শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

সামান্য বৃষ্টিতে বিদ্যালয় মাঠে জমে হাঁটু পানি জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনে শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাঠদান ব্যাহত

প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা

‘একটুখানী বৃষ্টি হলে গড়িয়ে পড়ে পানি’ পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের সেই বিখ্যাত আসমানী কবিতার লাইন মনে করিয়ে দেয় দেশ যখন ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে! বাস্তবটা যেন তারই ধারাবাহিকতা বহন করে চলেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে দেশে যখন বৈপ্লবিক পরিবর্তনের হাওয়া বইছে তখন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালে যে কারো মনে হবে এর কোন অভিভাবক নেই। রাজ্জাক হাওলাদার একাডেমী একটি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৯ সালে এলাকার কিছু নীরব মুজিব সেনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। বর্তমানে রাজ্জাক হাওলাদার একাডেমীতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮শ’। মাদারীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র পুরান বাজার মাছের আড়ৎ সংলগ্ন এলাকায় এটি অবস্থিত। দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও বস্তিবাসীসহ এলাকার হত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অথচ জেলার এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আজ বহুমুখী সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। দীর্ঘ অবহেলার শিকার এই বিদ্যালযের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বিবেচনায় ১৯৯৮ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ৩টি শ্রেণিকক্ষ বিশিষ্ট একটি একতলা ভবন নির্মাণ করিয়ে দেন। কিন্তু যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। বর্তমানে ৩টি শ্রেণিকক্ষসহ সেই পুরনো আমলের দু‘টি টিনের ঘরই বিদ্যালয়ের একমাত্র সম্বল। বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের টিনশেড ভবনটি সম্পূর্ণভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনের ৪টি শ্রেণিকক্ষ প্রায় ৩শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে পাঠদান করতে হয়। সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে পূর্ব দিকের ঝুঁকিপূর্ণ টিনের ভবনটি ভেঙে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কায় স্কুল ছুটি দিতে বাধ্য হয় শিক্ষকরা। ২ বছর আগে কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের ৯০ফুট দেওয়াল বিধ্বস্ত হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন করেও মেরামত করতে পারেননি শিক্ষকরা। ফলে সব সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় নিরাপত্তাহীন অবস্থায়। একাডেমীর প্রায় ৮শ’ ছাত্র-ছাত্রীর জন্য নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, আসবাবপত্র, চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ, বিজ্ঞানাগার। পাশাপাশি নেই শিক্ষার পরিবেশ। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যালয়টি মাছের আড়ৎ ও মাছ বাজার সংলগ্ন হওয়ায় বাজারের যাবতীয় ময়লা-আবর্জনাযুক্ত পানি মাঠে প্রবেশ করে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ক্লাস চলার সময় দুর্গন্ধ ভোগ করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে একটুখানি বৃষ্টি হলে বিদ্যালয় মাঠ ভরে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে। যে কারণে শ্রেণিকক্ষে পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে অথবা ইট-কাঠ বিছিয়ে ক্লাস করতে হয়। বর্হিদেওয়াল ভেঙে যাওয়ায় ছাত্রীরা প্রায়ই যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজ্জাক হাওলাদার একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মো. মাজহারুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের বহুমুখী সমস্যার বিবরণ উল্লেখ করে একাধিকবার শিক্ষামন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রী, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু আজো সে সব আবেদনের কোন সাড়া মেলেনি।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন