কূটনৈতিক সংবাদদাতা : ইয়েমেনে সামরিক অভিযানে শিশু হত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের করা একটি বার্ষিক প্রতিবেদনে সউদী আরবকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ, জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই প্রতিবাদের পর জাতিসংঘ ওই কালো তালিকা থেকে সউদি আরবের নাম বাদ দিয়েছে। গত শুক্রবার জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক নিউইয়র্কে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে কালো তালিকা থেকে সউদী আরবের নাম বাদ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সউদী আরবের কালো তালিকাভুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘের বার্ষিক প্রতিবেদন চিলড্রেন অ্যান্ড আর্মড কনফ্লিক্টে উঠে আসে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ইয়েমেনে ৬০ শতাংশ শিশু মৃত্যুর জন্য সউদী নেতৃত্বাধীন জোট দায়ী। গৃহযুদ্ধকবলিত ইয়েমেনে গত বছর ৫১০টি শিশু প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে ৬৬৭টি শিশু। বার্ষিক প্রতিবেদনটি স¤প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
ব্রিটিশ পত্রিকা ইনডিপেনডেন্ট-এ গত শুক্রবার এবিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্যায্য অর্থনৈতিক চাপের মুখে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি প্রতিবেদন থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব সউদী আরবের নাম বাদ দিয়েছেন। অবশ্য সউদী আরবের নাম বাদ দিতে জাতিসংঘের ওপর মুসলিম বিশ্বের চাপকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বান কি মুন। তিনি বলেন, কালো তালিকা থেকে সউদী আরবের নাম বাদ দেয়াটা মহাসচিব হিসেবে তাঁর জন্য সবচেয়ে পীড়াদায়ক ও জটিল সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম।
গত শুক্রবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনে সাহায্য কর্মসূচি ও জাতিসংঘের অন্যান্য কর্মসূচি থেকে সউদী আরবের তহবিল বন্ধের হুমকি দিয়ে সউদী নেতৃত্বাধীন জোটকে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের কালো তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য তেলসমৃদ্ধ দেশটির মুসলিম মিত্ররা বান কি মুনকে চাপ দিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ গত সোমবার প্রতিবেদন থেকে সউদী আরবের নাম বাদ দেয়।
নিউইয়র্কের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তালিকায় সউদী নেতৃত্বাধীন জোটের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে মহাসচিবকে ফোনে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কালো তালিকা থেকে সউদী জোটের নাম বাদ দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সউদী আরবে সফরের সময় বান কি মুনের দপ্তরে যোগাযোগ করেছিলেন।
জানতে চাইলে রিয়াদে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সউদী সফরের সময় জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তওে যোগাযোগ করেছেন কিনা, তা আমার জানা নেই। এ বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জানার কথা।
জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্রের দাবির ব্যাপারে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ কওে কোনো তথ্য জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, ৩ থেকে ৭ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সউদী আরব সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন