। আস্থা ফিরে পাচ্ছে না ব্যবসায়ী ও বিনিযোগকারীরা। তাই ব্যবসা ও বিনিয়োগে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তবে আশার কথা হলো, বিরোধী দল সরকারকে সময় দিচ্ছে; তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে। তাদের এই দায়িত্বশীলতা সর্বমহলে উচ্চ প্রসংশিত হচ্ছে। এর ফলে তারা রাজনৈতিকভাবেও এগিয়ে যাচ্ছে। পক্ষান্তরে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতাসীন দল রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে পিছিয়ে পড়েছে।
জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছার মূল্য দেয়া একজন রাজনীতিকের প্রথম কাজ। জনগণ না চাইলে কোনো রাজনীতিক বা রাজনৈতিক দলের জোর করে ক্ষমতায় থাকা কোনোভাবেই উচিত নয়। জনগণ তাকে চায় কি-না, এটি পরিমাপ করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন। পৃথিবীর বহু দেশে সরকারের ওপর জনগণের আস্থা অটুট আছে কি-না তা দেখার জন্য আগাম নির্বাচনের ব্যাবস্থা করা হয়। এশিয়ার উন্নত দেশ জাপানে এর উদাহরণ রয়েছে। সেখানে জনমত যাচাইয়ের জন্য মাত্র দুই বছরে তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ারও ইতিহাস রয়েছে। তারা ইচ্ছা করলে জোর করে ক্ষমতায় থাকতে পারত। কিন্তু তারা সেটি করেননি, তারা জনগণের মতকে মূল্য দিয়েছেন; এখান থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিকরা কী শিক্ষা নিতে পারেন না!
নেতৃত্বের পরিসীমা হলো আকাশের মতো প্রসারিত ও সমুদ্রের মতো গভীর। যোগ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত হয় যুগান্তকারী ও কল্যাণকর। দেশে একটা রাজনৈতিক সঙ্কট সুস্পষ্ট। এর সঙ্গে দেশ এবং দেশের মানুষের ভাগ্য জড়িত। দমন-পীড়ন, জুলুম-নির্যাতন, হিংসা-বিদ্বেষ-অনৈক্য ও বিভাজনের রাজনীতি কোনো কিছুরই সমাধান দিতে পারে না। শাসকদের বুঝতে হবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন থেমে থাকে না, অন্যায়ের জয় হয় না; অন্যায়ের পথ থেকে শাসকদের ফিরে আসতে হবে। হামলা-মামলা, জেল-জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করতে হবে; জেলে আটক শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দিতে হবে। গণতন্ত্র মেনে রাজনীতি করলে এসবের দরকার হয় না।
য় লেখক : কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
belaYet_1@yahoo.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন