গোপালগঞ্জে ক্লিনিকের ফটকের সামনে রাস্তার উপর সন্তান প্রসব করলেন গৃহবধূ রোজিনা বেগম (৩২) । গত সোমবার রাত সাড়ে ১২ টায় শহরের ঘুল্লিবাড়ি মোড়ে মালঞ্চ ক্লিনিকের ফটকের সামনের রাস্তায় তিনি সন্তান প্রসব করেন।
প্রসুতির আতœচিৎকারে আশপাশের মহিলাসহ লোকজন ছুটে আসেন। তারা কাপড় দিয়ে প্রসূতি ও তার বাচ্চাকে আড়াল করে সদ্যজাত শিশুর নাড়ি কাটা থেকে শুরু করে প্রসূতিকে সব ধরণের কাজে সহায়তা করেন। প্রায় ৩০ মিনিট ডাকাডাকি করে প্রসুতির মুমূর্ষ অবস্থার কথা বলা হলেও মালঞ্চ ক্লিনিকের কর্মরত নার্স ও কর্তৃপক্ষের মন গলেনি। তারা ক্লিনিকের গেট খোলেনি। বরং বারবার ক্লিনিকে কর্মরত নার্স ইতি রানী রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন বলে রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রসূতি রোজিনা বেগম গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বোড়াশী গ্রামের নিয়ামূল শেখের স্ত্রী।
প্রসূতির শাশুড়ি বিনা বেগম (৬০) বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে গ্রামের বাড়িতে বসেই অন্তসত্ত¡া গৃহবধূ রোজিনা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে প্রথমে শহরের নার্গিস ক্লিনিকে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক না থাকায় তাকে মালঞ্চ ক্লিনিকে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। মালঞ্চ ক্লিনিকে পৌছানোর পর প্রসূতি প্রসব বেদনায় ছটফট শুরু করে। আমরা মালঞ্চ ক্লিনিকের গেট খুলতে অনুরোধ করি। পরে আমরা গেটে ধাক্কাধাক্কি করি। আমাদের চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে আশপাশের লোজন ছুটে আসেন। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের মন গলেনি। তারা গেট খোলেনি। চিকিৎসাও দেয়নি। আমাদের সাথে অমানবিক অচরণ করেছে। ক্লিনিকের নার্স ইতি রোগী হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এতে আমরা খুবই অবাক হয়েছি।
ঘুল্লিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা লিমন বলেন, ক্লিনিক গেটে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আমি আমাদের বিল্ডিং এর ছাদে যাই। সেখান থেকে দেখি প্রসূতিকে নিয়ে স্বজনরা বিপাকে পড়েছে। পরে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি। আমার দেখাদেখি আরো অনেকে এগিয়ে আসেন।
ঘুল্লিবাড়ি এলাকার গৃহবধূ তুরানী সুলতানা বলেন, প্রসূতির আতœচিৎকার শুনে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি ক্লিনিক গেটের সামনের রাস্তায় গৃহবধূ বাচ্চা প্রসব করেছে। পরে কাপড় দিয়ে সদ্যজাত শিশু ও মাকে আড়াল করি। তারপর শিশুর নাড়ি কেটে দেই। এ ছাড়া প্রসূতিকে আমরা সব ধরণের সহযোগিতা প্রদান করি। প্রসূতি ও তার স্বজনদের চিৎকারে আমরা উঠে এসেছি। কিন্তু ক্লিনিকের মালিক ডা. অনুপ কুমার মজুমদার তখন ঘুমাচ্ছিলেন। তার নার্সসহ ক্লিনিকে কর্মরতরা এগিয়ে আসেনি। এ দায় তারা এড়াতে পারেনা।
ক্লিনিকের অভিযুক্ত নার্স ইতি রানী বুধবার দুপুরে ডিউটিতে ছিলেন না। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ক্লিনিকের ম্যানেজার স্বীকার করেছেন ঘটনার সময় নার্স ইতি রানী ডিউটিতে ছিলেন।
ক্লিনিকের মালিক ডা. অনুপ কুমার মজুমদার বলেন, ঘটনার সময় আমি ঘুমে ছিলাম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন