শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিবন্ধ

নিরাপদ মাতৃত্ব নারীর অধিকার

প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ আবু নোমান : ২নিরাপদ মাতৃত্ব প্রতিটি মায়ের অধিকার। সুস্থ-সবল শিশু দেশের অমূল্য সম্পদ। মায়ের গর্ভকালীন সুস্থতাই পারে একটি সুস্থ শিশু জন্ম দিতে। এর জন্য নিরাপদ মাতৃত্ব অপরিহার্য। গর্ভবতী মায়ের যে কোন সময় জটিলতা দেখা দিতে পারে এই ব্যাপারটি পরিবারের জানা এবং সচেতন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন মা শত-সহস্র যন্ত্রণা সহ্য করে, নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে, ১০ মাস ১০ দিন শিশুটিকে নিজের মধ্যে ধারণ করে পৃথিবীর মুখ দেখান। ঐ ‘মা’কে লক্ষ-কোটি সালাম। কিন্তু জন্মদানের ক্ষেত্রে আমরা মায়েদের কতটা নিরাপদ রাখতে পারছি সেটা ভাবার বিষয়। মা যে মমতা নিয়ে সন্তানের জন্য এই সুন্দর পৃথিবীকে সাজান, স্বপ্ন দেখেন, আমরা কি পেরেছি মা’কে সেই অনুযায়ী সেবা দিতে বা তার মাতৃত্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে? আফসোস, হাজারো লজ্জা আমাদের জন্য; যে মা শত ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে পরম আদর-যতেœ শিশুকে বড় করে তোলেন সেই মা-ই আজ অনিরাপদ। প্রায়শই শিশু জন্মদানে মাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়। এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুবরণ থেকে মায়েদের রক্ষা করতেই প্রতি বছর ২৮ মে পালিত হয় ‘বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’।
মা হিসেবে সন্তান ধারণ ও লালনে নারীর ভূমিকা কোন কিছুর সাথেই তুলনীয় নয়। তাই প্রসব ও মাতৃত্বের প্রতিটি মুহূর্তই হোক নিরাপদ, প্রতিটি জন্মই হোক পরিকল্পিত। মাতৃস্বাস্থ্য, নিরাপদ প্রসব, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সেবার গুণগত মান বৃদ্ধি সম্পর্কে মা, পরিবার ও সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি, শিশুর জন্মদান ও মাতৃত্ব সম্পর্কিত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা ও সুষ্ঠু সমাধানের পথ খোঁজা এবং সকলের প্রতিশ্রæতি নিশ্চিত করাই নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালনের অন্যতম অনুষঙ্গ ও উদ্দেশ্য। কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীই এখনো উপরোক্ত অধিকার ও সেবা থেকে বঞ্চিত। আবার দেখা যায়, বিভ্রান্তি ও অজ্ঞতার কারণে অনেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আগ্রহী হয় না। একদিকে আছে অপ্রতুল চিকিৎসাসেবা অন্যদিকে রয়েছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজব্যবস্থা।
উপযুক্ত চিকিৎসা পায় না এমন পরিবারের সংখ্যা যেমন বেশি তেমনি চিকিৎসাসেবা নিতে আগ্রহী নয় এমন পরিবারের সংখ্যাও কম নয়। একদিকে চিকিৎসার অপ্রতুলতা অপরদিকে কুসংস্কার আমাদের এ ক্ষেত্রে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। দেশের বিভিন্ন পৌর এলাকাতে রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো সমস্যার জন্য হাসপাতালে যেতে পারছে না অনেক নারী। হাসপাতালে পৌঁছলেও ডাক্তার না থাকার কারণে মিলছে না চিকিৎসাসেবা। আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব সবসময়ই প্রকট। আবার অনেকে পুরুষ ডাক্তারের হাতে প্রসব করাতেও রাজি হয় না। গ্রামীণ, পাহাড়ি জনপদ ও চরাঞ্চলের অবস্থা আরো খারাপ। এসব জায়গায় নেই কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। আর থাকলেও সেখানে ডাক্তাররা থাকতে চায় না। কেউ অসুস্থ হলে স্থানীয় ওঝা, ফকির বা হাতুড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। ফলে বাড়ছে মা ও শিশুর মৃত্যু।
খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণায় এসেছে, দেশে গর্ভকালীন সময় শতকরা ১৪ জন মহিলাই নানাবিধ ঝুঁকিপূর্ণ জটিলতায় ভোগেন। বাস্তবে এ সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হবে। সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জরুরি প্রসূতি সেবা প্রদান, মিডওয়াইফারি কোর্স, গরিব ও দুস্থ মায়েদের জন্য মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম, কমিউনিটিভিত্তিক স্কিল্ড বার্থ অ্যাটেনডেন্ট প্রশিক্ষণ, পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি ও টিকাদান কর্মসূচি, ইপিআই-এ জরুরি প্রসূতি সেবা কার্যক্রম থাকলেও সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত সেবা যদি না পাওয়া যায় এবং মাতৃমৃত্যুর হার কমার যে ধীরগতি তাতে যদি গতি সঞ্চার করা না যায় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ কর্তৃক এমডিজি পুরস্কার অর্জনের সুনাম মøান হয়ে যাবে।
সামগ্রিক বিবেচনায় দেশের মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার অনেক অগ্রগতি হয়েছে যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত। ২০০১ সালে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যুহার ছিল ৩২২ জন। কিছুদিন আগেও নবজাতকের মৃত্যুর হার ছিল অনেক বেশি। বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, গর্ভকালীন যতœ বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে শিশু মৃত্যুর হার কমেছে ৩৩ শতাংশ। মৃত্যুহার কমিয়ে আনার সাফল্যের কারণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ২০১০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের এমডিজি পুরস্কার দেয়া হয়। এই মৃত্যুহার শহর এলাকায় কমে এলেও গ্রামে অপসংস্কৃতির কারণে এখনও অনেক মৃত্যু হয়ে থাকে। সন্তান গর্ভে থাকার সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ক্যালরি, ভিটামিন ও পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। কিন্তু অশিক্ষিত পরিবারের ধারণা, মাকে বেশি খাবার দিলে শিশুর স্বাস্থ্য বেড়ে যাবে এবং জন্মের সময় নানা সমস্যা দেখা যাবে। খাদ্যাভ্যাসে ত্রæটি, পুষ্টি ঘাটতি এবং চিকিৎসার অভাবে এখনও গ্রামে অনেক প্রসূতি মা ও নবজাতক মারা যাওয়াসহ ৪৬ শতাংশের অধিক মা অসুস্থ থাকেন। মাতৃমৃত্যুহার কমে এলেও বাস্তবে এখনও অনেক অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। এর কারণ সচেতনতার অভাব। এখনও বাংলাদেশে প্রতিদিন ২০ জন মা অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুবরণ করছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের গবেষণায় দেখা যায়, দেশে নারীদের দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টির হার শতকরা ৩৭ দশমিক ৯। সচেতনতা ও পুষ্টির অভাবে প্রতি বছর প্রায় দুই লাখ মা দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার শিকার হচ্ছেন। দক্ষ দাইয়ের হাতে প্রসবের হার বর্তমানে বেড়ে ৩২ শতাংশ হলেও ৬৮ শতাংশ মায়ের এখনও প্রসব করানো হয় অদক্ষ দাইয়ের দ্বারা। এছাড়াও বিভিন্ন ছুতা ও অজুহাতে স্বামী বা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শাশুড়ি-ননদের ইচ্ছায় নিয়ন্ত্রিত ও শাসিত অনেক পরিবারে বউকে এমআরসহ অনিরাপদ গর্ভপাত করানো হয়। পরবর্তীতে দেখা যায় সন্তান ধারণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। তখন পরিবার স্বামীকে আবার বিয়ে করানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে যা মোটেই সমীচীন নয়। মাতৃত্বের ব্যাপারে নারীকে মতামত প্রকাশের অধিকারই পারে তার নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে। এ বিষয়টি সকলের ভুলে গেলে চলবে না যে, একজন নারীর অবশ্যই তার নিজের জীবনকে নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে। তাই সুস্থতা ও মাতৃমৃত্যু রোধ করতে হলে প্রয়োজন আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন। জীবিকার প্রয়োজনে ও আর্থ-সামাজিক কারণে নারীরা বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে অংশ নিচ্ছেন। কর্মজীবী নারীদের, বিশেষ করে নারীশ্রমিকদের গর্ভাবস্থা নিয়েই অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হয়। এ সমস্যার কারণে বছরে ৩৫ থেকে ৩৬ শতাংশ শিশুই কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। ফলে মা ও সন্তানের জীবন পড়ে যায় ঝুঁকির মুখে।
শহরে স্বাস্থ্যসেবা অনেকটাই বাজারমুখী, ব্যবসাকেন্দ্রিক ও মুনাফাসর্বস্ব। যেখানে স্বাস্থ্যসেবা চড়া দামে কিনতে হয়। প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর ডাক্তাররা রোগীর আগে-পিছে কিছু না ভেবেই বিভিন্ন অজুহাতে সিজারের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। গত ৬ থেকে ১০ বছর আগে সিজারিয়ান অপারেশন বেড়ে ১০ গুণ হয়েছে। সরকারি হিসাবে ৩০ শতাংশ সিজারের কথা বলা হলেও বেসরকারি হিসাবে ৭১ শতাংশের কথা বলা হয়। মা ও শিশুমৃত্যু রোধ এবং তাদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার পাশাপাশি এসব সমস্যা প্রতিরোধে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব অনস্বীকার্য। একজন সুস্থ মা জন্ম দেন একটি সুস্থ সন্তান। আর এই সুস্থ সন্তানটি হবে আমাদের আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বা কর্ণধার। প্রসবকালীন সময়ে বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে মায়ের। রক্তচাপ বেশি হওয়া, মাথা ঘুরানো, রক্তক্ষরণ, খিঁচুনি প্রভৃতি। এইসব জটিলতা থেকে মাকে নিরাপদ রাখতে হবে। তাতে নিরাপদ থাকবে অনাগত শিশু। উচ্চ রক্তচাপ নিয়মিত মাপতে হবে যাদের ডায়বেটিস আছে তাদের তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সর্বোপরি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে জীবনকে। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রæতি ও মনিটরিং ব্যবস্থার দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে সরকারের অঙ্গীকার ও টাকার অভাব নেই, অভাব আছে প্রতিশ্রæতি ও মনিটরিং ব্যবস্থার। তাই মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পাশাপাশি সবাইকে কমিটমেন্ট নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার। স্বাস্থ্য অবকাঠামো বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষ জনবল তৈরি এবং চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও ওষুধ সরবরাহ পর্যাপ্ত করতে হবে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও ৫৯টি জেলা হাসপাতাল, ৬৮টি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র এবং ১৩২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ জরুরি প্রসূতি সেবার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি।
গর্ভকালীন সময়ে অন্তত ৪ বার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। সাথে সাথে সুষম খাবার এবং পর্যাপ্ত ঘুমের দরকার মায়ের। বেশি ভারী কাজ করা যাবে না যাতে করে শরীরে চাপ পড়ে। এছাড়াও কিছু বিষয় আমাদের সকলের অবশ্যই গুরুত্বের সাথে খেয়াল রাখতে হবে- গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে পরিবারের সবাইকে সেবা ও সহানুভূতিশীল হওয়া, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হতে বিরত থাকা, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা, যে কোন জটিলতা দেখামাত্র ডাক্তার অথবা নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া প্রভৃতি। মেয়েদের পিরিয়ড সন্তান জন্ম ও লালন-পালনে অতিরিক্ত ক্যালরি ক্ষয় হয় সে দিকেও পরিবারকে নজর দিতে হবে। স্বাভাবিক সময়ে একজন নারীর ১৮০০-২০০০ ক্যালরি দরকার হলেও গর্ভবতী মা এবং নবজাতক শিশুর মায়ের ক্ষেত্রে আরো বেশি ক্যালরির প্রয়োজন। প্রতিটি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রকে জানতে হবে এবং মানতে হবে যে, একজন সুস্থ মাই জন্ম দিতে পারেন সুস্থ শিশুর।
নারীর চিরন্তন পরিচয় ‘মা’- যা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শব্দ। বংশানুক্রম ধারা টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব প্রকৃতিগতভাবেই বর্তেছে নারীর ওপর মাতৃত্বের মধ্য দিয়ে। কৈশোর থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক যে কোনো মেয়ের জীবনচক্র নানান জটিলতায় আবর্তিত হয়। একজন নারীর পূর্ণতা আসে মাতৃত্বে। এই মাতৃত্ব কতটুকু নিরাপদ? পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতি বছর সারা বিশ্বে ২১ কোটি নারী গর্ভবতী হয় এবং দুই কোটিরও বেশি নারী গর্ভজনিত স্বাস্থ্য-সমস্যায় ভোগে। এদের মধ্যে আবার ৮০ লাখের জীবনাশঙ্কা দেখা দেয়। অত্যন্ত গরিব জনগোষ্ঠীর মধ্যে জটিলতায় ভোগার আশঙ্কা অপেক্ষাকৃত ধনীদের তুলনায় প্রায় ৩০০ গুণ বেশি। আমাদের সরকার ৫৫ শতাংশ মায়ের নিরাপদ মাতৃত্ব সুবিধা নিশ্চিত করতে পেরেছে বলে দাবি করছে। তাহলে বাকি ৪৫ শতাংশ মা এখনও সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এখনো ৬৮ ভাগ প্রসব বাড়িতে হয় এবং মাত্র ৩২ ভাগ প্রসব হয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের দ্বারা। শতকরা ৫১ ভাগ মায়ের মৃত্যুই রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির কারণে হয়ে থাকে। দেখা গেছে, পরিবারের অবহেলা মাতৃমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। কর্মজীবী মায়েদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সন্তান জন্মদানের আগেই ছুটি নেয়ার নিয়ম আছে। কিন্তু নারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বর্তমানে সন্তান জন্মদানকালে একজন গর্ভবতী মা ৬ মাস ছুটি ভোগ করতে পারায় একদিকে মা তার সন্তানকে ভালোভাবে দেখাশোনার সুযোগ পাচ্ছেন আবার নিজের প্রতিও যতœ নিতে পারছেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছুটি ভোগকালীন সময়ে বেতন না দেয়ার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। আর বেতনের জন্য চাপ দিলে তাদের চাকরি হারাতে হয়। এই দিকগুলো সরকারের মনিটরিং করা প্রয়োজন।
সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসসহ মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মকাÐ আরও গতিশীল করতে হবে। নারীর জন্য নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতসহ সংরক্ষিত হোক নারীর অধিকার। প্রতিজন প্রতিদিন প্রতিক্ষণে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। আর সবাই সচেতন হলেই নিরাপদ হবে মাতৃত্ব।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন