বর্তমান সরকার দেশে দুর্নীতি বন্ধে নানান ধরনের পদক্ষেপ নিলেও দুর্নীতি বন্ধে কোন কৌশলই কাজে আসছে না। বিশেষ করে সাভার উপজেলা ‘সহকারী সেটেলমেন্ট অফিস’ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
এ অফিসের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতির সাথে জড়িত। তবে দুর্নীতির শীর্ষে উপসহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেন।
তার বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বনবিভাগের জমিও অন্যের নামে রেকর্ড করে দেয়ার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া হেমায়েতপুরের যাদুরচর এলাকার সরকার মো: আবু তাসেক ভূমি মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এ দুর্নীতির মূল হোতা উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেনকে বৃহস্পতিবার স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, অফিসটির অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতির সাথে জড়িত। তবে বরাবরই দুর্নীতির শীর্ষে উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেন ও বেঞ্চক্লার্ক (বিসি) মহিবুর রহমান। বিধি ভঙ্গ করে সাভারে তিনি ২০০৫ সাল থেকে ১৪ বছর ধরে চাকুরী করছেন। নিয়ম হচ্ছে, এক স্টেশনে ৩ বছরের বেশী চাকুরী করা যাবে না। আবার যিনি ভূমি জরিপের মাঠ পর্যায়ে খানাপুরি, বুজারত, কিস্তোয়ার করেন তিনি এ্যাটস্টেশনের পর্যায়ে কাজ করতে পারেন না। কিন্তু তিনি সাভারে বিলামালিয়া মৌজাসহ একাধিক মৌজায় মাঠ পর্যায়ের কাজ ও এ্যাটস্টেশনের কাজ করেছেন।
বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, আকতার হোসেন তার বেঞ্চক্লার্ক মহিবুর রহমানের সহযোগিতায় কমলাপুর, ছোট কালিয়াকৈর, বাগ্নীবাড়ী, সিরাজের টেকসহ একাধিক মৌজায় বনবিভাগের সম্পত্তি থাকলেও লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে বনবিভাগের জমি স্থানীয় একটি হাউজিং এর নামে রেকর্ড করিয়ে দিয়েছেন।
এছাড়াও আকতার হোসেন সাভারে যোগদানের পর থেকে নিজেকে সরকার দলীয় এক নেতার আত্মীয় পরিচয়ে নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেই যাচ্ছেন।
তার ঢাকায় বাড়ি, একাধিক ফ্লাট, প্লট, গাড়ী রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে রয়েছে লাখ লাখ টাকা।
সম্প্রতি উপসহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেনের বিরুদ্ধে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যাদুরচর এলাকার সরকার মো: আবু তাসেক।
তিনি অভিযোগ বলেছেন, বিলামালিয়া মৌজায় আর এস ২২৭, এসএ ও সিএস ১৮৯ দাগে দুটি দলিলে ১৭শতাংশ জমি মাঠজরিপ করাতে গেলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তসদিক কর্মকর্তা আকতার হোসেন ২২৮নং দাগের রোকেয়া বেগমের নামে ১৬ শতাংশ জমি রেকর্ড করে দেয়। যার খতিয়ান ও জোত নং ভিন্ন ভিন্ন।
তাসেক আরও জানায়, তার দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার আকতার হোসেনকে সাভার উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিস থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
এরআগেও স্থানীয় এক সাংবাদিকের করা মামলায় তার সিনিয়র কর্মকর্তা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার (এএসও) আমির হোসেন ৬দিন হাজত বাস করেছেন।
জানা গেছে, স্বল্প শিক্ষিত আকতার এক সময়ে ছিলেন ট্রাভার সার্ভেয়ার। প্রমোশন পেয়ে তিনি উপসহকারি সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা হন। তৃতীয় শ্রেণীর একজন কর্মচারী হয়েও তিনি সর্বদাই দামী এক্স করলা প্রাইভেট কার নিয়ে চলা ফেরা করেন। তার ঢাকায় বাড়ি, একাধিক ফ্লাট, শরিয়তপুরে রয়েছে বিশাল বাগানবাড়ি।
তবে দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে সাভার সেটেলমেন্ট অফিসের উপ সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেন নিজেকে সৎ কর্মকর্তা দাবী করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন