মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

লড়াইটা তাদেরও

মো: জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১১:৫৯ পিএম

বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার কে? কিছুদিন আগেও এই প্রশ্নেই সরগরম ছিল ক্রিকেটমহল। ইংল্যান্ডের মাঠে আয়োজিত বিশ্বকাপের কিছুদিন আগে আফগানিস্তান অলরাউন্ডার রশিদ খান এই মুকুটে আসীন হয়েছিলেন। তবে তা খুব একটা পছন্দ হয়নি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। হারানো সিংহাসন দ্রæতই খুঁজে নেন ক্রিকেটের এই রাজা। বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখার আগেই বিশ্বসেরার স্বীকৃতি নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন তিনি।

তারপর কি দুর্দান্ত ক্রিকেটই না খেলেছেন দেশসেরা এই তারকা। পরিসংখ্যানবিদদের রাতের ঘুম হারাম করেছেন এই মহানায়ক। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের সম্মান না পেলেও কোটি কোটি ক্রীড়াপ্রেমীর হৃদয়ে যে দাগ কেটেছেন তা-ই-বা কম কিসে। যাক, এসব এখন পুরোনো। সবই স্মৃতি। কিন্তু বিশ্বকাপের পর ব্যাট-প্যাড গুছিয়ে রাখার পর আজ মাঠে নামছেন সাকিব আল হাসান। আফগান অধিনায়ক রশিদও করতে যাচ্ছেন অধিনায়ক হিসেবে তার রাজসিক অভিষেক। কণিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অধিনায়কের মুকুট পড়েই মাঠে নামবেন টস করতে।

সাফল্য এবং সাকিব। শব্দ দুটো পৃথক হলেও যেন সমার্থক। বিশ্বের যে প্রান্তেই মাঠে নেমেছেন, অলরাউন্ড পারফরমেন্সে বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন তিনি বিশ্বসেরা। ক্রিকেট ইতিহাসে সাকিবের পদার্পণের পর ইতিহাসই বদলে গেছে অনেকটা। সেরা অলরাউন্ডারের খেতাবটা একপ্রকার নিজের সম্পত্তিতে পরিণত করেছেন এই জীবন্ত কিংবদন্তী। প্রতিদিনই নতুন নতুন রেকর্ডে যুক্ত করছেন নিজের নাম। তাই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে সাকিবের প্রতি চাওয়াও একটু বেশি। সমর্থকেরাও চান তার সাফল্য। দু’হাত প্রসারিত করে ভক্তদের উজাড় করে দিয়েছেন অনেক জয়ের গল্প।
আফগান তারকা রশিদ খানও কম যান না। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আফগান ক্রিকেটের অন্যতম ভরসা এখন তিনিই। বিশ্বকাপের পর পুরো দলের দ্বায়িত্বও পড়েছে তার কাঁধে। রশিদ মূলত টি-টোয়েন্টি বিশ্বের বিভিন্ন লিগে খেলে নিজেকে চিনিয়েছেন। বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যান বধ হয়েছেন তার ক্ষুরধার স্পিনে। গতি, টার্ন, গুগলি কিংবা বাউন্সে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মন্ত্রটা রশিদের একদম মুখস্ত। তাকে অনেক সময় ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেন না বিরাট কোহলির মতো তারকা ব্যাটসম্যানও।

ক্রিকেটে ফরম্যাট যত ছোট, আফগানদের দৌঁড়ও ততই বড়। ক্রিকেটের ছোট সংস্করণে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে খুবই পারদর্শী রশিদের দল। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দল টাইগাররা। বিশ্বকাপ ও তার পরবর্তী শ্রীলঙ্কা সিরিজে এই ছাপ না পড়লেও ঘুরে দাঁড়াতে আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক সাকিব। রশিদও টেস্ট ক্রিকেটে নবাগত দলটিকে নিয়ে ভালো ক্রিকেট খেলতে চান স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে। সবশেষ টেস্টে আইরিশ বধের অনুপ্রেরণা কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে আফগান শিবিরে। অন্যদিকে আঙুলের চোট কাটিয়ে টেস্ট অধিনায়ক সাকিবের বাইশ গজে প্রত্যাবর্তনই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল), বিগ ব্যাশ, রাম¯ø্যামসহ অনেক দেশের লিগেই খেলে থাকেন দুই দলের দলপতি। জাতীয় দলের মতোই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও একে অপরের প্রতিপক্ষ। কিন্তু ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সবশেষ দু’জনই খেলেছেন সানরাইর্জাস হায়দরাবাদের হয়ে, ছিলেন সতীর্থ। তাই একে অপরকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। দলের অধিনায়ক হয়ে এই অভিজ্ঞতা দিয়ে কি সাকিব জুজু থেকে মুক্ত করতে পারবেন রশিদ? প্রশ্নটা তোলাই থাকলো। কাজটা অবশ্য সহজ হবে না। কারন, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াও বের হতে পারেনি সাকিব জুজু থেকে।

আজ চট্রগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট। এই ম্যাচে নবাগত দলের বিপক্ষে টাইগারেদের লড়াইয়ের পাশাপাশি লড়াইটা হবে সাকিব-রশিদেরও। এই লড়াইয়ে কে এগিয়ে যাবেন, তার আভাস কিছুটা হলেও মিলবে আজই।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন