রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ফি ও সান্ধ্য কালীন কোর্স বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্রসহ হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিশ^বিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম ইমনসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবির সরকার আসামীদের দোষ প্রমানিত না হওয়ায় বেকুরসুর খালাস দিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আসামী পক্ষের আইনজীবী মুন্না সাহা।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিল দাবিতে আন্দোলনকারী কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ওপর ওই দিন একটি ছাত্রসংগঠন অতর্কিত হামলা করে। এতে অর্ধশত শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। হামলার ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন, একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলে ভাঙচুর চালায়।
ঘটনার পরদিন নগরীর মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ ও ছাত্রলীগ পৃথকভাবে দু’টি করে মোট ছয়টি মামলা দায়ের করে। যেখানে ১০৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৪৭৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ছাত্রলীগ তাদের মামলা তুলে নিলেও পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মামলা তুলে নি।
‘নাশকতা, সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা’ দেওয়ার অভিযোগে মতিহার থানা পুলিশের দায়ের করা মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনকে আসামী করা হয়।
মামলায় প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২০১৭ সালের ৭ মে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ১৬ নেতাকর্মী, রাবি শাখা ছাত্র শিবিরের তৎকালীন সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পরে ২৯ মে আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। মামলায় মোট ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মঙ্গলবার এই মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়।
এদিকে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সকলকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়াও রায় ঘোষণার পরপরই খালাসপ্রাপ্তরা ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আনন্দ মিছিল করেছে। রায়ে মধ্যে দিয়ে ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে দায়েরকৃত ৪ টি মামলার একটির রায় ঘোষণা হলো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন